রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৮:৪১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ভারতে গিয়ে নিখোঁজ আওয়ামী লীগের এমপি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ২টি গ্রামে আরাকান আর্মির হামলা ‘কিরগিজস্তানকে আমাদের গভীর উদ্বেগ জানিয়েছি, কোনো বাংলাদেশী শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়নি’ কালশীতে পুলিশ বক্সে আগুন অটোরিকশা চালকদের স্বেচ্ছাসেবক লীগের র‌্যালি থেকে ফেরার পথে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চরম তাপপ্রবাহ আসন্ন বিপদের ইঙ্গিত দ্বিতীয় ধাপে কোটিপতি প্রার্থী বেড়েছে ৩ গুণ, ঋণগ্রস্ত এক-চতুর্থাংশ: টিআইবি সাড়ে ৪ কোটি টাকার স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার শহীদ ২ দিনের রিমান্ডে ‘গ্লোবাল ডিসরাপ্টর্স’ তালিকায় দীপিকা, স্ত্রীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত রণবীর খরচ বাঁচাতে গিয়ে দেশের ক্ষতি করবেন না: প্রধানমন্ত্রী
আজ সাকিবের জন্মদিন

আজ সাকিবের জন্মদিন

স্পোর্টস ডেস্ক:

‘বাংলাদেশের জান, বাংলাদেশের প্রাণ সাকিব আল হাসান’- ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) এই বিজ্ঞাপন চিত্রটি কবের বা কত তারিখের, তা হয়ত জানেন না কেউই। দরকারও নেই জানার। শুধু জানলেই হবে আজ ‘২৪ মার্চ’। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের জন্মদিন।

আজকের এই দিনটিতে ৩৪ এ পা রাখলেন সাকিব। ১৯৮৭ সালে আজকের দিনে মাগুরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এই বাংলাদেশ ক্রিকেটের মহাতারকা।

সাকিবের ক্রিকেটে আসা-
সাকিবের বাবা মাশরুর রেজা ছিলেন কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা। ছিলেন ফুটবলের ভক্ত। খেলতেন জেলার বিভিন্ন লিগে। বাবার পছন্দের বিপরীতে ছেলে হলেন ক্রিকেটার। গ্রামাঞ্চলের ক্রিকেট খেলতে গিয়েই তিনি চোখে পড়ে যান এক আম্পায়ারের। সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসা হয় মাগুরার ইসলামপুর পাড়া ক্লাবে। সেই ক্লাবের হয়ে খেলতে গিয়ে সাকিব প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করেন। প্রথম বলেই তুলে নিয়েছিলেন উইকেট। প্রকৃত ক্রিকেট জীবনের শুরু সেই বল থেকেই।

মূল ধারার ক্রিকেটে পদার্পন-
৬ মাসের কোর্স করার জন্য বিকেএসপিতে ভর্তি হয়েছিলেন সাকিব। পরে মাত্র ১৫ বছর বয়সে সুযোগ পান অনুর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলার। এ ছাড়া জাতীয় লিগে খেলার জন্য তালিকাভূক্ত হন খুলনা বিভাগীয় দলে। ১৯ দলের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সই সাকিবকে নিয়ে আসে সামনের সারিতে। ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব​-১৯ ত্রি-দেশিয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে মাত্র ৮৬ বলে সেঞ্চুরি করে ও ৩টি উইকেট নিয়ে দলকে জেতান তিনি। ২০০৫ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে সাকিব অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ১৮টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন। ৩৫.১৮ গড়ে সংগ্রহ করেন মোট ৫৬৩ রান এবং ২০.১৮ গড়ে নেন মোট ২২টি উইকেট।

জাতীয় দলে অভিষেক-
২০০৬ সালের জিম্বাবুয়ে সফরে সাকিব প্রথমবারের মত বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পান। ওই সিরিজেই হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার মধ্য দিয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় সাকিবের।

টেস্ট অভিষেক-
ওয়ানডে অভিষেকের পরের বছরই ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্টে অভিষেক হয় সাকিবের। ২০০৬ সালে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ম্যাচ খেলেন তিনি। ২০০৯ সালেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাশরাফির ইনজুরির কারণে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালে মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও একইভাবে দায়িত্ব পান তিনি। এরপর তার নেতৃত্বেই ২০১১ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলে বাংলাদেশ।

