স্বদেশ ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্র তার ২০ কোটি জনগণকে করোনার টিকা দেওয়ার পর অন্য দেশগুলোর জন্য এই টিকা উন্মুক্ত করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি। তিনি বলেছেন, ‘আগামী মাসেই এই ২০ কোটি জনগণকে টিকা দেওয়া নিশ্চিত করা হবে।’
আজ শুক্রবার সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় এসে এসব কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের আয়োজিত লিডার্স সামিট অন ক্লাইমেটের নিমন্ত্রণপত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দিতে জন কেরি আজ সকালে দিল্লি থেকে প্রায় ছয় ঘণ্টার সফরে ঢাকায় আসেন।
আজ দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন জন কেরি। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
প্রায় ছয় ঘণ্টার ঢাকা সফরের শুরুতে জন কেরি বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে ঢাকা ছেড়ে যান জন কেরি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে একটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করছেন। এপ্রিলের ২২ ও ২৩ তারিখ ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠেয় ওই শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়াও রাশিয়া, চীন, জাপান, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, ভারতসহ ৪০টি দেশের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
মার্কিন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেন, ‘টিকার বিষয়ে আমরা সমন্বিত চেষ্টা চালাচ্ছি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার দায়িত্ব পালনের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে ১০ কোটি মার্কিন জনগণকে টিকা দেওয়ার কথা বলেছেন। এখন মে মাসের মধ্যে ২০ কোটি জনগণের মধ্যে টিকা দেওয়া নিশ্চিত করা হবে। এরপর অন্য দেশের জন্য টিকা উন্মুক্ত করা হবে। সম্প্রতি চার দেশের কৌশলগত জোট কোয়াডের বৈঠকে জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার নেতাদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট বাইডেন টিকা নিয়ে আলোচনা করেছেন, যাতে অন্য দেশেও তা বিতরণ করা যায়।’
মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি। তবে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পুরো দায়টা বাংলাদেশের একার নয় অভিহিত করে তিনি বলেছেন, এ সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই বাড়তি উদ্যোগ নিতে হবে।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে কক্সবাজারের প্রতিবেশগত বিপুল ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠাসহ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বাংলাদেশকে সহায়তার কথা ভাবছে, জানতে চাইলে জন কেরি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিয়ানমারে অতীতে এবং এখন সে দেশের জনগণের জীবনে যা ঘটছে, তা বিশ্বের জটিল সংকটের একটি। বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উদারতা দেখিয়ে রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য যা করেছে, সে জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেন অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। তবে এই উদারতার জন্য বাংলাদেশকে অনেক বেশি মূল্য দিতে হয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ, দায়িত্বটা বাংলাদেশের একার নয়। এ জন্য জাতিসংঘসহ এ বিষয়ে প্রতিটি দেশকে এগিয়ে আসতে হবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রয়োজন বলে জন কেরিকে জানানো হয়েছে।’