শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ অপরাহ্ন

পাবনায় পেঁয়াজের রাজ্যেই এখন পেঁয়াজসংকট

পাবনায় পেঁয়াজের রাজ্যেই এখন পেঁয়াজসংকট

স্বদেশ ডেস্ক:

দেশে পেঁয়াজ উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে পাবনার সুজানগর উপজেলা। এই উপজেলার ৯৮টি গ্রামের অধিকাংশেই পেঁয়াজের আবাদ হয়। পাইকারি বিক্রেতারা এই এলাকা থেকে পেঁয়াজ কিনে ছড়িয়ে দেন ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এই উপজেলা ‘পেঁয়াজের রাজ্য’ নামে খ্যাত।

পেঁয়াজের রাজ্য হিসেবে খ্যাত এই উপজেলায় এবার পেঁয়াজসংকট দেখা দিয়েছে। এখানকার পাইকারি বাজারে হঠাৎ করে সরবরাহে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাই মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়।

স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিপাতের কারণে পেঁয়াজে পচন ধরায় বর্তমান পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। তবে ভোক্তাদের দাবি, মজুতদারেরা বেশি দামের আশায় এখনো পেঁয়াজ ধরে রেখেছেন। ফলে বাজারে কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই এলাকার বড় চাষিরা সাধারণত ৫০ থেকে ৬০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেন। গত মৌসুমে উপজেলায় মোট পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ টন পেঁয়াজ ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় নিয়ে বিক্রি করা হয়। পাইকারি ক্রেতারা পুরো বছরই হাট থেকে পেঁয়াজ কিনে বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যান। প্রতিবছর মৌসুমের এ সময়ে বাজারে প্রচুর পেঁয়াজ বিক্রির জন্য ওঠে। কিন্তু চলতি বছর তার ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে।

জানতে চাইলে উপজেলার পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বাদশা বিশ্বাস বলেন, সপ্তাহের প্রতি রবি ও বুধবার উপজেলা পৌর বাজারে পেঁয়াজের বড় হাট বসে। প্রতিবছর এ সময়ে হাটে দুই থেকে আড়াই হাজার মণ পেঁয়াজ বিক্রির জন্য আনা হয়। কিন্তু এবার সেখানে বিক্রির জন্য পেঁয়াজ উঠেছে ৭০০ থেকে ৮০০ মণ। এসব পেঁয়াজে জেলার চাহিদা মেটানো কঠিন।

উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের চাষি কামরুজ্জামান বলেন, গত মৌসুমে তাঁর চাষের জমি থেকে প্রায় ১ হাজার মণ পেঁয়াজ পেয়েছিলেন। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টিপাতের কারণে অধিকাংশ পেঁয়াজে পচন ধরে। তাই ঘরে মজুত না রেখে অধিকাংশ পেঁয়াজ তিনি বিক্রি করে দেন। এখন দাম বেশি হওয়ার পরও বিক্রির মতো পেঁয়াজ তাঁর হাতে নেই।

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ময়নুল হক সরকার বলেন, এ বছর জমি থেকে চাষের পেঁয়াজ তোলার সময় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছিল। তাতে ঘরে তোলার পরই পেঁয়াজে পচন ধরে। এ কারণে কৃষকেরা পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারেননি। ফলে বর্তমানে হাটবাজারে পেঁয়াজের সংকট দেখা দিয়েছে।

মজুত এবং কৃত্রিম সংকট তৈরির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিৎ দেবনাথ বলেন, ‘আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি, কেউ মজুত করে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে কি না। যদি কারও বিরুদ্ধে মজুতের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877