স্বদেশ ডেস্ক:
এলেন, দেখলেন, জয় করলেন। এমন করেই বলিউডে সফল হয়েছেন অনেক বাঙালি নায়িকা। সুচিত্রা সেন থেকে শুরু করে জয়া বচ্চন, শর্মিলা ঠাকুর, অপর্ণা সেন, মুনমুন সেনরা আলো ছড়িয়েছেন। এখনো যারা নিজেদের ঝলকানি অব্যাহত রেখেছেন তাদের তালিকাও দীর্ঘ। সম্প্রতি বলিউডের একটি ওয়েব ফিল্মের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন জয়া আহসান। তিনিও আলো ছড়ানোর অপেক্ষায়। বলিউডে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন এবং অপেক্ষায় থাকা এমন কয়েকজনকে নিয়ে আজকের এ আয়োজন…
কাজল
মা মারাঠি অভিনেত্রী তনুজা ও বাবা বাঙালি পরিচালক সমু মুখোপাধ্যায়। তাদের মেয়ে কাজল নব্বইয়ের দশকের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী। মাত্র ১৭ বছর বয়সে ‘বেখুদি’ ছবি দিয়ে বলিউডে ক্যারিয়ার শুরু তার। ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’, ‘কাভি খুশি কাভি গম’, ‘পুকার’, ‘পেয়ারতো হোনাই থা’সহ অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। শাহরুখ খানের সঙ্গে তার জুটি সর্বকালের সেরা জনপ্রিয় বলিউড জুটিগুলোর অন্যতম।
রানি মুখার্জি
মায়ের উৎসাহে অভিনয়ে আসেন মুখার্জি পরিবারের আরেক কন্যা রানি মুখার্জি। ‘বিয়ের ফুল’ নামে একটি বাংলা ছবি দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু করে পরে হিন্দি ছবিতে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ‘গোলাম’, ‘হাম তুম’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’, ‘চলতে চলতে’, ‘ক্যালকাটা মেইল’সহ অসংখ্য বলিউডের ছবিতে অভিনয় করে রানিও তার চাচাতো বোন কাজলের মতো নিজের জায়গা করে নেন।
সুস্মিতা সেন
হায়দরাবাদের বাঙালি বৈদ্যব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম সুস্মিতা সেনের। বাবা সুবীর সেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রাক্তন উইং কমান্ডার এবং মা সুভ্রা সেন অলঙ্কার ডিজাইনার ও দুবাইভিত্তিক একটি দোকানের মালিক। তাদের মেয়েই ১৯৯৪ সালে ১৮ বছর বয়সে ‘মিস ইউনিভার্স’ শিরোপা জেতেন। এর পর ‘বিবিং নং ১’, ‘ম্যায় হু না’, ‘স্রিফ তুম’সহ বলিউডের বেশ কিছু আলোচিত সিনেমায় কাজ করেন সুস্মিতা। পাশাপাশি তামিল ও বাংলা ভাষার একাধিক ছবিতেও কাজ করেছেন।
বিপাশা বসু
নয়াদিল্লির বাঙালি হিন্দু পরিবারে জন্ম বিপাশা বসুর। তবে সেখানে বেশিদিন থাকেননি, বাবা-মায়ের সঙ্গে কলকাতায় চলে আসেন। চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও মডেলিং এবং অভিনয়ের জগতে প্রবেশ করেন একেবারে আকস্মিকভাবে। ‘জিসম’, ‘রাজ’ ইত্যাদি ছবিতে সাহসী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বলিউডে বিপাশা বসুকে ‘ডাস্কি সিডাকট্রেস’ বা ‘লাস্যময়ী শ্যামবর্ণ’ নামে ডাকা হয়।
কঙ্কনা সেন শর্মা
বাংলা ছবির বিখ্যাত অভিনেত্রী অপর্ণা সেনের মেয়ে কঙ্কনা সেন শর্মা বলিউডে অন্যধারার ছবিতে অভিনয়ের জন্য বেশ পরিচিত। দুইবার জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী এ অভিনেত্রী ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আইয়ার’, ‘ওমকারা’ ও ‘ওয়েক আপ সিড’-এর মতো নানা বিষয়ের ছবিতে অভিনয় করে দর্শক থেকে সমালোচক পর্যন্ত সব মহলেই সমাদৃত। অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনায়ও পরিচিত নাম কঙ্কনা।
তনুশ্রী দত্ত
হ্যারি আনন্দের ভারতীয় পপ মিউজিক ভিডিও ‘সাইয়া দিল মিনা আনা রে’তে কাজ করেছিলেন ঝাড়খ-ের জামশেদপুরের বাঙালি হিন্দু পরিবারে জন্ম নেওয়া তনুশ্রী দত্ত। এটি বেশ জনপ্রিয় ছিল এবং পরে ২০০৩ সালে বেশ কয়েকটি স্টেজ শোতে অভিনয় করেছিলেন। ‘চকলেট’ এবং ‘আশিক বানায়া আপনে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ২০০৫ সালে বলিউডে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার।
সাহানা গোস্বামী
‘রক অন’, ‘ব্রেক কে বাদ’, ‘হিরোইন’-এর মতো ভিন্ন ধরনের বলিউড ছবির অভিনেত্রী সাহানা গোস্বামী ভারতের বাইরেও অনেক ছবিতে অভিনয় করেছেন। বাংলাদেশের পরিচালক রুবাইয়াৎ হোসেনের ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয় করে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রদর্শিত হয়েছে এ ছবি।
রিমি সেন
রিমি সেনের অভিনয় জীবন শুরু বাংলা ছবি ‘পারোমিতার একদিন’ দিয়ে। তবে তিনি সবার নজর কাড়েন হিন্দি ছবি ‘হাঙ্গামা’ দিয়ে। এ ছাড়া জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘ধুম’-এর প্রথম কিস্তিতে অভিষেক বচ্চনের বিপরীতে অভিনয় করেও প্রশংসা পান। কয়েকটি তেলুগু ছবিতেও দেখা গেছে তাকে।
জয়া আহসান
১৯৬৭-এর নকশালবাড়ি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বলিউডের ওটিটি প্লাটফর্মের জন্য নির্মিত হচ্ছে একটি ওয়েব ফিল্ম। তিন ভাষার এ ফিল্মে অভিনয় করবেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। তার বিপরীতে দেখা যাবে বলিউড অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীকে। সিরিজটি পরিচালনা করবেন সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়। উপন্যাসের উল্লেখযোগ্য দুটি চরিত্রের একটি চারু, অন্যটি লীলা। সায়ন্তন বলেন, ‘গল্পে চারু হবেন নওয়াজ আর জয়া তার স্ত্রী লীলা চরিত্রে অভিনয় করবেন।’ বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় এটি তৈরি হবে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনটি পর্বে দেখানো হবে এ সিরিজ। প্রথম পর্বে থাকবে ১৯৪৭-১৯৭২ সাল। দ্বিতীয় পর্বে ১৯৭২-১৯৯০ পর্যন্ত উঠে আসবে। শেষ পর্বে থাকবে ১৯৯০ থেকে বর্তমান প্রেক্ষাপট। কলকাতা, মুম্বাই, কেরালা, অন্ধ্র প্রদেশের পাশাপাশি চীন এবং রাশিয়াতেও এর শুটিং করার পরিকল্পনা রয়েছে।