ক্যারিয়ারের ঊর্ধ্ব গগনে-
২০০৯ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডে অলরাউন্ডার র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষে উঠে আসেন সাকিব। এই ধারাবাহিকতায় টেস্টেও নিজের কার্যকারিতা প্রমাণ করে সেরা অলরাউন্ডারের আসন দখল করেন তিনি। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই সেরা অলরাউন্ডার হন তিনি। ক্রিকেট বিশ্বে একমাত্র ঘটনা এটি।

ক্যারিয়ার জুড়ে নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন সাকিব, চলেছে সমালোচনাও। কিন্তু বার বারই নিন্দুকের মুখে কুলুপ এঁটেছেন তিনি। তার নেতৃত্বে দেশের বাইরে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয় করে বাংলাদেশ। তবে, দেশে মাটিতে তার আক্ষেপ জয় পেয়েও না পাওয়া সেই এশিয়ার কাপের ফাইনাল ম্যাচ। মাঠে দাঁড়িয়ে মুশফিককে বুকে নিয়ে তার কান্না, দেশবাসীর অন্তরে গেঁথে আছে।

এতেই শেষ নয়- ব্যাটে-বলে অস্ট্রেলিয়াকে ঘোল খাওয়ানো, ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে দেশের হয়ে সেরা পারফরম্যান্স, দেশের মাটিতে ইংলিশদের হারিয়ে তার সেই স্যালুট- বাঙালি ভুলবে না।

বোলিং ফিগার, সর্বোচ্চ রান, সর্বোচ্চ উইকেট- সব আসন একাই দখলে রেখেছেন সাকিব। বিশ্বের প্রায় সব ফ্রাঞ্চাইজি লিগ খেলা একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবেও নাম লিখিয়েছেন তিনি।

এক নজরে সাকিবের ক্যারিয়ার-
মাগুরার ফায়সাল, ড্রেসিংরুমের ময়না আর বাংলাদেশের সাকিব। নাম্বার সেভেন্টি ফাইভের ক্রিকেট ক্যারিয়ার বেশ ঝলমলে। টেস্ট ক্রিকেটে তাকালে দেখা যায় বাংলাদেশের পোস্টার বয় খেলেছেন ৫৭ টি টেস্ট। ব্যাট করেছেন ১০৬ ইনিংস, রান ৩৯৩০, গড় ৩৯.৭০, শতক ৫ টি, অর্ধশতক ২৫ টি, উইকেট ২১০ টি, ইনিংসে ৫ উইকেট ১৮ বার, ক্যাচ ২৪ টি। টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাট হাতে দলের ১৩.৯০% ও বল হাতে নিয়েছেন ২৭.২৪ উইকেট।

ওডিআই ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছেন ২০৯ টি, ইনিংস ১৯৭ টি, রান ৬৪৩৬, গড় ৩৮.০৮, স্ট্রাইক রেট ৮২.৩৪, শতক ৯ টি, অর্ধশতক ৪৮ টি, উইকেট ২৬৬ টি, বোলিং গড় ২৯.৭৩, ইনিংসে ৫ উইকেট ২ বার, ক্যাচ ২৪ টি। ব্যাট হাতে দলের ১৪.৫১% রান ও বল হাতে দলের ১৭.৬২% রান একাই করেছেন সাকিব আল হাসান।

টি-২০ ক্রিকেটে ৭৫ ইনিংসে রান ১৫৬৭, উইকেট ৯২ টি, ইনিংসে ৫ উইকেট ১ বার, ক্যাচ ১৯ টি!

ব্যক্তিগত জীবন-
২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর সাকিব আল হাসান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী উম্মে আহমেদ শিশিরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তিনি দুইটি কন্যা সন্তান এবং একটি পুত্র সন্তানের জনক। তার বড় মেয়ের নাম আলাইনা হাসান অব্রি এবং ছোট মেয়ের নাম ইররাম। ২০২১ সালের ১৬ মার্চ (বাংলাদেশ সময়) তৃতীয় সন্তানের বাবা হন সাকিব আল হাসান।

নানা অর্জন, খ্যাতি ও দেশ-বিদেশে একজন স্বনামধন্য ক্রিকেটার হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পাওয়া বাংলাদেশের এই পতাকাবাহককে দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকা ও আমাদের সময় অনলাইনের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877