রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন

ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে জিম্মি, আত্মহত্যার চেষ্টার পর জানা গেল কারণ!

ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে জিম্মি, আত্মহত্যার চেষ্টার পর জানা গেল কারণ!

স্বদেশ ডেস্ক:

১৪ বছরের এক কিশোরী। মা-বাবার সঙ্গে বসবাস করে সাভারের রাজাবাড়ী এলাকার একটি বাড়িতে। মো. সোহেল রানা নামের এক ছাত্রনেতার রাজনৈতিক কার্যালয় ওই কিশোরীর বাসার কাছাকাছি। যাতায়াতের পথেই সোহেলের সঙ্গে ওই কিশোরীর পরিচয় হয় গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে। রাস্তায় যাতায়াতের বিভিন্ন সময়ে ভুক্তভোগীকে অনৈতিক আকার-ইঙ্গিত প্রদর্শন করতো সে। একপর্যায়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয় ওই কিশোরীকে।

পরে ওই কিশোরী তা প্রত্যাখ্যান করলে গত ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে জোরপূর্বক সোহেল রানার ভাড়া করা ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় অশালীন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখে সোহেল রানা।

পরে সেই ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে জিম্মি করে এত দিন ধরে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে আসছিল অভিযুক্ত ছাত্রনেতা সোহেল রানা। অবশেষে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সোহেল রানা তাকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেন। তখনই নিজের বাসায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ভুক্তভোগী কিশোরী। এরপরই প্রকাশ পায় ধর্ষণের ঘটনাটি।

এই ঘটনার পর অভিযুক্ত ছাত্রনেতা মো. সোহেল রানাকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। র‍্যাব–৪ এর অপারেশন অফিসার মো. সাজেদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ওই কিশোরীর ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জিম্মি করে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন সোহেল রানা।

সাজেদুল ইসলাম বলেন, গত ১৪ ফেব্রয়ারি আসামি ওই কিশোরীকে তার সঙ্গে সময় কাটানোর প্রস্তাব করলে তা প্রত্যাখান করে বিয়ের ব্যাপারে পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। সে সময় সোহেল রানা তাকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেন। এরপর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সোহেল রানা ওই কিশোরীর গতিরোধ করে একই কায়দায় জোরপূর্বক ফ্ল্যাটে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এতে ওই কিশোরী অসুস্থ হয়ে পরলে বাসায় এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

পরে তার মা আত্মহত্যার কারণ জানতে চাইলে বিষয়টি খুলে বলে ভুক্তভোগী। এরপর মা বাদী হয়ে সভার মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনার পরে র‌্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল পুলিশের পাশাপাশি আসামি গ্রেপ্তারে ছায়া তদন্ত শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা সংবাদ ও স্থানীয় সোর্সের সহায়তায় জানা যায় যে, আসামি সোহেল চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-৭ এর সহযোগিতায় র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল গত ২৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম শহর থেকে ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি মো. সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করে।

আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায় যে, গ্রেপ্তারকৃত আসামি সোহেল ওই কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার ভাড়াকৃত ফ্ল্যাটে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে। পরে ভুক্তভোগী বিয়ের কথা বললে আসামি না করে এবং সাভার থেকে পালিয়ে চট্টগ্রামে আত্মগোপনে চলে যায়। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম জানান, র‌্যাব ধর্ষণ মামলার আসামি সোহেল রানাকে থানায় হস্তান্তর করেছে। সাত দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করে তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

এদিকে, মামলার বাদী ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর মা অভিযোগ করে বলেন, মামলা দায়েরের পর থেকেই ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানার পক্ষ থেকে তাকে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছিল। এ ছাড়া প্রভাবশালীরা তাকে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপোস- মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877