শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

ফেসবুকে নিষিদ্ধ ট্রাম্প

স্বদেশ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই বছরের জন্য ফেসবুকে নিষিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলেছে, তাদের নীতিমালা লঙ্ঘনের জন্য এটাই ট্রাম্পের সর্বোচ্চ শাস্তি।

বার্তাসংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, জায়ান্ট প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ফেসবুক বলেছে, গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটলে প্রাণঘাতী হামলায় উসকানি দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, যা গত ৭ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হিসেবে ধরা হবে।

ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার ঘটনার পর থেকে ট্রাম্পকে ফেসবুকে নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর সম্প্রতি ফেসবুকের নিরপেক্ষ ওভারসাইট বোর্ড ট্রাম্পের বিষয়ে তদন্ত করে জানায়, অনির্দিষ্টকাল ধরে ফেসবুকে ট্রাম্পের নিষিদ্ধ থাকার বিষয়টি পর্যালোচনা করা উচিত। এর পরই দুই বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা এলো।

ফেসবুকের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘যে গুরুতর ঘটনার জন্য ট্রাম্প নিষিদ্ধ হন, সেই বিষয়ে আমরা মনে করি, তার নেওয়া পদক্ষেপ আমাদের নীতিমালার চরম লঙ্ঘণ, যার কারণে নতুন নীতিমালা প্রটোকল অনুযায়ী তিনি (ট্রাম্প) সর্বোচ্চ শাস্তি পেয়েছেন।’

গত ৬ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জয়ের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে ক্যাপিটলে অধিবেশন চলছিল। বাইডেন ভোটে জালিয়াতি করে জিতেছেন, এমন অভিযোগ এনে জয়ের স্বীকৃতি আটকাতে ট্রাম্প–সমর্থকেরা ক্যাপিটলে হামলা চালান। এতে পুলিশসহ সদস্য নিহত হন পাঁচজন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হন। এই হামলার ঘটনাকে নজিরবিহীন মনে করা হয়। ট্রাম্পের প্রত্যক্ষ উসকানিতে এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর ট্রাম্প যাতে উসকানিমূলক বার্তা ছড়িয়ে দিতে না পারেন, সেই জন্য ফেসবুক এবং আরেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টু্ইটারে নিষিদ্ধ হন তিনি। গত মাসে টুইটার কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প আজীবন নিষিদ্ধ থাকবেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষিদ্ধ হওয়ায় ট্রাম্প গত মার্চে নিজের মতো করে একটি যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে হাজির হন। তবে সেই মাধ্যম কার্যকর না হওয়ায় সেটি ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়ার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে একটি দীর্ঘ সময় ফেসবুকে নিষিদ্ধ হলেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ফেসবুকের হালনাগাদ করা নীতিমালার তথ্য জানিয়ে ফেসবুক আরও বলেছে, ভুয়া ও আপত্তিকর তথ্য ছড়ানোর জন্য রাজনীতবিদদের আর বিশেষ ছাড় দেওয়া হবে না। সেই কারণে তারা নতুন নীতিমালা করেছে।

বিশ্বনেতা এবং রাজনীতিবিদদের মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সাংবাদিক, নীতিনির্ধারক এবং নিজস্ব কর্মীদের কাছ থেকে বরাবরই সমালোচিত হয়েছে ফেসবুক। সেসব সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটিতে এই পরিবর্তন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফেসবুকের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্লেগ বলেছেন, ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার কার্যক্রম সামাজিক নিরাপত্তা জন্য হুমকি কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ দেবে। তার কার্যক্রমে ঝুঁকি রয়েছে— এমনটা জানা গেলে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও বাড়ানো হবে। যখন ট্রাম্পের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে, তখন তিনি নানা ধরনের কঠোর বিধিনিষেধের মধ্য দিয়ে যাবেন। আবারও নীতিমালা লঙ্ঘন করলে আজীবনের জন্য ফেসবুক থেকে নিষিদ্ধ হতে পারেন ট্রাম্প।

ফেসবুক দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা প্রকাশের পরই পরই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এটাকে মার্কিন ভোটারদের জন্য ‘অপমান’ বলে অভিহিত করেছেন ট্রাম্প। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘রেকর্ড ভাঙা সাড়ে সাত কোটি মানুষ এবং অন্যান্যরা যারা ২০২০ সালের জালিয়াতিপূর্ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমাদের ভোট দিয়েছিলেন, তাদের জন্য ফেসবুকের এই আদেশ অপমানের। তারা কখনোই এটা মেনে নেবেন না। অবশেষে আমাদেরই জয় হবে। আমাদের দেশ এই রকম অন্যায় আর সহ্য করবে না।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877