বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১২ অপরাহ্ন

আবার বড় পরিসরে গণটিকাদান শুরু

আবার বড় পরিসরে গণটিকাদান শুরু

স্বদেশ ডেস্ক:

করোনার লাগামহীন সংক্রমণ রুখতে দেশের জেলা, উপজেলা হাসপাতালগুলোতে সোমবার থেকে চীনের উৎপাদিত সিনোফার্মের টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। গত ১৯ জুন থেকে সারা দেশের মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে আবার গণটিকাদান শুরু হয়। সেটাই আবার বড় পরিসরে শুরু হলো।

এর পাশাপাশি আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ১২টি সিটি করপোরেশন এলাকায় মডার্নার টিকা দেয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক।

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘টিকার আওতা বাড়িয়ে ৩৫ বছর পর্যন্ত করা হয়েছে। সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে এখন ৩৫ বছর ও এর বেশি বয়সীরা টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারছেন। নিবন্ধনের পর এসএমএস দেয়া হবে। এসএমএস পেলে নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিতে হবে।’

রোববারই টিকা সেন্টারে সিনোফার্মের টিকা পাঠানো হয়। এবার জেলাগুলোতে টিকার বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।

দেশে প্রথম পর্যায়ে গণটিকাদান শুরু হয়েছিল ৭ ফেব্রুয়ারি। শুরুতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া হয়। দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত না করেই ৫৮ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে ওই টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়। এর মধ্যে ৪৩ লাখ ৯৫ হাজার ২১৮ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া সম্ভব হয়েছে।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা সংকটের কারণ দেখিয়ে গত ৫ মে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজার ও চীনের সিনোফার্ম উদ্ভাবিত টিকা বিবিআইবিপি-করভির ডোজ হাতে আসার পর সরকার তিন শ্রেণির জন্য নিবন্ধন অ্যাপ চালু করে।

এখন ২২ ক্যাটাগরির মানুষ নিবন্ধন সুযোগ পাচ্ছে। তবে সিরামের টিকা সরকারের হাতে না থাকার কারণে এখনও ১৫ লাখ ২৪ হাজারের বেশি মানুষ দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, আগামী মাসে এ টিকার সংকটও সমাধান হবে।

মডার্নার টিকা মাইনাস ১৫ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে হয়। এ কারণে এ টিকা দেয়া হবে শুধু সিটি করপোরেশন এলাকায়। সিটি করপোরেশন এলাকার আওতায় থাকা সাধারণ মানুষ এই টিকার আওতায় আসবে। আর সিনোফার্মের টিকা রাখা যায় ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তাই জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সিনোফার্মের টিকা দেয়া হবে।

এবার যাদের অগ্রাধিকার

করোনা প্রতিরোধী টিকা প্রদানে এবার যাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে তারা হলেন, করোনা মোকাবিলায় সামনের সারির যোদ্ধা, নির্বাচিত প্রতিনিধি, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কর্মকর্তা, সব ধর্মের প্রতিনিধি, মৃতদেহ সংস্কারকাজে নিয়োজিত কর্মী, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, নিষ্কাশন ও ফায়ার সার্ভিসের প্রথম সারির কর্মকর্তা, রেলওয়ে স্টেশন, বিমানবন্দর, নৌবন্দর, স্থলবন্দরের কর্মচারীরা এ টিকা পাবেন।

এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর সদস্য, জেলা-উপজেলায় জরুরি কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মচারী, ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারী, জাতীয় দলের খেলোয়াড়, চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাত্র-ছাত্রী, গণমাধ্যমকর্মী, স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, অনুমোদিত সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাষ্ট্র পরিচালনায় নিয়োজিত অপরিহার্য কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই টিকা পাবেন।

যে প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন

স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, সুরক্ষা অ্যাপে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। ফোন ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, নাম, জন্মতারিখের পাশাপাশি কোনো শারীরিক জটিলতা আছে কি না, পেশা কী তা-ও জানাতে হবে।

স্মার্টফোনে ইন্টারনেট সংযুক্ত করে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে। অ্যাপে তথ্য দিলে টিকার আপডেট সম্পর্কে গ্রহীতাদের এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ টিকা বিতরণ করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।

এ পর্যন্ত টিকা পেতে নিবন্ধন করেছেন ৮৭ লাখ ৮৩ হাজার ৭১২ জন। এর মধ্যে দুই ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেয়েছে ৪২ লাখ ৯০ হাজার ৯৬৪ জন। আর শুধু প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৫৮ লাখ ২০ হাজার ১৫ জন।

সিনোফার্মের টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৭১ হাজার ৮ জন। দুই ডোজ পেয়েছেন ২ হাজার ২৩৭ জন। এ ছাড়া ফাইজারের টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১ হাজার ৮৬৬ জন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877