শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৭ অপরাহ্ন

‘পীরজাদা-জায়েদ একটা গ্যাং’

‘পীরজাদা-জায়েদ একটা গ্যাং’

স্বদেশ ডেস্ক:

সদ্য অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা জায়েদ খান এক হয়ে কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ এনেছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ। ভোটে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এ চিত্রনায়িকার ভাষ্য, ‘পীরজাদা-জায়েদ একটা গ্যাং।’

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন নিপুণ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সমিতির সদ্য সভাপতি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, রিয়াজ, আফজাল শরীফ, সাইমন, জেসমিনসহ কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদের অনেকে।

নির্বাচনপরবর্তী এই সংবাদ সম্মেলনে নিপুণ আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন ভোটের দিন সকালে আমার কাছে দুইটা চুমু চেয়েছিলেন। সেখানে আমাদের প্যানেলের জেসমিনও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের জন্য তাকে কোনো কিছু বলিনি। তাকে সিনেমা-নাটকে কোনোদিন নেওয়া উচিত নয়।’

চলচ্চিত্র শিল্প সমিতির নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি অভিযোগ করে নিজের সাধারণ সম্পাদক পদটিতে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানান নিপুণ। তিনি বলেন, ‘আমি চাই আবার নির্বাচন করতে। জায়েদ খানের সাহস থাকলে আবার নির্বাচনে আসুক। আমার পদটিতে কারচুপি করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ এ সময় সাংবাদিকরা ‘আবার নির্বাচন করার সুযোগ আছে কিনা কিংবা গঠনতন্ত্রে আছে কিনা’ জানতে চাইলে নিপুণ বলেন, ‘হ্যাঁ, নির্বাচন কমিশনার চাইলে আবার সম্ভব। এ বিষয় নিয়ে প্রয়োজনে আমি আদালতেও যাব।’

এ সময় তার দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন নবনির্বাচিত সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনও। তিনি বলেন, ‘যেহেতু নিপুণ ভিকটিম, সে অভিযোগ করছে তার পদে আবার নির্বাচন করা হোক- আমিও তার সঙ্গে একমত।’

সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াস কাঞ্চন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাবতে কষ্ট হয়, এই নির্বাচনে আমার মতো একজন শিল্পীকে প্রাকৃতিক কাজের জন্য জায়গা খুঁজতে হয়েছে। পরে দেয়ালে দাঁড়িয়ে আমি কাজ সেরেছি। নির্বাচন কমিশনার আমাদের প্যানেলের অংশের জন্য একটি টয়লেটেরও ব্যবস্থা রাখেনি। এতটাই প্রতিক‚ল ছিল আমাদের জন্য।’

মিশা-জায়েদ পরিষদ নির্বাচনী আচরণ লঙ্ঘন করেছে অভিযোগ করে নিপুণ বলেন, ‘নিয়মকানুন কি শুধু কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদের জন্য ছিল? মিশা-জায়েদ পরিষদের জন্য ছিল না? আমরা ব্যারিকেড দিয়ে ভেতরে অবস্থান নিয়েছিলাম, কিন্তু জায়েদ খান সেই ব্যারিকেডের ভেতরে আসেননি কেন? তিনি কেন ব্যারিকেডের বাইরে গিয়ে টাকা দিয়ে ভোট কিনলেন? আসলে এফডিসির এমডি, নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন ও জায়েদ খান একটা চক্র। তারা সবাই মিলে জায়েদ খানকে জিতিয়ে দিয়েছেন। তারা টাকা দিয়ে ভোট কিনেছেন, ভিডিওতে সেটা দেখা গেছে।’

এদিকে নির্বাচনের পরদিন ভোট গণনায় বিলম্বের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পীরজাদা হারুন বলেন, ‘এটা খুবই জটিল নির্বাচন। হাতে-কলমে করতে হয়। ২১ দিকে চোখ রাখতে হয়। জাতীয় নির্বাচন বা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের চেয়ে হিসাবটা কঠিন। আমাদের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মোট ২১টি ভাগ করতে হয়। এবার শিল্পী সমিতির মোট ভোটার ছিলেন ৪২৮ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৩৩৯ জন। ভোট দেওয়ার জন্য দুটি করে ব্যালট পেপার ছিল। ভোট গণনার সময় উপস্থিত ছিলেন দুই পক্ষের আটজন অভিনয়শিল্পী। একটি করে ব্যালট পেপার বের করে দুই পক্ষের লোকদের দেখাতে হয়। ফল খাতায় কী লেখা হলো, সেটা দুই পক্ষের আটজন দেখেন। আমাদের কার্যকরী পরিষদের ভোট নষ্ট হয়েছে ১০টি। অন্যদিকে সম্পাদকমÐলীর ব্যালট পেপারে ভোট নষ্ট হয়েছে ২৬টি। কেন একটি ভোট বাতিল হলো, সেটা দুই পক্ষকে চার-পাঁচবার দেখানো হয়। যুক্তিতর্ক আছে। একাধিকবার হিসাব তো আছেই।’

এদিকে নিপুণের ‘চুমু’বিষয়ক বক্তব্য নিয়ে জানতে চাইলে পীরজাদা হারুন বলেন, ‘এটা সত্য নয়। প্রকাশ্যে এমন কিছু করাটা কি স্বাভাবিক মনে হয়? একটা ফান করেছি। সেটা সবার সামনে নিয়ে আসা নিপুণের ঠিক হয়নি।’

গত ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের কাছে ১৩ ভোটে পরাজিত হন নিপুণ। ফলে অসন্তোষ জানিয়ে অভিনেত্রী ভোট পুনর্গণনার জন্য আপিল করেন। কিন্তু সেখানেও একই ফল পায় আপিল কমিটি। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৪২৮। ভোট দিয়েছেন ৩৬৫ জন। এর মধ্যে সম্পাদকীয় পরিষদে ২৬টি এবং কার্যকরী সদস্য পরিষদে ১০টি ভোট বাতিল হয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877