জয়নুল আবেদীন:
গত ২৬ নভেম্বর সকাল ৬টার ১৫ মিনিট বাকি। শরীরটা দুলে উঠল। সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে দেখি, বন্ধ পাখা দু’টিও দুলছে। ভূমিকম্প। অনেকের কাছে সময়টা সুখনিদ্রার। মনে মনে ভাবছি, কম্পনটা বেড়ে গেলেই থেমে যেত রমরমা বিশ্বের আনন্দ কোলাহল। কখনো কখনো মনে হয়, পৃথিবী নামক গ্রহটা কচুপাতার ওপর টলটলায়মান এক ফোঁটা পানি, যা কোভিড-১৯-এর মতো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণুজীবের ঝাঁকুনিতেই পড়তে বসেছিল। দুই দিন যেতে না যেতেই সব কিছু আগের অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। বিষয়টি সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করতেই অনেকে আল্লাহর সহায়তা চেয়েছেন, আবার কেউ কেউ তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে জাপানের উদাহরণ দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছেন।
অণুজীব ও ভূমিকম্প দু’টিই প্রাকৃতিক মুসিবত। অণুজীবের চেয়ে ভূমিকম্প অনেক শক্তিশালী। ২৬ নভেম্বরের কম্পনের উৎপত্তিস্থল ছিল চট্টগ্রাম থেকে ১৭৫ কিলোমিটার পূর্বে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪২ কিলোমিটার গভীরে মিয়ানমারের হাখা শহরের কাছে। বাংলাদেশে এর পরিমাণ ছিল ৫.৮ মাত্রা। যারা ৫.৮ মাত্রা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন, তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই নেপালের কথা। নেপালে ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে ১৫ কিলোমিটার গভীরে ৭.৮ বা ৮.১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। নিহতের সংখ্যা আট হাজার ৯৬৪, আহত ২১ হাজার ৯৫২ এবং গৃহহারার সংখ্যা ৩.৫ মিলিয়ন। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে ২০১৫ সালের পরে নেপালের ভয়াবহ চিত্র বিশে^র সবাই দেখেছে- আগের নেপাল দেখেছি আমি নিজে।
২০০৫ সালের নভেম্বর নেপাল ছিলাম। আমার দেখা ২০০৫ সালের নেপাল আর ২০১৫ সালের পরের নেপাল এক নয়। লন্ডন, আরব, ভারত, মালয়েশিয়াসহ যত দেশে গেছি তত দেশের মধ্যে গরিব হলো নেপাল। তার পরও সব দেশের চেয়ে আমার কাছে সুখী মনে হয়েছিল নেপালকেই। বিশে^ একমাত্র হিন্দু রাজ্য নেপাল। হিন্দু ধর্মে বারো মাসে তের পার্বণ ছাড়াও চাঁদের পূর্ণ তিথি, অর্ধ তিথি ও অমাবস্যা, মহাপুরুষদের জন্ম-মৃত্যু সব মিলিয়ে তিথিমুক্ত সাধারণ দিন খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর। তাদের পাহাড় দেয় পরিশ্রম আর উৎসব দেয় স্বস্তি- তাদের এক হাতে কর্ম এবং অপর হাতে স্ফূর্তি, ফুরসত নেই মোটেও। এ কারণেই বলা হয়, Nepal is the only Hindu Kingdom in the World, that has many festivals. So Nepal is called ‘Home of Gods and Land of Festivals’.
ধর্মবিশ্বাস থেকেই নেপালে সব উৎসবের উৎপত্তি। তাদের মতে জ্ঞানার্জন, লেখাপড়া, শীত, গ্রীষ্ম, শক্তি, বৃষ্টি, মাটির উর্বরতা, রোগবালাই ও বিপদাপদ সব কিছুর জন্য পৃথক পৃথক দেব-দেবী রয়েছে। তারা তুষ্ট হলে মানুষের কল্যাণ আসে আর বিরূপ হলে বিপত্তি সৃষ্টি হয়। তাই ভিন্ন ভিন্ন দেব-দেবীকে ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে খুশি করার জন্য একটির পর একটি আনন্দ উৎসব লেগেই থাকে। ধর্মীয় উৎসবের সাথে যোগ হয়েছে বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায় ইত্যাদি উৎসবও।
