বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৬:১১ অপরাহ্ন

মৃত ব্যক্তিদের না বলা কথা জানিয়ে দেন যে ব্যক্তি

মৃত ব্যক্তিদের না বলা কথা জানিয়ে দেন যে ব্যক্তি

স্বদেশ ডেস্ক:

মৃত ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। তাদের না বলা কথাগুলো জানিয়ে দেন। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হাজির হয়ে মৃতদের হয়ে লোকজনের কাছে অপরাধের কথা স্বীকার করেন তিনি। এজন্য নানা ধরনের সমস্যাও পোহাতে হয় তাকে। তবে এই কাজটির জন্য অর্থ দিতে হয় বিল এডগার নামের ওই ব্যক্তিকে।

যেভাবে শুরু

বিলের মাথায় যখন এই কাজটি করার আইডিয়া আসে, তখন তিনি অস্ট্রেলিয়াতে মৃত্যুপথযাত্রী এক রোগীর ব্যক্তিগত গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি বলেন, ‘মৃত্যুর বিষয়ে আমরা কথাবার্তা বলতাম, মৃত্যুর পর জীবন কেমন হবে – এ ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হতো। একদিন তিনি বললেন, আমি আমার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য কিছু করতে চাই। আমি তখন তাকে ওই অনুষ্ঠানে নিজের সম্পর্কে নিজের প্রশংসা করার ধারণা দেই।

কিন্তু লোকটি তখন বলেন, শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠানে তিনি যেসব কথা বলতে চান সেগুলো তার পরিবার ও বন্ধুরা পছন্দ করবে না। ফলে তারা সম্ভবত তার লিখে যাওয়া বার্তা পাঠ করা থেকে বিরত থাকবেন অথবা তারা রেকর্ড করা অন্য কিছু বাজাবেন। তখন আমি তার হয়ে এই কাজটা করার প্রস্তাব দেই এবং এভাবেই কাজটা শুরু হয়ে গেল।’

কত খরচ

এখন এই কাজ করাটাই বিল এডগারের জীবিকা নির্বাহের উপায়। তিনি একজন ‘কফিন কনফেসর’ যার অর্থ ‘ফিউনারালের একটা নির্দিষ্ট সময়ে আমি উঠে দাঁড়াই, খামের ভেতর থেকে একটা কাগজ বের করি এবং কফিনে শায়িত লোকটির না বলা কথাগুলো সেখান থেকে পাঠ করি।’ এজন্য তিনি নেন প্রায় ১০ হাজার অস্ট্রেলিয় ডলার।

এই অর্থের বিনিময়ে তিনি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠানে হাজির হন, তার আগে মৃতদেহের পাশে সারা রাত ধরে বিলাপ করেন, উইল পাঠ করে শোনান এবং মৃত ব্যক্তির বাড়ি থেকে স্পর্শকাতর জিনিসপত্র সবার অগোচরে সরিয়ে নেন।

এ ব্যাপারে বিল বলেন, ‘যেকোনো জিনিস হতে পারে, পর্নোগ্রাফি থেকে শুরু করে সেক্স টয়, ড্রাগ, বন্দুক, অর্থ-যেকোনো কিছু।’

না বলা কথা

একবার এ রকম এক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বক্তব্য রাখছিলেন বিল এডগার। তখন মৃত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু হঠাৎ করে তার কথা থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ‘আমি তাকে বসতে বলি, বলি চুপ করে থাকতে। তাকে বলি তার বন্ধু যেসব কথা বলে গেছে, আমার বলার জন্য, সেসব শুনতে। কথাটা হচ্ছে – তিনি যখন মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছিলেন তখন তার ঘনিষ্ঠ ওই বন্ধু তার স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করার ব্যাপারে তাকে প্ররোচিত করার চেষ্টা করেছিলেন।’

বিল জানান, এরপর ওই ব্যক্তি সুর সুর করে পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে চলে যান। মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে আরও কয়েকজন ব্যক্তিকে সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফিউনারাল সুন্দরভাবেই সম্পন্ন হয়েছে।

অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কার জন্য : মৃত নাকি জীবিতদের জন্য?

বিল এডগারের কাজ কেমন হয়েছে- সে বিষয়ে তার ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে ফিডব্যাক, রিভিউ কিংবা অভিযোগ পাওয়া সম্ভব নয়। তবে বিল বলেন, ‘বিষয়টা যে খুব ভালো তা নয়, কিন্তু এটা তো তাদের ফিউনারাল। ফলে তারা যেভাবে এই পৃথিবী থেকে চলে যেতে চান, সেভাবেই যেতে পারবেন না কেন?’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877