শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
‘গলা কাটছে’ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো করোনার সব পরীক্ষা ফ্রি করা হোক

‘গলা কাটছে’ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো করোনার সব পরীক্ষা ফ্রি করা হোক

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছুঁই ছুঁই। মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। এই মুহূর্তে দৈনিক ২৫-৩০ হাজার টেস্ট করা দরকার; কিন্তু হচ্ছে মাত্র ১৫ হাজারের মতো। তা-ও হচ্ছে মাত্র দু’দিন ধরে। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৫৯টি ল্যাবে এখন কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানোর ফলে প্রতি ১০ লাখে গড়ে দুই হাজার ৮৭৬ জনের করোনা শনাক্তকরণের পরীক্ষা হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে পরীক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে কেবল যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান। আর সর্বোচ্চ সংক্রমণের ২০টি দেশের মধ্যেও আমাদের অবস্থান একই।
সরকারি প্রতিষ্ঠানে করোনা টেস্ট করানো হয় বিনামূল্যে; কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে টেস্ট করাতে সরকার ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে ৩৫০০ টাকা। আর প্রতিষ্ঠানের লোক রোগীর বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে আনলে অতিরিক্ত ১০০০ টাকা ফি নিতে পারবে। কিন্তু বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক নানা অজুহাতে মানুষের গলা কাটছে। দু’টি বড় বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমনই গলা কাটার অভিযোগ নিয়ে গণমাধ্যমে রিপোর্টও হয়েছে। তবে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়নি। প্রতিটি টেস্টের জন্য রোগীদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। করোনাভাইরাসে কেবল ধনীরা সংক্রমিত হচ্ছেন না, সব শ্রেণীর মানুষই আক্রান্ত হচ্ছেন। সবাই সরকারি প্রতিষ্ঠানে টেস্ট করানোর সুযোগ পাচ্ছেন না। কারণ সেখানে সবার টেস্ট করার মতো যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা নেই। অথচ এটা করা সরকারের দায়িত্ব এবং তা মৌলিক অধিকার। এই মহা সঙ্কটকালে মানুষের জীবন এখন সব দিক থেকেই বিপন্ন। লাখো মানুষ বেকার। অর্থের সংস্থান নেই কোটি কোটি মানুষের। এই দুঃসময়ে করোনা শনাক্তের টেস্ট করার জন্য পাঁচ হাজার টাকা ব্যয় করা কতটা কষ্টের, তা কেবল ভুক্তভোগীই জানেন। এ ব্যাপারে সরকার বিশেষ ফান্ড গঠন করে বা ভর্তুকি দিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে টেস্টের জন্য যে খরচ হয় তা পরিশোধ করতে পারে এবং রোগীদের বিনামূল্যে টেস্ট করানোর নির্দেশ দিতে পারে। বর্তমান দুঃসময়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোরও দায়িত্ব আছে মানুষের সেবায় এগিয়ে আসার। করোনাকালে যেমন বিভিন্ন শিল্পের জন্য সরকার প্রণোদনা দিয়েছে তেমনি একটি বিশেষ বরাদ্দ রেখে সব টেস্ট বিনামূল্যে করার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার জন্য সাড়ে চার হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার। তবে আদালত বলে দিয়েছেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে করোনা টেস্টের যে ব্যয় তা সরকারকেই দিতে হবে। আদালত বলেছেন, এই বিপদের দিনে কোনো ব্যক্তি যাতে অর্থের অভাবে বঞ্চিত না হন তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেকের বিনামূল্যে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে হবে। এটি গত এপ্রিলের ঘটনা। বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার এবং সব প্রতিষ্ঠানেই সবার জন্য বিনামূল্যে করোনা শনাক্তের টেস্ট করার সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানাই।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877