স্বদেশ ডেস্ক:
পাকা সড়কটি নির্মাণের এক সপ্তাহও পূর্ণ হয়নি। স্থানীয় সরকার বিভাগকে বুঝিয়েও দেওয়া হয়নি। এর মধ্যেই ভেঙে খালে পড়ে গেছে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সুজাপুর-চর খোয়াজ তেমুহনী হাজী আবদুস সালাম সড়কের একটি বড় অংশ। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও কাজের মান ভালো না হওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে ৬২০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সংযোগ সড়কটির পাকাকরণের জন্য ৫৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। দরপত্রের মাধ্যমে ফেনীর করিম হাজারী নামে এক ঠিকাদার নির্মাণকাজের দায়িত্ব পান। এর পর তিনি স্থানীয় যুবলীগ নেতা জাফর ইকবালের কাছে কাজটি বিক্রি করে দেন। কাজ কিনে সড়কের নির্মাণকাজ শুরু করেন জাফর। শুরুতে নিম্নমানের তিন নম্বর ইট (পচা কংক্রিট) ব্যবহার করে সড়কের মেকাডমের কাজ করেন। তখন স্থানীয়রা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জাফর ইকবাল জনগণের বাধা উপেক্ষা করে তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণকাজ শেষ করেন। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ না যেতেই সড়কটি ভেঙে খালে পড়ে গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইমাম হোসেন অভিযোগ করেন, সড়কের নির্মাণকাজ শুরু করার আগেই তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে দরপত্রের শর্ত মেনে এবং ভালোভাবে কাজ করার জন্য বলেছেন। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তার কথায় কান দেননি। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে সড়কটি ভেঙে গেছে।
আবুল কালাম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, উপজেলা সদর থেকে অনেক দূরে প্রত্যন্ত গ্রামের সড়ক হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন মনে করেছিল স্থানীয়দের চোখ ফাঁকি দিয়ে পচা ও নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে কোনোভাবে সড়কের কাজ শেষ করে দিলেই হবে। কেউ কিছু বলার সাহস পাবে না। কাজ শেষ করে জাফর ইকবাল সড়কটি স্থানীয় সরকার বিভাগকে বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই ভেঙে গেছে। তারা বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা জাফর ইকবাল মুঠোফোনে জানান, শিডিউলের নিয়ম মেনে মান বজায় রেখে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। তবে ভেঙে যাওয়া অংশের জন্য তিনি রাস্তার পাশে নবনির্মিত ব্রিজ নির্মাতাদের দায়ী করেন। তার পরও দ্রুত এটি সংস্কার করে দেবেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী মনির হোসেন খান জানান, নির্মাণের এক সপ্তাহের মধ্যে ভেঙে পড়ার বিষয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ইতিমধ্যেই ঠিকাদারকে কাজ পুনঃসংস্কার করার জন্য বলা হয়েছে। কাজ ঠিকমতো বুঝিয়ে দেওয়া না হলে বরাদ্দকৃত টাকা কাটাসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।