রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০০ অপরাহ্ন

বোকো হারামের প্রধান নেতা নিহত, দাবি বিরোধী জঙ্গিদের

বোকো হারামের প্রধান নেতা নিহত, দাবি বিরোধী জঙ্গিদের

স্বদেশ ডেস্ক:

নাইজেরিয়ার জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারামের প্রধান নেতা আবুবকর শেখাও আত্মঘাতি হামলায় নিহত হয়েছেন বলে এক অডিও রেকর্ডিংয়ে দাবি করেছে বিরোধী আরেকটি জঙ্গি গোষ্ঠী। আজ সোমবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বার্তা সংস্থাগুলোর হাতে আসা একটি অডিওতে শোনা যায়, ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রোভিন্স-আইএসডাব্লিউএপি নামে একটি জঙ্গি গোষ্ঠী দাবি করছে, দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সাথে থাকা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিহত হন আবুবকর শেখাও। এর আগে গত মাসেও একবার শেখাও এর মৃত্যু হয়েছিল বলে খবর প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে বোকো হারাম কিংবা নাইজেরিয়ার সরকার-কেউই এই মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেনি।

রেকর্ডিংয়ে যা আছে-

কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ ছাড়া ওই অডিও রেকর্ডিংয়ে ধারণ করা গলার স্বর যা আইএসডাব্লিউএপি- এর নেতা মুসাব আল-বারনাওয়ির বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে তিনি বলেন, ‘শেখাও বিস্ফোরণ ঘটানোর মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ভাবেই মারা যান।’

তিনি আরও বলেন, আইএসডাব্লিউএপি এর যোদ্ধারা তাকে গ্রেপ্তার করে এবং তাদের দলে যোগ দেওয়ার সুযোগ দেয়।’ শেখাও পৃথিবীর বুকে অপমানিত হওয়ার পরিবর্তে পরজীবনে অপমানিত হওয়াকে বেছে নিয়েছেন বলে বলেও অডিওতে উল্লেখ করেন তিনি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে গত মাসে যখন শেখাও এর মৃত্যুর খবর প্রচার করা হয়েছিল তখন নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছিল, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। সেসময় সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মেদ ইয়েরিমা বিবিসিকে বলেছিলেন, কী ঘটেছে সে বিষয়ে অনুসন্ধান করছে সামরিক বাহিনী। তবে নিশ্চিত প্রমাণ ছাড়া তারা কোনো বিবৃতি দেবে না বলেও জানান তিনি।

এদিকে নিরাপত্তা সংস্থার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এমন এক সাংবাদিক জানান, উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ার সামবিসা বনে বোকো হারামের অবস্থান লক্ষ্য করে আইএসডাব্লিউএপি হামলা চালালে শেখাও নিহত হন।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে পুলিশের হেফাজতে বোকো হারামের প্রতিষ্ঠাতা মারা যাওয়ার পর এই গোষ্ঠীটির নেতৃত্ব নেন শেখাও। এরপর এটিকে একটি গোপন বিদ্রোহী গোষ্ঠী থেকে ভয়ংকর জঙ্গি গোষ্ঠীতে পরিণত করেন তিনি। গোষ্ঠীটি পরবর্তীতে উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ায় ত্রাসের রাজ্য কায়েম করে। শেখাওয়ের নেতৃত্বে বোকো হারাম ওই এলাকায় বোমা হামলা, অপহরণ এবং কারাগারে হামলা চালিয়ে বন্দীদের মুক্ত করার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে শরীয়া আইনের আওতায় ইসলামি রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে শহরগুলো দখলে নেওয়া শুরু করে।

২০২১ সালের এক ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘মুরগি আর ভেড়া জবাই করার মতো… আমি হত্যা করতেও পছন্দ করি।’ তার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুহারা হয়েছে।

২০১৪ সালে বর্নো স্টেটের চিবুক এলাকার একটি স্কুল থেকে কয়েক শত ছাত্রীকে অপহরণের ঘটনার মাধ্যমে এই গোষ্ঠীটি আন্তর্জাতিক নজর কাড়ে। এ ঘটনা থেকেই হ্যাশট্যাগ ‘ব্রিংব্যাকআওয়ারগার্লস’ বা আমাদের মেয়েদের ফিরিয়ে দাও নামে একটি আন্দোলন শুরু হয়। অপহরণের শিকার ওই ছাত্রীদের মধ্যে এখনো অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। এর পরপরই যুক্তরাষ্ট্র শেখাওকে “আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী” বলে চিহ্নিত করে এবং তাকে জীবিত অথবা মৃত ধরিয়ে দেবার জন্য ৭০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877