শনিবার, ০১ Jun ২০২৪, ০৭:০৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জিয়া ছাড়া কোনো সেক্টর কমান্ডার যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলেন না: মির্জা আব্বাস দুবাই নিয়ে তরুণীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করতেন তারা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের বিশেষ ট্রেনটি আবার চালুর ঘোষণা, চলবে যত দিন ‘অল আয়েস অন রাফা’ : বিশ্বজুড়ে যা প্রায় ৫০ মিলিয়ন লোক শেয়ার করছে মানুষের বেঁচে থাকার কোনো অবলম্বনই সরকার রাখেনি : রিজভী রোহিঙ্গাদের নিয়ে করা আশঙ্কার আলামত দেখা যাচ্ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে প্রচার চালানো হতো এমন ১৪৮ অ্যাকাউন্ট ও পেজ সরিয়েছে ফেসবুক পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরাইল ব্যতীত’ শব্দ মুছে ফেলা দুঃখজনক : মোমেন পৃথিবীর কোনো দেশেই গণতন্ত্র পারফেক্ট নয় : ওবায়দুল কাদের রাত ১২টায় বন্ধ হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার, বিমানবন্দরে আটকা হাজার হাজার কর্মী
‘তিনি একা নুহাশপল্লীতে গিয়ে হুমায়ূন আহমেদকে দেখে আসেন’

‘তিনি একা নুহাশপল্লীতে গিয়ে হুমায়ূন আহমেদকে দেখে আসেন’

স্বদেশ ডেস্ক:

ঢাকা ১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন অভিনেতা ফেরদৌস। এই এলাকার ভোটার জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। শাওন ও ফেরদৌস একসঙ্গে অনেক বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। যেগুলোর নির্মাতা হিসেবে ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ।

ভোটের আগের দিন তাই ফেরদৌসকে নিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন শাওন। কেন ফেরদৌসকে ভোট দিতে হবে সেটা বলেছেন। 

তিনি লেখেনে, জাহিদ হাসান, মাহফুজ আহমেদ, রিয়াজ আহমেদ, ফেরদৌস আহমেদ… এদের সবার সাথেই পর্দায় আমার ম্যালা কাজ করা হয়েছে। পর্দার বাইরেও বেশ খাতির (ভালো সম্পর্ক লিখলে ঠিক ভাবটা প্রকাশ হচ্ছিল না!) ছিল।

আর আউটডোর শ্যুটিংএ দীর্ঘদিন একসাথে থাকলে তো সহশিল্পীর অনেকটাই চেনা হয়ে যায়।  সেই চেনা, সেই জানা থেকেই বলছি, ফেরদৌস ভাই একজন ভালো মানুষ, সৎ মানুষ। তাকে নিয়ে আত্মজীবনীমূলক বই কাঠপেন্সিলে হুমায়ূন আহমেদএর একটি লেখা আছে। 

সেই কাঠপেন্সিলে হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন, ‘‘ফটোগ্রাফার সাব্বির চরিত্রে অভিনয় করতে এগিয়ে এলেন চিত্রজগতের আরেক নায়ক ফেরদৌস।

তার সঙ্গে আমি চন্দ্রকথা ছবিতে কাজ করেছি। চিত্রনায়কদের নায়ক সুলভ সমস্যা থেকে সে বহুলাংশে মুক্ত। বিয়ের পর তার স্বভাবে এবং আচরণে অন্য ধরণের স্থিরতা এসেছে। ‘আমার আছে জল’ ছবিতে ৭ দিনের নোটিশে তাকে যে রাজি করিয়েছে তার নাম হাসান। হাসান এই দায়িত্ব পালণ করে মহানন্দে ইউরোপ বেড়াতে চলে গেল।
আমি এবং শাওন খুবই আনন্দ পেলাম। আমরা সাব্বির নামের কঠিন একটি চরিত্রে একজন ডিপেন্ডেবল আর্টিস্ট পেলাম।
ফেরদৌসের অনেক শিডিউল (দেশে এবং পশ্চিমবঙ্গে) ওলটপালট করতে হলো। তার মধ্যে যতটুকু ফাঁক পাচ্ছিল সে সিলেট থেকে বিমানে চলে যাচ্ছিল, অন্য শিডিউলে কাজ করে আবার ফিরে আসছিল। 

