রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন

যে সিনেমা বলে জীবনের কথা

যে সিনেমা বলে জীবনের কথা

স্বদেশ ডেস্ক:

সিনেমাকে বলা হয় ‘লার্জার দ্যান লাইফ’। সিনেমার সবচেয়ে বড় সার্থকতা হলো মানুষের জীবনে, কাজকর্মে এতটাই প্রভাব ফেলে যে, সিনেমা আর সিনেমা থাকে না; হয়ে ওঠে একেকটা অনুপ্রেরণার নাম। তাই সিনেমা হাসুক-হাসাক, কাঁদুক-কাঁদাক, সঙ্গী হয়ে থাকুক সব সময়। আমাদের আজকের আয়োজন এমনই কিছু সিনেমা নিয়ে, যেগুলো জীবনের কথা বলেছে আর দিয়েছে অনুপ্রেরণা…

নাইনট্রি থ্রি ডেজ

‘আমরা বেশিরভাগ মানুষ জীবনযাপন করি সত্যিকারভাবে না ভেবেই, না দেখেই, না বুঝেই যে; আমরা কতটা জটিল, একে অপরের সঙ্গে কতটা যুক্ত, কতটা ভঙ্গুর…। একদিন কিছু একটা ঘটল, এমন একটা কিছু; যা আপনাকে বিশ্বের দিকে তাকানোর ভঙ্গি বদলে দিল, বিশ্বকে দেখার ভঙ্গি বদলে দিল। আপনার জীবনের আমূল বদলে দিল।’ কথাগুলো হলিউড সিনেমা ‘নাইনটি থ্রি ডেজ’-এর একটি চরিত্রের। মহামারী করোনায় আক্রান্ত বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের মানুষের উপলব্ধির সঙ্গে এই কথাগুলোর কতই না মিল! ছবিতে সেই ভয়, হতাশা ও লড়াই করার কথাই আছে।

ইতি, তোমারই ঢাকা

দেশের তরুণ নির্মাতাদের এই সিনেমা ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের ১১টি গল্পের। ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবিটিতে ১১ নির্মাতার ১১টি ছবি রয়েছে। একেকটি সিনেমার দৈর্ঘ্য ১০ থেকে ১২ মিনিট। কোনোটায় রয়েছে ব্যাকগ্রাউন্ড আর্টিস্ট খায়রুলের কথা, যাকে বাস্তব জীবনে একবার নামতে হয়েছিল অন্যের ভূমিকায়। এক ধনী লোকের গাড়ির ড্রাইভারের কথা রয়েছে, যিনি বসের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত জীবন দেখে নিজেও কীভাবে গরমে অতীষ্ঠ হয়ে ওঠেন, কীভাবে বসের স্মার্ট স্ত্রীকে দেখে নিজের গ্রাম্য বধূকে ‘পানসে’ ভাবতে শুরু করেন। রয়েছে পুরনো গাড়ি বিক্রির ব্যবসা করা এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কথা, যিনি অন্যের গাড়ি বিক্রি করতে গিয়ে কীভাবে চোর সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েন। আছে নিম্নমধ্যবিত্ত যূথীর কথা, নিজের সংসার পাতার স্বপ্ন যার কাছে কঠিন হয়ে পড়ে স্বামীর ছোট চাকরির কারণে, স্বামীর জৈবিক চাহিদা মেটাতে যাকে যেতে হয় সস্তার হোটেলে।

বেলাশেষে

কলকাতার এই সিনেমাটি খুব সম্ভবত আপামর বাঙালির মনেই নতুন একটা বোধের জন্ম দেয়। আমাদের ঠিক আগের যে প্রজন্ম, আমাদের বাপ-দাদাদের যে প্রজন্ম, তাদের জীবন এখন কেমন কাটে? তারা কি ভালো আছেন? কিংবা অর্ধশতাব্দী একসঙ্গে, এক ছাদের নিচে কাটানোর পর কোনো দম্পতির নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া কেমন থাকে? ভালোবাসাটা একইরকম থাকে কি? ‘বেলাশেষে’র গল্পই এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এ ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন প্রয়াত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং আরতি বন্দ্যোপাধ্যায়।

তারে জামিন পার

ইশান আওয়াস্থি। ছোট্ট একটা বাচ্চা। ডিসলেক্সিয়ার শিকার। পড়াশোনায় মাথা নেই। অঙ্ক ভুল হয়। সঠিক বানানের বালাই নেই। অক্ষর লেখে কিম্ভূতরকম উল্টো করে। অথচ তার বড় ভাই সোনার টুকরো ছেলে যেমন পড়ায়, তেমনি খেলাধুলা আর সবকিছুতে। তাই বাবা ইশানের ওপর খুবই অসন্তুষ্ট। অতএব অপারগতার শাস্তিস্বরূপ ইশানকে যেতে হয় এক কঠোর নিয়মের বোর্ডিং স্কুলে। সেখানেই তার সঙ্গে দেখা হয় রাম শংকর নিকুম্ভের, যিনি স্কুলটির নতুন আঁকার শিক্ষক। এর পর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে ইশানের জীবন। ছবিতে ঈশানের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন দারশিল সাফারি এবং শিক্ষকের ভূমিকায় আছেন আমির খান।

আসা যাওয়ার মাঝে

গল্পটা দুই স্বামী-স্ত্রীর। স্বামী প্রিন্টিং প্রেসে কাজ করেন আর স্ত্রী হ্যান্ডব্যাগ তৈরির কারখানায়। একজন ডে শিফটে, অন্যজন নাইট শিফটে। একজন সকালবেলা ফেরেন, অন্যজন রাতে। এই আসা-যাওয়ার মাঝে তাদের দেখা হয় সকালবেলায়, অল্প কিছুক্ষণের জন্য, সব দিন হয়তো তাও হয় না। যেসব মানুষ একটি সম্পর্কে আছেন এবং অপর পাশের মানুষকে খুব একটা সময় দিতে পারেন না বলে দুঃখিত, লজ্জিত এবং চিন্তিত কিংবা যেসব মানুষের প্রিয় মানুষটার প্রতি অভিযোগ সময় দিতে না পারার কারণে, তাদের জন্য অবশ্যই একটি অনুপ্রেরণাদায়ী সিনেমা এটি। ‘আসা যাওয়ার মাঝে’ ছবিতে প্রধান দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী এবং বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877