বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৫:৪৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে দুই মাস পরীক্ষা নয়

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে দুই মাস পরীক্ষা নয়

স্বদেশ ডেস্ক: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালুর প্রথম দুই মাসের মধ্যে এমন কোনো আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা বা মূল্যায়নের ব্যবস্থা রাখা যাবে না, যা শিক্ষার্থীর ওপর চাপ তৈরি করতে পারে। এই সময়ে তাদের জন্য আনন্দঘন শিক্ষা কার্যক্রমের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা প্রশাসন।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে চিন্তা করছে সরকার। ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এর সঙ্গে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়েছে। এ গাইডলাইন অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।

এতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের যে মানসিক চাপ তৈরি হয়েছে তা থেকে মুক্ত করার জন্য নিরাপদ ও আনন্দঘন শিখন কার্যক্রমের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। প্রথম ১৫ দিন শিক্ষা কার্যক্রম কেমন হবে, কতটা সময় শিখন কার্যক্রম এবং কতটা সময় মনোসামাজিক কার্যক্রমের ব্যবস্থা থাকবে তার পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। প্রথম এক বা দুই সপ্তাহ পাঠক্রমভিত্তিক শিখনের ওপর গুরুত্ব না দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা ও সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মনোসামাজিক সহায়তা এবং মানসিক ও শারীরিক কার্যক্রমের মধ্যে খেলাধুলা, মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, গাছ লাগানো ও পরিচর্যা, সংগীতচর্চা, ছবি আঁকা, সামাজিক সেবামূলক কাজ করতে নির্দেশনা রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতির জন্য বাজেট তৈরিতে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পাওয়া মাত্র শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুতকরণ পরিকল্পনামাফিক প্রয়োজনীয় জীবাণুনাশক প্রয়োগসহ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের দায়িত্ব বণ্টন, নির্দিষ্ট সময় পর পর ২০ সেকেন্ড ধরে সঠিকভাবে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা এবং দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে রাখতে হবে এ সংক্রান্ত পোস্টার।

কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে কন্টাক্ট লেস থার্মোমিটার স্থাপন এবং কারও শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে বাড়িতে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের পথে ও অভিভাবকদের বসার স্থানে তিন ফুট দূরত্বে করতে হবে মার্কিং। সবার জন্য মাস্কের ব্যবস্থা রাখতে হবে, যাতে কোনো শিক্ষার্থী মাস্কের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিরত না থাকে। স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে হটলাইন নম্বর দৃশ্যমান স্থানে টাঙিয়ে রাখতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার গাইডলাইনে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে। তিন ফুট দূরত্বে ক্লাসরুমের বেঞ্চগুলো স্থাপন করতে বলা হয়েছে। পাঁচ ফুটের কম দৈর্ঘ্যরে বেঞ্চে একজন শিক্ষার্থী এবং পাঁচ থেকে সাত ফুট দৈর্ঘ্যরে বেঞ্চে দুজন শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাইডলাইন অনুসারে ক্লাস করতে পারবে। স্কুলে ঢোকার আগেই থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করার জন্য কয়েকটি ধাপের কথা বলেছে মাউশি। সেগুলো হলো- এক. নিরাপদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য পরিকল্পনা করা; দুই. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত করা; তিন. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিরাপদে চালু করা; চার. শিক্ষা কার্যক্রম চলাকালে করোনার বিস্তার রোধে পদক্ষেপ নেওয়া।

নিরাপদ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর উপস্থিতির সংখ্যা নিরূপণ করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কতজনকে একই শিফটে এনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে তা পরিকল্পনা করা হবে। সে ক্ষেত্রে বসাতে হবে তিন ফুট দূরত্ব নিশ্চিত করে। শিক্ষার্থীর চাহিদা ও অভিভাবকের মতামতের ভিত্তিতে এবং প্রতিষ্ঠানের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করতে হবে।

স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনাটি ইউনিসেফের সহযোগিতায় প্রস্তুত করা হয়েছে। বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিকে নতুন স্বাভাবিকতা (নিউ নরমাল) হিসেবে বিবেচনা করে এই নির্দেশিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877