স্বদেশ ডেস্ক:
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের উত্তর বড়দল ইউনিয়নের কাশতাল গ্রামের পাশে লাল শাপলার বিকি বিল হাওর পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় এলাকা হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ এটি উদ্বোধন করেন। এরপর তিনি উপস্থিত সবার সম্মুখে পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য নতুন এলাকা হিসেবে সেখানে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন।
এসময় তাহিরপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মুনতাসির হাসান পলাশ, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আক্তার জাহান সাথী, আসিফ আল জিনাত, উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, সমাজ সেবক মাসুক মিয়া, বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমির উদ্দিনসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ,দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে আগত পর্যটকবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, তাহিরপুর উপজেলাধীন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ টাংগুয়ার হাওর, নয়নাভীরাম শহীদ সিরাজ লেক, বারেকের টিলা, যাদুকাটা নদী, শিমুল বাগান, প্রত্মতাত্তিক নিদর্শন হলহলিয়া জমিদার বাড়ির পাশাপাশি লাল শাপলার বিকি বিলটি পর্যটন সম্ভবনার নতুন মাত্রাযোগ করবে। এই বিকি বিলটি হলহলিয়ার চক ও দিঘলবাঁক মৌজার প্রায় ১৪.৯৫ একর জায়গা নিয়ে গঠিত। কোনো রকম চাষাবাদ ছাড়াই ১৫-১৬ বছর যাবত প্রাকৃতিকভাবে এই বিলে লাল শাপলা ফুলের বিপুল সমারোহ ঘটে। বছরের ছয় মাস এই বিলে পানি থাকে বিধায় ছয় মাসই লাল শাপলার এই অপরুপ দৃশ্য দর্শনার্থীগণ উপভোগ করতে পারেন। ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফুটে থাকা শাপলাগুলো সবুজের মধ্যে লাল চাদরে ঢেকে রাখে যা এখানে ঘুরতে আসা ভ্রমণ পিয়াসিদের ভ্রমণের আনন্দে নতুন মাত্রা তৈরি করেছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এটি পর্যটনে আকর্ষণে নতুন সম্ভাবনাসৃষ্টি করবে এবং জেলা প্রশাসন বিকিবিল এর উন্নয়নসহ এলাকার রাস্তাঘাট উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সমাজ সেবক মাসুক মিয়া বলেন, জেলার তাহিরপুর উপজেলাধীন উত্তর বড়দল ইউনিয়নস্থিত বিকিবিলটি বাদাঘাট-একাতা বাজার-টেকেরঘাট রাস্তার কাশতাল গ্রামের পাশে অবস্থিত। কাশতাল, বরোখাড়া ও আমবাড়ি গ্রাম বিকি বিলটিকে তিনদিক থেকে ঘিরে রেখেছে যার পাশেই মেঘালয়ের সীমান্ত অবস্থিত।
তাহিরপুর এমনিতেই দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পর্যটক প্রতিদিন টাগুয়ার হাওর, শহীদ সিরাজ লেক (নীলাদ্রি), শিমুল বাগান, বারিক টিলা ও জাদুকাটা নদীর সৌন্দর্য দেখতে আসেন। কিন্তু বিকিবিল জুড়ে লাল শাপলার এমন সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে তা অনেকের নজরেই আসেনি। কয়েক দিন ধরে সাংবাদিকদের ব্যাপক প্রচারণায় মানুষ দেখতে বিকিবিলটি দেখতে আসছেন। জেলা প্রশাসক মহোদয় এখানে আসায় আরো আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। পর্যটন এলাকা ঘোষণা করায় ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি জানান, আগস্ট থেকে নভেম্বর এই চার মাস মূলত লাল শাপলা থাকে। লাল শাপলার সৌন্দর্য দেখতে হলে সকালে আসতে হবে সবাইকে।