স্বদেশ ডেস্ক:
বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির মধ্যে ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা শিশু আদালত। এদের মধ্যে ছয়জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড, চার জনকে পাঁচ বছর করে এবং একজনের তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। খালাস দেয়া হয়েছে বাকি তিনজনকে।
মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন জেলা শিশু আদালতের বিচারক মোঃ হাফিজুর রহমান।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনা কারাগারে থাকা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এছাড়াও বিভিন্ন সময় আদালতে হাজির হন এ মামলায় জামিনে থাকা আট আসামি।
রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হওয়ার পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সাত আসামি।
রায়ে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা করেছেন উভয়পক্ষের আইনজীবীসহ নিহত রিফাতের পরিবার এবং আসামিদের স্বজনরাও।
গত ১৪ অক্টোবর এ মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বরগুনার শিশু আদালতের বিচারক মোঃ হাফিজুর রহমান রায়ের জন্য আজ মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত হত্যাকণ্ড ঘটে। ওই বছর ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দু’ভাগে বিভক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত। এরপর ১৩ জানুয়ারি থেকে অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। মোট ৭৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে এ মামলায়।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ আছাদুজ্জামান। রায়ে নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জনের ফাঁসির আদেশ দেন। আর বাকি চারজনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনায় পরদিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ছিলেন এ মামলার প্রধান সাক্ষী।
এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ওই বছরের ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। ১ সেপ্টেম্বর মামলায় ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দুভাগে বিভক্ত করে আদালতে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামি করা হয়।