স্বদেশ ডেস্ক: অনেকেরই পরিচয় দেয়ার মতো কোনো পেশা নেই। তার পরও তারা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার মালিক, চড়েন দামি গাড়িতে, থাকেন বিলাসবহুল বাড়িতে। যাদের গ্রামে ছিল ঝুপড়ি ঘর, তাদের কেউ কেউ শহরে করেছেন চোখ ধাঁধানো বাড়ি। চট্টগ্রাম অঞ্চলের (চট্টগ্রাম নগর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা) দেড় শতাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ীর সম্পদের অনুসন্ধান করতে গিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটি গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীর অবৈধ সম্পদ নিয়ে অনুসন্ধান করছে।
অনুসন্ধান শেষে গত তিন মাসে চারজন ইয়াবা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে থানায় মামলা করেছে দুদক। আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে। বাকি ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে চলছে অনুসন্ধান। দুদকের সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর উপসহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার অন্তত ১০০ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এর মধ্যে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কয়েকজনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষ হয়ে মামলার অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অন্যদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। অন্যদিকে দুদকের চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ের উপপরিচালক লুৎফর কবির চন্দন বলেন, নগরীর প্রায় অর্ধশত মাদক ব্যবসায়ীর সম্পদের অনুসন্ধান চলছে। এর মধ্যে কয়েকজনের অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
দুদকের জালে দেড়শ’ ইয়াবা কারবারি: দেড়শ’ ইয়াবা ব্যবসায়ীর তালিকা ধরে তাদের সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুদক।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীতে ৫০ জন ও চট্টগ্রাম জেলা ও কক্সবাজার মিলে রয়েছে আরও ১০০ জন। তালিকার উল্লেখযোগ্যরা হলোÑটেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ ও তার স্ত্রী আমেনা খাতুন, একই উপজেলার আমির হোসেনের ছেলে আবদুর রহিম, টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুল্লাহ মনির, আনোয়ারা উপজেলার জালাল উদ্দিন শাহ, টেকনাফের মোহাম্মদ আমিন ও তার স্ত্রী নাঈমা খানম। সম্প্রতি বন্দুকযুদ্ধে নিহত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী সাইফুল করিমও আছে এ তালিকায়। তালিকায় আরও আছে সাইফুল করিমের স্ত্রী হামিদা বেগম, সাইফুল করিমের ভাই জিয়াউল করিম, টেকনাফের সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির ভাগ্নে সাহেদুর রহমান নিপু, চৌধুরী পাড়ার এজাহার আলীর ছেলে মো. সফিক, মৌলভীপাড়া এলাকার ফজল আহমেদের ছেলে একরাম হোসেন ও তার ভাই আবদুর রহমান, চট্টগ্রাম নগরীর বরিশাল কলোনির ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রক ইউসুফ, হালিশহর বড়পোল এলাকার ডাইল করিম, সিআরবি চৌদ্দ জামতলা বস্তির ফয়সাল, সদরঘাট ধোপার মাঠ বস্তির মাইজ্যা মিয়া, বাদশা মিয়া রোড এলাকার আরমান, পতেঙ্গা এলাকার আবছার, কালামিয়া বাজারের আলী জহুর, রিয়াজুদ্দিন বাজারের জাহিদ ও মিজান, আনোয়ারা উপজেলার আবু ছালাম, নুরুল ইসলাম ওরফে মনু, আবুল কাশেম ওরফে আবুল হাছি, আলমগীর ওরফে ডবল্যা, নুরুল আজম ওরফে ডলি, সেলাইমান ওরফে মানু, জামাল উদ্দিন, মোহাম্মদ জাফর, আবুল ফয়েজ, দিদারুল আলম, জাহাঙ্গীর, সেলিম, মোজাহের।