রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন

সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে এসকে সিনহার

সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে এসকে সিনহার

স্বদেশ ডেস্ক:

সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার ৪ কোটি টাকা ঋণ দুর্নীতির মামলায় রায় ৫ অক্টোবর। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ শেখ নাজমুল আলম এ মামলার যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেন। এ মামলায় এসকে সিনহাসহ ১১ জন আসামি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদ- হতে পারে বলে জানা গেছে।

গতকাল যুক্তিতর্কের শুনানিতে ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) উদ্যোক্তা পরিচালক ও অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীকে (বাবুল চিশতী) কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আর জামিনে

থাকা ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি একেএম শামীম ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক ক্রেডিট প্রধান গাজী সালাহউদ্দিন এবং ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট লুৎফুল হক, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা হাজির হন। অন্য চার আসামি এসকে সিনহা, ফারমার্সের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শাফিউদ্দিন আসকারী, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা সান্ত্রী রায় সিমি ও তার স্বামী রণজিৎ চন্দ্র সাহা পলাতক।

এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুদকের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মীর আহমেদ আলী সালাম প্রায় সোয়া ঘণ্টা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এর পর আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন, মিজানুর রহমান, আমিনুল গণি টিটো, শাহিনুর ইসলাম উপস্থিত আসামিদের নির্দোষ দাবি করে তাদের বেকসুর খালাস চান। তবে দুদক প্রসিকিউটর আসামিদের বিরুদ্ধে ৩টি ধারার অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছেন দাবি করে তাদের প্রত্যেক ধারার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। যুক্তিতর্কের একপর্যায়ে বাবুল চিশতি কাঠগড়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে আবার আদালতে আনা হয়।

মামলার দ- সম্পর্কে প্রসিকিউটর সালাম বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে দ-বিধির ৪০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২)(৩) ধারায় অভিযোগ রয়েছে। ৪০৯ ধারায় অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গের জন্য যাবজ্জীবন কারাদ-ের বিধান রয়েছে। মানিলন্ডারিং ধারায় সর্বোচ্চ ১২ বছর এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ধারায় সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদ-ের বিধান রয়েছে। আমরা মনে করি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি। তাই আদালতের কাছে ১১ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তিই প্রার্থনা করেছি।

মামলায় ২১ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মধ্যে এসকে সিনহার বড় ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহা, ভাতিজা সংখজিত কুমার সিনহা, আপিল বিভাগের বেঞ্চ রিডার মাহবুব হোসেন রয়েছেন।

২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন মামলাটি করেন। একই বছরের ১০ ডিসেম্বর চার্জশিট দাখিল হয়। ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন। ১৮ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

মামলার প্রধান আসামি সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র সিনহা। তিনি সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং কিছু পর্যবেক্ষণের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির মুখে ২০১৭ সালের অক্টোবরের শুরুতে ছুটিতে যান। পরে বিদেশ থেকেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফারমার্স ব্যাংকে শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহার নামে মঞ্জুরকৃত ঋণের ৪ কোটি টাকা এসকে সিনহার সোনালী ব্যাংকের সুপ্রিমকোর্ট শাখার হিসাবে জমা হয়। এর পর ওই টাকা বিভিন্ন হিসাবে হস্তান্তর ও উত্তোলনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অন্যদের লাভবান করতে এ ধরনের অপরাধ করেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877