শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০২:৪২ অপরাহ্ন

একান্ত জীবনযাপন খালেদা জিয়ার

একান্ত জীবনযাপন খালেদা জিয়ার

স্বদেশ ডেস্ক:

করোনাকালে একান্ত জীবনযাপন করছেন বেগম খালেদা জিয়া। দলীয় কোনো রাজনৈতিক আলাপচারিতায় নেই তিনি। কদাচিৎ কাউকে সাক্ষাৎ দিলেও তা হচ্ছে সর্বোচ্চ সতর্কতা মেনেই। একান্তই পারিবারিক পরিমণ্ডলে দিন কাটছে তার। শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে করোনার কারণে বেগম জিয়ার সঠিক কোনো চিকিৎসা এখনো শুরু হয়নি।

মুক্তির পর ৯ মাস কেটে গেলেও বিএনপি চেয়ারপারন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা শুরু করা যায়নি। এ সময়ের মধ্যে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি না হলেও খুব একটা উন্নতি ঘটেনি। তবে তার হাত ও পায়ের ব্যথা এখন অনেকটা কমেছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে কবে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর উন্নত চিকিৎসা শুরু হবে তা জানাতে পারছেন না বিএনপি ও পরিবারের সদস্যরা।

২৫ মাসেরও বেশি সময় কারাবন্দী থাকার পর চলতি বছরের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়া করোনাকালে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ‘মানবিক বিবেচনায়’ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান। এরপর আরো এক দফায় তার জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। জামিনে মুক্তির পর থেকে তিনি গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ আছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরে খালেদা জিয়ার হাত ও পায়ের ব্যথা একটু কম। তবে শারীরিক অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি নেই। তিনি উঠে দাঁড়াতে পারছেন না। হাঁটাচলা করতে পারেছেন না। গৃহকর্মী ফাতেমাসহ পরিবারের সদস্যরা খালেদা জিয়ার দেখভাল করেন। এ ছাড়া দুইজন নার্স রয়েছেন তারাও সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এ দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি জানা যায়নি।

আপাতত খালেদা জিয়ার চিকিৎসার মূল দায়িত্বে আছেন লন্ডনে অবস্থানরত পুত্রবধূ ডা: জোবায়দা রহমান। তার পরামর্শেই মূলত চিকিৎসা চলছে। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ডা: এ জে এম জাহিদ হোসেন ও ডা: মামুন নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। ডা: মামুন প্রায় প্রতিদিনই তার শরীরিক অবস্থা জানতে বাসায় যান। মাঝে মধ্যে ডা: জাহিদ হোসেনও বাসায় যান।

অস্টিও আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া। তার মেরুদণ্ড, বাম হাত ও ঘাড়ের দিকে শক্ত হয়ে যায়। দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা আছে। তিনি ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খান। বাম চোখেও একটু সমস্যা রয়েছে তার।

খালেদা জিয়ার অফিস সূত্রে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন লন্ডনে অবস্থানরত বড় ছেলে তারেক রহমান ও দুই পুত্রবধূ এবং নাতনীদের সাথে কথা বলে সময় কাটান। এ ছাড়া পত্রিকা ও টিভি দেখে বাসায় সময় কাটান তিনি। দলের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করার সুযোগ পান না। তবে সম্প্রতি খালেদা জিয়ার সাথে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেখা করেছেন।

খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাতে চাইলে চিকিৎসক ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন গতকাল বলেন, উনার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি নেই। আগের মতো আছে। পরামর্শ মোতাবেক রুটিন ওষুধগুলো খাচ্ছেন তিনি। বাসা থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রোপার ট্রিটম্যান্টের জন্য তাকে একটা সেন্টারে (হাসপাতাল) নেয়া প্রয়োজন। কিন্তু করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে তাকে হাসপাতালে নেয়া যাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে ম্যাডামের পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ক’দিন আগে সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া মুক্ত নন। এই যে বলা হচ্ছে, উনার সাজা স্থগিত করা হয়েছে। সাজা স্থগিত হলে তো তার ওপর কোনো বিধিনিষেধ থাকার কথা না। ডিফারেন্সটা হচ্ছে, শুধু হাসপাতাল থেকে তাকে তার বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। ওখানে তিনি হোমলি পরিবেশের মধ্যে আছেন। যেটাকে সোজা কথা বললে বলা যায় এটা হচ্ছে, গৃহে অন্তরীণ করা। তিনি খালেদা জিয়ার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের কথাও বলেন।

গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মানুষ এখন খালেদা জিয়াকেই ভুলে যাচ্ছে। তিনি এখন অসুস্থ। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দরকার। তাহলে দেশের মানুষ জানবে অন্তত তার চিকিৎসা হচ্ছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877