শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কারাবন্দিরাও আছেন কঠোর লকডাউনে

কারাবন্দিরাও আছেন কঠোর লকডাউনে

স্বদেশ ডেস্ক:

করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় দেশের ৬৮ কারাগারেও চলছে লকডাউন। ভাইরাস যাতে না ছড়াতে পারে, সে জন্য ৮৫ হাজারেরও বেশি কয়েদি বা হাজতির সঙ্গে তাদের স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে। আবার কারাগারে নতুন হাজতি এলে ১৪ দিনের আইসোলেশন শেষে সুস্থতার ওপর নির্ভর করে তাদের সাধারণ বন্দিদের ওয়ার্ডে রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া কারাবন্দিদের মধ্যে কারও জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হলে করোনা সুরক্ষা দিয়ে তাদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাস প্রকোপে গত বছরের এপ্রিলের শুরু থেকে এ বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কারাবন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ রাখা হয়। এরপর সংক্রমণ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে গত ১ মার্চ থেকে সীমিতভাবে সাক্ষাতের কার্যক্রম শুরু হয়। সংক্রমণ ফের বৃদ্ধি পেলে গত ৪ এপ্রিল থেকে সাক্ষাতের সুযোগ আবার পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন আমাদের সময়কে বলেন, করোনার প্রকোপের কারণে বন্দিদের সুরক্ষা দিতে ইতোমধ্যে তাদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ বন্ধ করা হয়েছে। তবে প্রত্যেক বন্দির সঙ্গে স্বজনেরা সপ্তাহে একদিন ১০ মিনিটের জন্য টেলিফোনে কথা বলতে পারবেন।

কারা কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি, মহিলা কারাগারসহ দেশের ৬৮টি কারাগারে বর্তমানে ৮৫ হাজারের বেশি বন্দি রয়েছেন। ধারণক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণ হাজতি বা কয়েদি থাকলেও কঠোর স্বাস্থ্য নির্দেশনা পালনের কারণে কারাবন্দি বা কারা সদস্যদের মধ্যে আক্রান্তের হার খুবই কম। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমে যেন ভাইরাস ছড়াতে না পারে, সে জন্য তাদের অন্য সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। প্রতিনিয়ত কারাগারে আসা নতুন হাজতিদের নিয়েও উদ্বেগে কারা কর্তৃপক্ষ। আদালতের নির্দেশে তাদের জন্য আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, জায়গা সঙ্কটের কারণে যেখানে সাধারণ ওয়ার্ডে বন্দি ধারণের ঠাঁই নেই, সেখানে নতুন হাজতিদের জন্য প্রতিটি কারাগারে আলাদা করে আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করতে হচ্ছে।

কারাগারে করোনা সুরক্ষা বিষয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, কঠোরভাবে করোনার বিধিনিষেধ মানার কারণে এই মুহূর্তে তিনজন কারাবন্দি আক্রান্ত আছেন। তাদের মধ্যে দুজন ঢাকায়, একজন ময়মনসিংহে। কারা সদস্যদের মধ্যেও আক্রান্তের হার কম। তিনি আরও বলেন, আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ আদালতে বন্দিদের হাজির করা এবং নতুন বন্দিদের আগমনকেন্দ্রিক করোনা সুরক্ষা দেওয়া নিয়ে। এ ক্ষেত্রে সরকারের কিছু নির্দেশনা রয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কিছু বন্দিকে আদালতে হাজির করা হবে। আইন মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সেসব নির্দেশনা পালনের পাশাপাশি আদালতে বন্দিদের আনা-নেওয়ার সময় প্রত্যেককে গোসল করিয়ে জীবাণুমুক্তকরণ, পথিমধ্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়গুলো পালন করা হচ্ছে।

ঢাকা বিভাগের একজন কারা কর্মকর্তা জানান, গতকাল সোমবার কারা মহাপরিদর্শকের নেতৃত্বে সব ক’টি কারাগারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মিটিং হয়। এতে নতুন করে কিছু নির্দেশনা দেন কারা মহাপরিদর্শক। বন্দিদের পাশাপাশি কারা সদস্যদের মাধ্যমে যাতে কারা অভ্যন্তরে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য শিফট করে তাদের ডিউটি ও আইসোলেশনে থাকার ওপর জোর দেওয়া হয়।

এ ছাড়া যেসব কারা সদস্য পরিবারের সঙ্গে কারাগার বা আশপাশের এলাকায় বাস করেন, তাদের মাধ্যমে যেন কারা অভ্যন্তরে ভাইরাস ছড়াতে না পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কারাগারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও খাবার নেওয়ার সময় করোনা সংক্রমণ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877