স্বদেশ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথায় এখন ঘোড়াও হাসে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। আজ বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি ওদের কথার কী উত্তর দেবো, ওদের কথায় ঘোড়াও হাসে। আগের কথা বলছি- পুরনো ঢাকার ঘোড়ার গাড়ি আছে না? ট্রেন থেকে নেমেই আমরা ওইসব ঘোড়ার গাড়িতে হলে যাইতাম। ফুলবাড়ীয়া ট্রেন স্টেশন থেকে এসএম হলে ঘোড়া গাড়ির ভাড়ার ছিল ৪ আনা। আমরা বলতাম দুই আনা- বারগেইন করতাম। গাড়ির চালক ঘোড়ার লাগামটা টান মারতো। আর ঘোড়াটা হু হু করে উঠত, তখন চালক বলতো, আপনার কথায় তো ঘোড়াও হাইসা উঠে। আসলে ব্যাপারটা এমন যে, ওবায়দুল কাদের সাহেবদের কথায় এখন ঘোড়াও হাসে। কী বলে না বলে ওরা জানে না। আর মিথ্যা বলতে বলতে এমন একটা জায়গায় চলে গেছে ওই যে গোয়েবেলসীয় প্রচারের মতো।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে ওরা ইতিহাসকে বিকৃত করছে। সেজন্য সবাইকে বলব, প্রকৃত ও সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে বার বার বলতে হবে। আজকে জিয়াউর রহমানকে যত চেষ্টা করুক মুছে ফেলতে, মুছে ফেলা যাবে না কখনো। তিনি আমাদের রক্তে, মজ্জায় চলে গেছেন।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা আরও বলেন, ‘দেশে এখন দুই শত্রু। একদিকে আওয়ামী লীগ শত্রু, আরেকদিকে করোনা শত্রু। এই শত্রু, এই দুই দানব তছনছ করে দিচ্ছে আমাদের সব কিছু। সেজন্য আমরা বাধাগ্রস্থ হচ্ছি। কিন্তু এটাকে আমাদের জয় করতে হবে তো! শুনেন, পৃথিবীর সমস্ত বড় বড় বিজয়, বড় বড় বিপ্লব, বড় বড় অর্জন কিন্তু একটা স্লোগানে- ‘আমরা করব জয়’। এই স্লোগান দিয়েই আমাদেরকে জয় করতে হবে।’
নেতা-কর্মীদের সংগঠিত হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই। যুদ্ধ করতেই হবে। এরা আপনাদের এমনি এমনি ক্ষমতা দিয়ে দেবে না। এরা একেবারে কর্তৃত্ববাদী বনে গেছে। তারা জানেন নির্বাচন করে জিততে পারবে না। সুতরাং, নির্বাচন নির্বাচন খেলা করবে, নাটক করবে, তামাশা করবে। কিন্তু সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে ওরা নিজেদেরকে জয়ী করবে। যেমন ২০১৮ তে করেছে, যেমন ২০১৪ তে করেছে।’
দলের নেতা-কর্মীদের জিয়াউর রহমানের জীবনকর্মের ওপর লেখা বইগুলো বেশি করে পড়ার পরামর্শ দেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমাদের বেশি করে বই পড়তে হবে। জিয়াউর রহমানকে জানতে হলে তার ওপর লেখা বই পড়তে হবে। আমাদের স্বাধীনতার জানতে হলে বই পড়তে হবে।’ এ সময় “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান”, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া”, “প্রতি নায়ক”, “কাগমারী সম্মেলন স্মারক গ্রস্থ”, “আমার পতাকা ফেলানীর লাশ হয়”, “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ”, “জনগণের মুক্তিযুদ্ধ” ও “উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান মওলানা ভাসানী” ইত্যাদি গ্রন্থ পড়ার জন্য বলেন তিনি। কবিগুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতাও পড়ার পরামর্শ দেন মহাসচিব।
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জিয়া স্মৃতি পাঠাগার ও জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা সংস্থার যৌথ উদ্যোগে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বই মেলা ও আলোচনা সভা হয়। জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালামের সভাপতিত্বে পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক জহির দিপ্তী সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেনে বুলবুল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।