শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ অপরাহ্ন

উত্তাল মণিপুরে নিহত বেড়ে ৬০, পালাচ্ছে মানুষ

উত্তাল মণিপুরে নিহত বেড়ে ৬০, পালাচ্ছে মানুষ

স্বদেশ ডেস্ক:

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে চলমান সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে কয়েক শত মানুষ। এ ছাড়া ঘরছাড়া হয়েছেন অন্তত ২৩ হাজার বাসিন্দা। দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০০ জনের বেশি লোক আহত হয়েছে এবং সংঘাতে ঘরছাড়া হয়েছে হাজার হাজার জন।

একই দিনে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক নিউজ চ্যানেলে বলেন, মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তিনি লোকদের শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান।

তবে বিবিসির অনলাইন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যটি থেকে দেশের অন্য রাজ্যের বাসিন্দাদের জরুরি ভিত্তিতে সরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশেষ বিমানে তাদের নিরাপদে নিজ নিজ রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

খবরে বলা হয়েছে, মণিপুর থেকে অন্তত ৬০০ মানুষ পার্শ্ববর্তী মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছেন। এদের প্রায় সবাই কুকি-চিন-মিজো জনগোষ্ঠীর মানুষ।

মণিপুর থেকে যেসব রাজ্য তাদের শিক্ষার্থীদের বা লোকদের সরিয়ে নিচ্ছে সেগুলো হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, সিকিম, অন্ধ্র, তেলেঙ্গানা, দিল্লি বা মহারাষ্ট্র।

গত সপ্তাহে মণিপুরের মেইতেই ও কুকি উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তবে সংঘাত থামলেও বর্তমানে রাজ্যটিতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

এর আগে স্থানীয় টেলিভিশনে প্রচার করা ভিডিওতে দেখা গেছে, সংঘাতে অনেক গাড়ি এবং ভবন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় সেনাবাহিনী নেমেছে এবং পাঁচদিনের জন্য মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ।

স্থানীয়রা বলছেন, তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায়। রাজ্যের রাজধানী ইম্ফালের বাসিন্দা এল সানগ্লুম বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, আমরা এখন আর আমাদের নিরাপদ মনে করছি না। কুকির সম্প্রদায়ের এ ব্যক্তি ইম্ফালের বিমানবন্দরের বাইরে তার পরিবারের ১১ সদস্যের সঙ্গে অবস্থান করছেন।

রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের পরিস্থিতি এখনও বেশ থমথমে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এন বিরেন সিং জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে এক হাজারের বেশি বন্দুক লুট হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ২০০ টি উদ্ধার হয়েছে। তিনি বলেন, অস্ত্রগুলো ফেরত দেওয়া হলে রাজ্য অভিযান শুরু করবে।

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, মণিপুরে মেইতেইরা মোট জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশেরও বেশি। সেখানে নাগা ও কুকিরা ৪০ শতাংশ। এতদিন মেইতেইদের আদিবাসী বলে মানা হতো না।

 

কিন্তু এবার হাইকোর্ট তাদের সেই তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দেয়। মেইতেইরা এতদিন ধরে ‘নোটিফায়েড’ পাহাড়ি এলাকায় জমি কিনতে পারতো না। কিন্তু এবার তারা পারবে। এ সিদ্ধান্তে অন্য আদিবাসীরা ক্ষুব্ধ হন। হাইকোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে নাগা ও কুকিরা গত সপ্তাহে প্রতিবাদ জানান, যা সহিংসতায় রূপ নেয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877