সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৭:২১ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
৮ মাস আটক ছিলেন, পরে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন জলিল

৮ মাস আটক ছিলেন, পরে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন জলিল

স্বদেশ ডেস্ক:

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনা কেন্দ্র করে টেকনাফের সাধারণ মানুষের মাঝে ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে নিয়ে ক্ষোভের বহির্প্রকাশ শুরু হয়েছে। এদিকে মেজর সিনহার বোন টেকনাফ থানার সাবেক (ওসি) প্রদীপসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে একটি হত্যামামলা দায়ের করেছে। এর পর গত বৃহস্পতিবার ওসি প্রদীপ চট্টগ্রাম থেকে আটক হওয়ার খবরটি টেকনাফের চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে পুলিশ সদস্যদের কাছে হয়রানির শিকার হওয়া ভুক্তভোগীরা টেকনাফ থানার সামনে এসে ভিড় জমিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সেই সূত্র ধরে শুক্রবার দেখা হয় ৭ জুলাই মাদকবিরোধী অভিযানে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হোয়াইক্যং ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম মহেশখালিয়াপাড়া এলাকার মৃত আলী আহাম্মদের ছেলে আবদুল জলিল প্রকাশ গুরা পুতুইক্কার স্ত্রী দুই অবুঝ সন্তানের জননী ছেনুয়ারা (২৬) এবং নিহতের বড় ভাই আবদুর রশিদের সঙ্গে। ছেনুয়ারা ক্ষোভের সুরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তার স্বামী কখন আটক হয়েছে, আটক হওয়ার পর তার সঙ্গে কী হয়েছে এবং তার নিরপরাধ স্বামী

কেন বন্দুকযুদ্ধে মারা গেল! কেঁদে কেঁদে সেসব তথ্য বলতে শুরু করেন। তিনি বলেন, তার স্বামী সিএনজি অটোরিকশাচালক। স্বল্প আয় নিয়ে তাদের সংসার চলত। এর মধ্যে সংসারের আয় বাড়াতে বিদেশ যাওয়ার প্রক্রিয়াটিও শেষ করেছিল। কিন্তু তার স্বামী বিদেশ যেতে পারেনি।

ছেনুয়ারা জানান, বিগত ২০১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর কক্সবাজার আদালতপাড়া থেকে সাদা পোশাকধারী কয়েকজন লোক তার স্বামীকে আটক করে কোথায় নিয়ে গেছে জানা নেই। সেই খবরটি পাওয়ার পর কক্সবাজার-টেকনাফের সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরের দরজায় কড়া নাড়তে থাকি। কিন্তু আমার স্বামীর সন্ধান কেউ দেয়নি।

এভাবে দুই মাস গত হয়ে যাওয়ার পর স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে ‘আমার স্বামী দুই মাস ধরে নিখোঁজ’ শিরোনামে পত্রিকায় সংবাদ প্রচার করি। তাতে কোনো লাভ হয়নি। এর পর টেকনাফ থানা থেকে মুক্ত হয়ে আসা এবং থানার হাজতে আটক আসামিদের সহযোগিতায় জানতে পারি স্বামী আবদুল জলিল টেকনাফ হাজতে আটক আছে।

তার পর বেশ কয়েকবার স্বামীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। দেখা করতে এলে থানার গেটে থাকা পুলিশ সদস্যরা তোমার স্বামী এখানে নেই বলে তাড়িয়ে দেয়।

নিহতের বড় ভাই আবদুর রশিদ জানান, দীর্ঘ পাঁচ মাস আগে তার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য থানায় যান। তবে তার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ওসি প্রদীপ নিজেই বলেছেন- তোমার ভাই বড় মাদক ব্যবসায়ী। তাকে যদি বাঁচাতে চাও ৩০ লাখ টাকা নিয়ে আসো। এত টাকা আমরা কোথায় পাব স্যার। আমরা গরিব মানুষ, আমার ভাই কোনো দিন মাদক ব্যবসায় জড়িত ছিল না। সে সিএনজি চালিয়ে সংসার চালায়। এভাবে দীর্ঘ ৮ মাস গত হওয়ার পর গত মাসের ৭ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আমার ভাই নিহত হয়েছে। লাশ কক্সবাজার মর্গে পড়ে আছে।

উল্লেখ্য, মাদকবিরোধী চলমান অভিযানে গত ৭ জুলাই (মঙ্গলবার) ভোরের দিকে টেকনাফ মডেল থানাপুলিশের একটি দল উপজেলার মাদক পাচারের ক্রাইম জোনখ্যাত হোয়াইক্যং খারাংখালী সীমান্তে পুলিশের সঙ্গে দুই যুবক নিহত হয়েছিল। তার মধ্যে একজন হচ্ছে- দীর্ঘ ৮ মাস আগে পুলিশের হাতে আটক হওয়া সিএনজি অটোরিকশাচালক আবদুল জলিল প্রকাশ গুরা পুতুইক্কা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877