বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ০৪:০৭ অপরাহ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের দায়িত্ব পাচ্ছে জাপান

শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের দায়িত্ব পাচ্ছে জাপান

স্বদেশ ডেস্ক:

রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের (তৃতীয় টার্মিনাল) গ্রাউন্ড হ্যান্ডিংয়ের কাজ জাপান করবে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান। আজ শনিবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আয়োজিত এক ডায়লগে এ কথা জানান তিনি।

ডায়লগের আয়োজন করে অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (এটিজেএফবি)। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সভাপতি তানজিম আনোয়ার। স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক সবুজ।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে জাপান। তাদেরই এ কাজ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাদের কাজ দেওয়ার জন্য কি ধরনের টার্মস দেওয়া হবে সেটি নির্ধারণে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে করা হবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োহাজার কেনা প্রসঙ্গে মফিদুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানের বহর বৃদ্ধি করার নির্দেশনা দিয়েছেন ও কার্গো সক্ষমতা বাড়াতে বলেছেন। এ কারণেই এয়ারক্রাফট কেনা হবে। তবে এয়ারবাস কেনা হবে, বোয়িং কেনা হবে না- সেটা নয়। যে আমাদের ভালো অফার দেবে তাকেই বেছে নেবে বিমান। আমাদের সঙ্গে বোয়িংয়ের আগ থেকেই সম্পর্ক আছে, এয়ারবাসের ইস্যুও এসেছে। এয়ারবাস বোয়িং থেকে ভালো অফার দিলে আমরা ওদিকেই যাব।’

বিমানের নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম অক্টোবরের মধ্যে নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালু করতে। তবে ফ্লাইটের অনুমতির ক্ষেত্রে এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানকে আবেদন করতে হয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সময়মত আবেদন না করায় প্রক্রিয়াটা পিছিয়ে গেছে। আমরা বিমানকে লিখিতভাবে জানিয়েছি এ বিষয়টি। তারা বিলম্বে আবেদন করেছে। কোভিডের কারণেও কিছুটা পিছিয়েছে এ প্রক্রিয়া। তবে আমি এ বছরেই নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আশাবাদী।’

হেলিকপ্টারের অপারেটরদের হ্যাংগারের ভাড়া নির্ধারণের বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান বলেন, ‘হেলিকপ্টার খাত দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। আমরা তাদের স্বল্প ভাড়া নির্ধারণ করেছি। যেহেতু এটা সরকারি জায়গা, পৃথিবীর কোনো দেশেই এগুলো ফ্রিতে দেয় না, তাই আমরাও ভাড়া নির্ধারণ করেছি। তবে তাদের ভাড়া অনেক কম ধরা হয়েছে। আমরা প্রস্তাব করেছি, অর্থ মন্ত্রণালয় এই ভাড়া চূড়ান্ত করবে। তবে আমরা তাদের প্রতি সর্বোচ্চ সহানুভূতিশীল হয়ে ভাড়া নির্ধারণ করেছি।’

বিমানবন্দরের কর্মীদের আচরণ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আচরণের বিষয়ে বিমানবন্দরে কর্মরতদের এ পর্যন্ত ১৯টি ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক নিজে দরবার করে তাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। যারা খারাপ ব্যবহার করছে তাদের সরিয়ে দিচ্ছি, পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে আর্থিক জরিমানাও করা হচ্ছে।’

বিমানবন্দরে নানা কারণে আনসার সদস্যরা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করেন- সাংবাদিকদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি বলেন, ‘টাকা চাওয়ার বিষয়টি অসত্য না। আমরা দেখছি এসব ঘটনা, প্রমাণ পেয়ে আমর চাকরিচ্যুত করেছি। যেহেতু আমাদের জনবল নেই, তাই অন্য সংস্থা থেকে জনবল এনেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হচ্ছে। তারপরও আমরা তাদের কাউন্সিলিং করার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে আনসারের মহাপরিচালকের সঙ্গেও কথা বলেছি আমি।’

বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনাকে আরও নমনীয় করতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু, মুক্তিযুদ্ধ, বৃদ্ধ ও শিশুদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেবা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে বলে জানান বেবিচক চেয়ারম্যান।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক হাব করা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা ম্যাস্টারপ্ল্যান করে কাজে নেমে গিয়েছিলাম। জায়গা অধিগ্রহণের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এজন্য ৫ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সরকার প্রায়োরিটিতে রাখতে পারেনি।’

বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর নির্মাণ প্রসঙ্গে মফিদুর রহমান বলেন, ‘একটি ফিজিবল স্ট্যাডি করা হয়েছিল, জায়গা নির্বাচন করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে এই প্রকল্প সাস্পেনশনে আছে। বর্তমান বিমানবন্দরগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর চলমান অনেকগুলো প্রকল্প আছে। পরবর্তী যদি প্রয়োজন হলে এই প্রকল্প নিয়ে কাজ হবে।’

এ সময় বস্তুনিষ্ঠ তথ্য উপস্থাপনের জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান বেবিচক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালে আইকাও আমাদের ফুল স্কেলে অডিট করবে। ভুল তথ্যের সংবাদ হলে এই অডিটে আমাদের জন্য নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেবিচকের সদস্য (পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী, সদস্য (এটিএম) শাহ কাউসার আহমেদ চৌধুরী, সদস্য (প্রশাসন) মো. মাহবুব আলম তালুকদার, সদস্য (নিরাপত্তা) গ্রুপ ক্যাপ্টেন আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী, প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক প্রমুখ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877