শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বিদেশে বাণিজ্য বাড়াতে বড় পরিকল্পনা

বিদেশে বাণিজ্য বাড়াতে বড় পরিকল্পনা

স্বদেশ ডেস্ক:

স্বল্পোন্নত (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য রপ্তানি বাণিজ্য রয়েছে এমন সব দেশের সঙ্গে এফটিএ ও পিটিএ করে খুব সহজে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা নিশ্চিত করতে চায়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ দেশের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও বাণিজ্য সক্ষমতা বাড়াতে কাজ শুরু করা হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮টিসহ বিশ্বের ৫৫টি দেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা (জিএসপি) পেয়ে থাকে। ২০২৬ সালে চূড়ান্তভাবে এলডিসি উত্তরণ হওয়ার পর দেশের পক্ষে জিএসপি সুবিধা আর বহাল থাকবে না। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়মানুযায়ী ওই সময় জিএসপি প্লাসের আওতায় এ সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত পরিপালন করতে হবে। জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিশ্বের ১১টি দেশের সঙ্গে এফটিএ ও পিটিএর অপেক্ষায় রয়েছে সরকার। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে সিপার উদ্যোগ রয়েছে। এসব চুক্তি কার্যকর করে বাণিজ্য বাড়ানোর মাধ্যমে এলডিসি উত্তরণ ঘটানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার।

প্রথম দেশ হিসেবে ভুটানের সঙ্গে পিটিএ করেছে বাংলাদেশ। ভুটানের পর নেপালের সঙ্গে পিটিএ করার সব বিষয় চূড়ান্ত। এর পরই দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া ও মালদ্বীপের সঙ্গে পিটিএ করা হবে। দুটি দেশই চুক্তির খসড়া একে অন্যের কাছে পাঠিয়েছে, যেটি চূড়ান্ত করতে আলোচনা-পর্যালোচনা চলছে জোরেশোরে। এই চুক্তিতে বাংলাদেশের গুরুত্ব দেওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে ইন্দোনেশিয়ার ২৬ কোটি ভোক্তার বাজার। অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়ার নজর বাংলাদেশের ১৬ কোটি ভোক্তার দিকে। দুই দেশের মধ্যে পিটিএ চুক্তি হলে প্রায় ৪২ কোটি টাকার ভোক্তার বাজার তৈরি হবে, যেখানে উভয় দেশ তালিকাভুক্ত পণ্যে অবাধ বাণিজ্য সুবিধা পাবে। এখন প্রাথমিক পণ্য তালিকা বাছাইয়ের কাজ চলছে।

অন্যদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর সামনে রেখে বৃহৎ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (সিপা) অগ্রগতির বিষয়ে বৈঠক ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। চলতি বছরের মধ্যে ভারতের সঙ্গে সিপা চুক্তি হতে পারে। এসব চুক্তির ফলে স্বল্পোন্নত (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ সহজ হবে বলে জানিয়েছে সরকার। এ কারণে আরও নতুন নতুন দেশের সঙ্গে এফটিএ ও পিটিএ করা হবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর সামনে রেখে সিপা চুক্তির বিষয়ে ২২ ও ২৪ মার্চ ঢাকায় এ বৈঠক হবে। এতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ এক কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, ভুটানের পর ইন্দোনেশিয়া ও মালদ্বীপের সঙ্গে পিটিএ করা হবে। মালদ্বীপের সঙ্গে কোনো বাণিজ্য চুক্তিই নেই। তাই এ দেশটির বিষয়ে সবকিছু নতুন করে করতে হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি থাকলেও সেটি কম।

জানা গেছে, চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া উভয়েই উভয়ের কাছে প্রায় ৩০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়ে প্রাথমিক পণ্য তালিকা হস্তান্তর করেছে। বাংলাদেশের তালিকায় তৈরি পোশাক ছাড়াও ওষুধ, ফার্নিচার, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ইলেকট্রনিক্স, পাট ও পাটজাত পণ্য, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত পণ্যসহ দেশের সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাতগুলো রয়েছে।

অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশের বাজারে ২৭১টি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধাসহ আরও ৩৩টি পণ্যে ৫০ শতাংশ এবং পাঁচটি পণ্যে ৪০ শতাংশ শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে তালের তেল, নারকেল তেল, উদ্ভিজ চর্বি, মাছ, প্রাকৃতিক মধু, কোকো, বালি, পাথর, জিপসাম, চুনাপাথর, কয়লা, পেট্রোলিয়াম তেল, কাঠ ও কাঠের পণ্য, রেল, অ্যালুমিনিয়াম, এয়ার কন্ডিশনার, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, মোবাইল ও মোবাইল আনুষঙ্গিক, কম্পিউটার মনিটর, টেলিভিশন এবং এর যন্ত্রাংশ, এলইডি ল্যাম্প, সৌর মডিউল, প্রিন্টার, বিভিন্ন ধরনের অতিরিক্ত যন্ত্রাংশ, নারকেল, সুপারি, বাদাম, শুকনো ফল, কফি, চা, চাল এবং বিভিন্ন মসলা।

মালদ্বীপে জনশক্তি রপ্তানি করে বাংলাদেশ। পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত কোনো বাণিজ্য চুক্তি করা হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে এবার দেশটির সঙ্গে এফটিএ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877