বরগুনায় সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী সাগর নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে রিফাত হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে সাগরকে কোথা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেটি তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এদিকে গ্রেপ্তারের ফলে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় সাগরের আর অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। জানা গেছে, রিফাত শরীফ হত্যার পরিকল্পনাকারী গ্রুপের সদস্য সাগর কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে ইতিমধ্যে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। আজ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল বরগুনা পুলিশ লাইনে। সেই পরীক্ষা দেওয়ার আগেই তাকে গ্রেপ্তার করা হলো।
গ্রেপ্তার সাগর বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল লতিফ মাস্টারের ছেলে। বর্তমানে তারা বরগুনা পৌরসভার পশ্চিম আমতলা পাড় সড়কের বাসিন্দা।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, কোনো আবেদনকারী যদি ফৌজদারী মামলার আসামি হয় তাহলে তার নিয়োগ আপনাআপনি বাতিল হয়ে যায়। তার পুলিশে চাকরির করার সুযোগ নেই। সাগরের ক্ষেত্রেও এমনটি হবে।
সাগরের পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষার রোল নম্বর ১০৮। পিরোজপুর সদরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী শাহনেয়াজ, ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (লালমোহন সার্কেল) মো. রাসেলুর রহমান এবং বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন স্বাক্ষরিত বরগুনায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নামের মেধা তালিকায় ৪০ নম্বর পেয়ে ১৮তম স্থান অধিকার করেন সাগর।
জানা গেছে, রিফাত হত্যার পরিকল্পনাকারীরা ০০৭ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ করেছেন। ইতিমধ্যেই এ গ্রুপে রিফাত হত্যার পরিকল্পনার কথোপকথনের বেশ কয়েকটি স্ক্রিনশট ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সেই স্ক্রিনশট দিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে দেশের বেশ কিছু গণমাধ্যমে। রিফাত হত্যার পরিকল্পনা করা ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ ০০৭-এ যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে সাগর।
প্রসঙ্গত, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ আরও দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালান। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তারা। রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নি দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় রিফাত শরীফকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মূল আসামি নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।