রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন

কিডনিতে ক্যানসারের দ্রুত চিকিৎসা নিন

কিডনিতে ক্যানসারের দ্রুত চিকিৎসা নিন

স্বদেশ ডেস্ক:

কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের বড় কর্মকর্তা শামস রুমি। সব সময় হাসিখুশি, আনন্দে থাকেন। শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে তার আত্মবিশ্বাস ব্যাপক। অফিসের বার্ষিক হেলথ চেকআপে হঠাৎ করেই ধরা পড়ল কিডনির ক্যানসার। একটি কিডনি বাদ দিয়ে আপাতত স্বাভাবিক আছেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, আর কিছু দিন পরে ধরা পড়লে একটা বড়সড় অঘটন ঘটে যেতে পারত! মূলত কিডনি ক্যানসার বলতে বোঝায়, কিডনি কোষের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া। প্রাপ্তবয়স্করা সাধারণত রেনাল টিউবিউলে সৃষ্ট রেনাল সেল কার্সিনোমা নামক এক ধরনের কিডনির ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। সার্জারির মাধ্যমে এ রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। রেডিয়েশন থেরাপি ও কেমোথেরাপির মাধ্যমে রেনাল সেল কার্সিনোমার চিকিৎসা সম্ভব নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে ইমিউনো থেরাপি কাজ করতে পারে। বংশে কিডনির ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তির উপস্থিতি, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন ও ডায়ালিসিসযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ কিডনির ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। শিশুরা সাধারণত উইলমা টিউমার নামক এক ধরনের কিডনির ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। রেনাল সেল কার্সিনোমার কারণ স্পষ্ট নয়। তবে কিছু কিডনির কোষের ডিএনএ -তে রূপান্তর (মিউটেশন) ঘটলে কিডনির ক্যানসার হয়ে থাকে। এ মিউটেশন কোষগুলো দ্রুত বৃদ্ধি ও বিভক্ত হওয়ার জন্য সংকেত প্রদান করে। এ অস্বাভাবিক কোষগুলো টিউমারের সৃষ্টি করে, যা কিডনির বাইরেও প্রসারিত হতে পারে। এটির মধ্যে কিছু কোষ বিস্তৃত হয় এবং শরীরের দূরবর্তী অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ রোগে আক্রান্তের মধ্যে কিডনি ফুলে যাওয়া, প্রস্রাব আটকে যাওয়া, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, প্রস্টেটের বিভিন্ন সমস্যা, রাতে অতিরিক্ত প্রস্রাব আসা, বারবার প্রস্রাব আসা, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, গলা দিয়ে তরল পদার্থ নির্গত হওয়া, কুঁচকি ফুলে যাওয়া, মল দেখতে অস্বাভাবিক লাগা, বিছানায় প্রস্রাব করা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।

এ রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ওষুধের পাশাপাশি রোগ নির্ণয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়। প্রয়োজনে অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে। কিডনির ক্যানসারের ক্ষেত্রে বেশ ঝুঁঁকির ব্যাপার রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো হলো বয়স বাড়লে কিডনি ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। অধূমপায়ীর তুলনায় ধূমপায়ীর কিডনি ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। শরীরের ওজন অতিরিক্ত হলে কিডনির ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বেশ বেড়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়া কিডনি ফেইলিউরের চিকিৎসার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে ডায়ালিসিস করা হলেও কিডনির ক্যানসার হতে পারে। বংশগতভাবে পরিবারের কারও ক্যানসারের ইতিহাস থেকে অন্যদের ক্ষেত্রে কিডনির ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই ক্যানসার হওয়ার মতো লক্ষণ থাকলে শুরুতেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন এবং উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ ও ভালো থাকুন।

লেখক : ব্রেস্ট, খাদ্যনালি ও কলোরেক্টাল ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সার্জন

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877