স্বদেশ ডেস্ক:
রাজশাহীতে দুইদিন ধরে ঘরের মেঝেতে মায়ের লাশ পড়ে থাকলেও টের পাননি ছেলে ও পুত্রবধূ স্ত্রী। সাজেদা বিবি (৭০) নামের নারীর লাশের মাথার দিকের অংশ খাটের নিচে ও কিছু অংশ খাটের বাইরে পড়ে ছিল। মতিহার থানা থেকে ৬০০ গজ পূর্বদিকে রহস্যজনক এই ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে গত রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর মতিহার থানা পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। সাজেদা মতিহার থানার বাজে কাজলা বৌবাজার এলাকার মৃত মাসুম আলীর স্ত্রী ছিলেন। পুলিশের ধারণা, ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর ঘর তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল।
এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবারের লোকজন জানান, সাজেদা তার এক ছেলের সঙ্গেই বাড়িতে থাকতেন। ইলেক্ট্রিশিয়ান এই ছেলে বিয়ে করার পর থেকেই মায়ের তেমন খোঁজ-খবর রাখতেন না (মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল না)। এমনকি দিনের পর দিন মা কোথায়, কী করছে, কী খাচ্ছে তারও খোঁজখবর তারা নিতেন না। বিষয়টি পাড়া-প্রতিবেশী সবাই জানতো। হঠাৎ প্রতিবেশীদের মাথায় চিন্তা আসে গত দুইদিন
থেকে সাজেদা বিবিকে তারা দেখতে পাচ্ছেন না। বাড়ি থেকে বেরও হচ্ছেন না। পরে প্রতিবেশীরা রবিবার রাত ১১টার দিকে তার ঘরে গিয়ে দেখেন দরজায় বাইরে থেকে তালা লাগানো। পরে তালা ভেঙে ভিতরে গিয়ে সাজেদার লাশ মেঝেতে দেখতে পান তারা। স্থানীয়রাই পুলিশকে খবর দেয়।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ‘বাড়িতে এক ছেলেকে নিয়ে থাকতেন ওই বৃদ্ধা। তার ছেলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। মায়ের তেমন খোঁজ রাখতেন না তিনি। সকালে বের হয়ে যেতেন তিনি, রাতে আসতেন। ওসি আরও বলেন, ‘বৃদ্ধার গলায় বিদ্যুতের তার পেঁচানো ছিল। তাই ধারণা করা হচ্ছে- তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাজেদার মেয়ে বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে মামলায় কারও নাম উল্লেখ নেই। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ মাঠে নেমেছে। আশা করছি, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।