স্বদেশ ডেস্ক:
পর্যটন নগরী কক্সবাজার বেড়াতে এসে সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ পর্যটক। স্বামী সন্তানকে জিম্মি করে হত্যার ভয় দেখিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকে উদ্ধার করেছে র্যাব। ৯৯৯ ফোন করে তেমন কোনো সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ ধর্ষণের শিকার নারীর।
কক্সবাজার শহরের কলাতলীর হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের রিসোর্ট থেকে বুধবার রাত দেড়টার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয় বলে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর সিপিসি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান জানান।
ধর্ষণের শিকার হওয়া নারী পর্যটক জানান, গতকাল বুধবার সকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ি থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে আসেন। ওঠেন শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে। সেখান থেকে বিকেলে যান সৈকতের লাবনী পয়েন্টে। সেখানে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে ধাক্কা-ধাক্কি হয় তার স্বামীর। এর জের ধরে সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার ৮ মাসের সন্তান ও স্বামীকে কয়েকজন মিলে নিয়ে যায়। পরে তাকে একটি সিএনজি অটোরিক্সাযোগে জোর করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তারপর শহরের একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে নিয়ে প্রথমে তিনজন ধর্ষণ করে। তারপর নেওয়া হয় হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে। সেখানে মাদক সেবনের পর তাকে ভয় দেখায় সন্তান ও স্বামীকে তারা হত্যা করবে যদি সে এসব কথা কাউকে জানায়। সে বলে হোটেল কক্ষ বাহির থেকে বন্ধ করে দুর্বৃত্তরা বেরিয়ে যায়।
ওই নারী আরও জানায়, জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলা থেকে জানালা দিয়ে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খোলেন। তারপর পুলিশের জাতীয় সেবা ৯৯৯ এ কল দেন। সেখান থেকে বলা হয় জিডি করার কথা।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘যেখানে আমি নিজেই বন্দী হয়ে আছি সেখান থেকে আমি থানায় গিয়ে কীভাবে জিডি করব তারপর আমার স্বামী-সন্তানদের উদ্ধার করব।
তারপর পাশের একজনের সহযোগিতায় কল দেন র্যাব-১৫ এর কাছে। তারা এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে তার স্বামী ও সন্তানকেও উদ্ধার করা হয়।
ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, ‘সামান্য ধাক্কা-ধাক্কির কারণে তারা আমার এত বড় ক্ষতি করলো। অপরিচিত বলে শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গেলেও সে জায়গা ও দুর্বৃত্তদের চিন্তে পারিনি। বারবার হাতে পায়ে ধরেও তারা আমার স্ত্রীকে ফেরত দেয়নি। বেড়াতে এসেছিলাম বেতন পাওয়ার খুশিতে। খুশিটা আর রইলো না। এখন স্ত্রীর অবস্থা ভালো নয় তাকে নিয়ে চিন্তায় আছি।’
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর সিপিসি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান বলেন, ‘খবর পেয়ে স্বামী-সন্তান ও গৃহবধূকে উদ্ধার করি। তারপর থেকে ছায়া তদন্ত শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত তিনজনের মধ্যে দুইজনকে আমরা শনাক্ত করেছি। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর লেফটেন্যান্ট কর্নেল খায়রুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে। বিষয়টি নিয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে। মামলার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা হওয়ার পর উদ্ধার করা নারীকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে র্যাব।