ফেরদৌসের একটা ছোট গল্প বলার লোভ সামলাতে পারছি না। পাঠকরা জানেন কি না জানি না, ছবির সব নায়ক এবং নায়িকাদের আলাদা চেয়ার এবং বিশাল রঙিন ছাতা থাকে। নায়ক-নায়িকাদের সহকারীরা চেয়ার এবং ছাতা বহণ করে। আমি একদিন ভুল করে ফেরদৌসের চেয়ারে বসে পড়েছি। খুবই আরামদায়ক চেয়ার। ফেরদৌস ব্যাপারটা লক্ষ করল এবং সঙ্গে সঙ্গেই তার স্ত্রীকে টেলিফোন করল। ‘স্যার আমার চেয়ারটায় বসে খুব আরাম পেয়েছেন বলে আমার মনে হয়েছে। তুমি তো এখন লন্ডনে। তুমি অবশ্যই লন্ডনের যে দোকান থেকে আমার এই চেয়ারটা কিনেছ, অবিকল সেরকম একটা চেয়ার কিনে সিলেটে পাঠাবার ব্যবস্থা করবে।’

1
শাওন ও ফেরদৌস

আমি ফেরদৌসের টেলিফোনের বিষয়টা জানতাম না। একদিন বিস্মিত হয়ে দেখি, একই রকম ২ টা চেয়ার পাশাপাশি। ফেরদৌস বিনীত গলায় বলল, স্যার, এটা আপনার জন্য। গহীন জঙ্গলে পাওয়া এই উপহার কিছক্ষণের আমাকে অভিভূত করে রাখল। মনে হল সে আমার অভিনেতা না, আমারই ছেলে। বাবার বসার কষ্ট দেখে দূরদেশ থেকে একটা চেয়ার আনিয়েছে।’’

এ দিকে শাওন স্মৃতি কথা লেখা শেষে হুমায়ূন আহমেদের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার দিনগুলোতে ফেরদৌস কে নিয়ে লিখেছেন, হুমায়ূন এর অসুস্থতার কথা শোনার পর ফেরদৌস ভাই তার সাথে দেখা করতে দখিণ হাওয়া এসেছিলেন। হুমায়ূন তখন খাবার টেবিলে বসে লিখছেন। ফেরদৌস ভাইকে দেখে বললেন ‘কি… কিছু বলবা?’ ফেরদৌস ভাই মাথা নেড়ে বললেন  ‘জ্বী না স্যার।’

তারপর অনেকক্ষণ দু’জন-ই চুপচাপ।

একসময় ফেরদৌস ভাই হুমায়ূন আহমেদএর পা ছুঁয়ে সালাম করলেন, তারপর চলে গেলেন।
হুমায়ূন আহমেদ চলে যাবার পর ফেরদৌস ভাই প্রায়ই আমাকে ফোন করতেন। এমনি এমনি… কেমন আছি, কি খবর, কাজ কি করছি, নতুন কাজ কেন শুরু করছি না এসব বিষয়ে কথা বলতেন। আমার পুত্রদ্বয় আর উনার কন্যারা একই স্কুলে পড়ায় সেখানেও দেখা হতো।

একদিন নুহাশপল্লীতে দেখি পরিবারসমেত ফেরদৌস ভাই! ভাবী এবং তার কন্যাদের নিয়ে হুমায়ূনকে দেখতে এসেছেন! নুহাশপল্লীর সহকর্মীদের কাছে শুনলাম হঠাৎ হঠাৎ তিনি একা নুহাশপল্লীতে গিয়ে হুমায়ূন আহমেদকে দেখে আসেন। সমাধির পাশে চুপচাপ কিছুক্ষণ বসে থাকেন।
সিনেমার নায়ক মানেই সবকিছু মেকি হবে, সবকিছুতে অভিনয় থাকবে, ভান থাকবে এমন নয়। ফেরদৌস ভাই ভান করেন না। তাই তিনি যখন ভালো কোনো কিছু করবেন বলেন, আমি তা বিশ্বাস করি। তিনি যখন দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কাজ করবার প্রতিশ্রুতি দেন, আমি তা বিশ্বাস করি। তিনি যখন আমাদের প্রানের ধানমন্ডি (ঢাকা ১০) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সবার পাশে দাঁড়ান, আমি তাকে বিশ্বাস করি।’’

এদিকে আজ ধানমন্ডি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আজ দুপুরের আগে ভোট দেন অভিনেত্রী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন। ভোট দিয়ে এসে ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন ভোট দিয়ে আসলাম।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877