শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০২:২৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
উইঘুরদের শ্রম মামলা পরিচালনার অনুমতি দিলো ব্রিটিশ হাইকোর্ট

উইঘুরদের শ্রম মামলা পরিচালনার অনুমতি দিলো ব্রিটিশ হাইকোর্ট

স্বদেশ ডেস্ক;

চীনে উইঘুরদের দিয়ে জোরপূর্বক উৎপাদিত তুলা পণ্য আমদানির অনুমতি দেওয়ায় যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা পরিচালনা করতে পারবে উইঘুর অধিকার গ্রুপ। গত বুধবার ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের হাইকোর্ট এই অনুমতি দিয়েছে।

জার্মানির মিউনিখে ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস (ডব্লিউইউসি) এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক অলাভজনক গোষ্ঠী গ্লোবাল লিগ্যাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (জিএলএএন) মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত রাষ্ট্র এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। তাদের অভিযোগ, জিনজিয়াংয়ের বন্দি ক্যাম্প থেকে উইঘুরদের জোর করে উৎপাদিত তুলা পণ্য যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করছে।

সাক্ষীর বিবৃতি, ফাঁস হওয়া সরকারি নথি, স্যাটেলাইট চিত্র, টেক্সটাইল শিল্পের মধ্য থেকে পাওয়া গোপন স্মারকলিপি এবং চীন সরকারের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন- এমন নথিগুলো মামলাটি প্রমাণ করবে। বুধবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে জিএলএএন।

জিএলএএন’র আইনজীবী সিওভান অ্যালেন বলেছেন, ‘সমস্ত প্রমাণ ইঙ্গিত দেয় যে, জোরপূর্বক শ্রমের মাধ্যমে উইঘুর অঞ্চলে তুলা পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্য সরকার কোম্পানিগুলোকে এই ধরনের অপরাধ থেকে লাভবান হওয়ার অনুমতি দিচ্ছে।’

অ্যালেন বলেন, যুক্তরাজ্যের প্রসিড অফ ক্রাইম অ্যাক্ট মূলত অর্থপাচার এবং সংগঠিত অপরাধের অন্যান্য বেআইনি কার্যকলাপকে লক্ষ্য করে। অধিকার রক্ষা গোষ্ঠীগুলোর যুক্তি, ১৯ শতকের এই আইনটি কারাগারে তৈরি পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। তাই জোরপূর্বক শ্রম দ্বারা উত্পাদিত তুলা পণ্য ক্রয়ের মাধ্যমে আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেসের যুক্তরাজ্যের পরিচালক রহিমা মাহমুত এক বিবৃতিতে বলেন, ‘একটি স্বাধীন দেশ (যুক্তরাজ্য) যেখানে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানো হয়। কিন্তু এটা জেনে খুব খারাপ লাগে, এই দেশে যেসব পণ্য ব্যবহার করা হয় সেগুলো আমার জনগণের দাসত্বের ফল। আমার আস্থা, ব্রিটিশ সরকার তার আইনি কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।’

জিনজিয়াংয়ে বসবাসকারী প্রায় ১২ মিলিয়ন উইঘুর এবং অন্যান্য তুর্কি সংখ্যালঘুদের নিপীড়নের অংশ হিসেবে তুলা শিল্পে তাদের জোরপূর্বক ব্যবহার করছে চীন। ২০১৭ সাল থেকে চীন প্রায় ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন উইঘুর এবং অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের বন্দিশিবিরে আটক করেছে। বেইজিং ওই শিবিরকে কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বলে দাবি করে। শিবিরগুলোতে হত্যা, ধর্ষণ ও নানা নিপীড়ন চালানো হয়। এসব ঘটনার পর চীনের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করেছে পশ্চিমা বিশ্ব। যদিও চীন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

চীন যুক্তরাজ্যের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ৩০ জুন ২০২১ সালে শেষ হওয়া অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে পণ্য ও পরিষেবার মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

লন্ডনের একটি স্বাধীন উইঘুর ট্রাইব্যুনালে সম্প্রতি রায় দেওয়া হয়েছে চীন জিনজিয়াংয়ে উইঘুর এবং অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। ওই রায়ের ছয়দিন পরই নতুন এই মামলাটি করা হয়েছে। সূত্র : রেডিও ফ্রি এশিয়া

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877