স্বদেশ ডেস্ক:
চারদিকে বন্যার থৈথৈ পানি। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খাল। ডিঙি (ছোট নৌকা) নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিল কয়েকজন। তরতর করে বয়ে চলে নৌকা। ‘মন পবনের নাউ’ও ভাসছে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে। একেকজনে পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে অন্যজনকে। হঠাৎ নৌকা উল্টে যায়। কয়েকজন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও পানিতে ডুবে প্রাণ হারায় পাঁচটি মেয়ে। মৃতরা সবাই মামাতো-ফুপাতো বোন।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার নিখাই শাহজাহানের খালে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ঘটে হৃদয়বিদারক এ ঘটনা। এতে শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকাজুড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কালিকাপুর জালালের বাড়ির উত্তর পাশ থেকে ডিঙি নৌকায় ওঠে একই বাড়ির গ্রামের কয়েকজন। এক নৌকায় ওঠে রিপন শিকদারের স্ত্রী রোজিনা বেগম, তার স্কুল পড়–য়া দুই মেয়ে রিয়া মনি (১২), ছোট মেয়ে রোদশী খাতুনসহ (১১) ১১ জন। নৌকার বৈঠা ধরে একই বাড়ির সোহেল রানা।
মৃতদের মধ্যে রয়েছে কালিকাপুর গ্রামের সৌদি প্রবাসী খবিরুল ইসলামের দুই মেয়ে। বড় মেয়ে সুবর্ণা আক্তার (১৭) অ্যাডভোকেট মতিয়র রহমান তালুকদার কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এবং ছোট মেয়ে ঝুমা আক্তার (৮) পনচাশী রেজাউল করিম কাবেরিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। অন্যরা হলো- পাশের গ্রামের পনচাশী দক্ষিণপাড়া গ্রামের রিপন শিকদারের মেয়ে কেন্দুয়া শাপলা কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ২য় শ্রেণির ছাত্রী রোদশী খাতুন (৯), কালিকাপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফার মেয়ে পনচাশী রেজাউল করিম কাবেরিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্রী অন্তরা খাতুন (১৩) ও ধনবাড়ী উপজেলার পাইস্কা গ্রামের জবানুরের মেয়ে একই মাদ্রাসার ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুল কেয়া (১০)। কেয়া তার নানা জামালের বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করছিল।
এ ব্যাপারে তারাকান্দি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ মহব্বত কবীর জানান, মৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।