স্বদেশ ডেস্ক:
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন আগামী ৭ জানুয়ারি ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। একইসাথে গুপ্তহত্যা রোধে গোয়েন্দা বাহিনী সতর্ক রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি সব সময় নাশকতা করে আসছে। নাশকতা দিয়েই তাদের জন্ম, কাজেই তারা এগুলো করবেই। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সেই বিষয়ে সজাগ রয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা বাহিনীও কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যথাযথভাবে কাজ করছে বলেই এ সমস্ত কর্মকাণ্ডে তারা তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। আমি মনে করি, তারা যাই করুক এদেশের জনগণ তাদের প্রতিহত করবে। এদেশের জনগণ তাদের কোনোরকম আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবে না। জনগণ আর অন্ধকারে ফিরে যেতে চায় না।’
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আগাম সতর্কতা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত তেমন কিছু আসেনি। আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী যে সমস্ত তথ্য দিচ্ছেন, সেগুলো নিয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে তেমন কোনো খবর আসেনি।’
বিএনপি ‘গুপ্ত হত্যা চালাতে পারে’ ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ও আমাদের পার্টির সাধারণ সম্পাদকের কাছে অবশ্যই খবর আরো বেশি থাকে। কারণ তিনি রাজনীতি করেন। তার কাছে যথেষ্ট তথ্য থাকে। সে তথ্যের ভিত্তিতে তিনি বলেছেন। আমাদের কথা হলো, আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী সজাগ রয়েছে। এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে গেলে কিংবা ঘটনার আগেই আমরা ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন যাতে না হয়, নির্বাচনে যাতে কেউ অংশগ্রহণ না করে- সেই ধরনের প্রচারণা শুরু করেছে আমাদের বিএনপি নামক একটি রাজনৈতিক দল। তারা ভাঙচুর করছে, মানুষ হত্যা করছে, সম্পত্তি বিনষ্ট করছে, হরতাল-অবরোধ কত কিছুই করে যাচ্ছে, কিন্তু মানুষ কোনো কিছুতেই মনোযোগ দিচ্ছে না। মানুষ মনে করছে এগুলো অযৌক্তিক, সেজন্যই মানুষ এগুলোতে কর্ণপাত করছে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) সাথে নাম না জানা আরো দুই-একটি দল এ ধরনের লিফলেট ছড়াচ্ছে। সেগুলো খুবই সামান্য পরিসরে। মাঝে মাঝে দু-এক জায়গায় আমরা খবর পাচ্ছি। আমাদের পুলিশ, বিজিবি, গোয়েন্দা বাহিনী এগুলো ধৈর্য্য সহকারে দেখছে। এগুলো নিশ্চয় আমাদের নির্বাচন কমিশনও দেখছে। এগুলো যদি মাত্রা ছাড়িয়ে যায়, তবে নিশ্চয়ই নির্বাচন কমিশন থেকে একটা নির্দেশনা আসবে, তখনই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘এখন আমরা যা দেখছি দু-একজন করছে কিংবা ঘোষণা দিচ্ছে। এগুলো অবশ্যই রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। নির্বাচন কমিশন যে ঘোষণা দিয়েছে, সেটার বিপরীতমুখী কর্মকাণ্ড। এগুলো নির্বাচন বানচালের কর্মকাণ্ড। এগুলো অবশ্যই গর্হিত অপরাধ।’
এগুলো যদি সীমা অতিরিক্ত করে নিশ্চয়ই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা একটা-দুইটা লিফলেট দিচ্ছেন এবং সেখান থেকে সরে যাচ্ছে। এটা মানা করা হচ্ছে নিশ্চয়ই তারা বন্ধ করবেন। এখন পর্যন্ত তারা ব্যাপক হারে এটি করছে না। আমরা সজাগ আছি, যদি আরো বেশি হারে করে, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।’
ভোটের হার কেমন হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ভালো টার্ন আউট হবে। সারা পৃথিবীর দিকে যদি তাকান, এখন উন্নত দেশের টার্ন-আউটগুলো দেখবেন, সেগুলোর ফিগার কী রকম আসে। জাপান ও অন্যান্য দেশগুলো যদি দেখেন, সেখানে টার্ন আউট কেমন, এর থেকে ইনশাআল্লাহ অনেক অনেক বেশি হবে।’
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদন বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে একটা মানবাধিকার কমিশন রয়েছে, তারা কী বলে সেটা লক্ষ্য রাখবেন। বিদেশ থেকে কী বলল, কোথা থেকে কী বলল- তথ্যভিত্তিক কথা অনেক সময়ই আসে না। এর আগে ৭৮ জন গুম হয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর পাঠিয়েছিল। আমরা দেখেছি এরমধ্যে ২৫ জন বিএনপি রাজনীতি করছে কিংবা কারাগারে আছে, আত্মগোপন করেছে, বিদেশে পালিয়ে আছে। অনেকগুলোকে আমরাই খুঁজতেছি, এগুলো গুম নয়। এরা অনেক সময় তথ্যের বাইরে কিছু কথা বলে থাকে।’
সূত্র : ইউএনবি