২০০৫ সালের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে আমরা যখন নেপালে- তখন নেপালিরা দিওয়ালি জোয়ারে ভাসছিল। দিওয়ালির সজ্জার প্রধান উপকরণ রঙ। নারী-পুরুষ, ছেলে-মেয়ে, শিশু-কিশোর ও যুবক-যুবতীদের গলায়, বগলে, মাথায়, কোমরে এমনকি হাতের লাঠিতেও পেঁচানো দেখেছি গাঁদা ফুলের মালা। এর উজ্জ্বলতার জন্য নাকি দেব-দেবীর নির্দেশে এত বেশি বেশি করে গাঁদা ফুলের ব্যবহার, তা জানার আগ্রহ হয়। জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম দিওয়ালি উৎসব চলছে। শুধু গাঁদা ফুল নয়- ফুলের সাথে মিলিয়ে গায়ে মেখেছে রঙ এবং পরেছে রঙিন কাপড়। হলুদ ও লাল কাপড়ে ছেয়ে গেছে দেশটা। রঙিন বস্ত্রবিহীন মহিলা খুঁজে বের করা দুষ্কর। সর্বাঙ্গে গাঁদা ফুলের মালা পেঁচিয়ে রঙিন বস্ত্র পরে শুধু হাঁটাহাঁটিই করে না, নাচানাচিও করে। রঙিন বেশে দলবেঁধে ফুলের ডালা হাতে বাড়ি বাড়ি যায়, দোকান ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সামনে গিয়ে ঢোল-তবলা-খঞ্জনির তালে তালে নাচতে থাকে। এক বছরের শিশু থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধা সবাই নাচে, যে যেভাবে পারে সে সেভাবেই নাচে। কারো কণ্ঠে থাকে গানের ছন্দ আর মুখে থাকে হাসির ঝিলিক। সব মিলিয়ে এক অপরূপ দৃশ্য।
আমাদের বাস কাঠমান্ডু ভ্যালির উঁচু পাহাড়টা ছাড়তেই সামনে আসে একঝাঁক শিশু-কিশোর ও যুবক-যুবতী। ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে দিতে বাধ্য হয়। গাড়ির সামনে খেমটা নাচ শুরু করে। কিশোরী ও যুবতী টাইটফিট মোটা জিন্সের পেন্ট, ভারী সুতি গেঞ্জি পরে হাতের কনুই ওপরের দিকে বাঁকা করে নাচে। বাস থামিয়ে যখন নাচে তখন যাত্রীরা নিজদের সামাল দিতে পারে না। সাথে সাথে হাততালি দিতে শুরু করে। সেসব দৃশ্য রক্তমাংসের চোখে দেখা না হলে জড়বস্তুর তৈরি কলম কালি দিয়ে লেখালেখি করে বিশ্বাস করানো যাবে না। ড্রাইভার সহাস্যে পকেট থেকে ১০ টাকার একটা নোট খেমটাদের একজনের হাতে দিতেই হুড়মুড় করে এক পাশে সরে যায়। শুধু গাড়ির সামনে নয়, বাড়ি প্রতিষ্ঠানেও একই চিত্র। কিছু দূর যাওয়ার পর আরেক দল, আবার থামিয়ে দেয় গাড়ি। একইভাবে নাচানাচি দেখে ১০ টাকা গুনে গুনে ড্রাইভার মুক্তিলাভ করে। একসময় ড্রাইভারের ভাংতি টাকা ফুরিয়ে যায়। আমার কাছ থেকে ৫০ টাকা ভাংতি নিয়ে আবার দিতে শুরু করে।
পোখারা বাজারে ফল কিনতে গিয়ে এক দোকানের সামনে যুবক-যুবতীদের নাচতে দেখে থমকে যাই। অপলক তাকিয়ে রই মায়া মায়া মুখের অবিন্যস্ত নাচের দিকে। ডিশ এন্টির কল্যাণে- বিশ্বের কোনো নাচ দেখা বাকি নেই। লাখো কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিত নাচও দেখেছি, মনে রাখতে পারিনি। এক দিকে দেখি, আরেক দিকে ভুলে যাই। পাহাড়ের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মেদহীন নেপালি মেয়েদের অবিন্যস্ত নাচ মন ও চোখ থেকে কখনো হারিয়ে যাবে না। এরপর ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। দেশাইন উৎসব শুরু হয় অক্টোবর মাসের চাঁদ দেখা থেকে, চলে পূর্ণিমা পর্যন্ত। এটিই নেপালের বৃহত্তম উৎসব। ওদের শক্তিশালী দেবীদুর্গার উদ্দেশে দেশাইন পূজা করা হয়ে থাকে। সর্ব প্রকার অমঙ্গলনাশিনী দুর্গা তুষ্ট হলে অমঙ্গল নাশ হয়ে যায়। এ ফেস্টিভ্যালে পরিবার ও আত্মীয়স্বজন একত্রিত হয়। চাঁদের অষ্টম ও নবম দিনে দুর্গার উদ্দেশে অনেকে জীবজন্তু উৎসর্গ করে। এর রক্ত যানবাহন ও যন্ত্রপাতিতে মাখা হয়, যাতে সারা বছর ঠিকমতো চলে। হিন্দু লুনার ক্যালেন্ডারের পঞ্চম মাসের চাঁদের প্রথম দিনে Fathers Festival পালন করা হয়ে থাকে। ওই দিন ছেলেমেয়েরা তাদের মৃত বাবাকে স্মরণ করে। গুর্খা এলাকায় ভগবতী নদীর পাড়ে মিলিত হয়ে মৃত বাবার আত্মার মুক্তি কামনাসহ মিষ্টি বিতরণ করে।
শুধু মহিলাদের জন্যও পৃথক একটি উৎসব আছে। নাম ‘তেজ’ (Tej)। তিন দিনের এ উৎসব চলাকালে সব বিবাহিতা মহিলা হলুদ ও লাল কাপড় পরিধান করে। তারা শিব মন্দিরে গিয়ে স্বামীদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে। শেষ দিন- বিগত জীবনে সংঘটিত ত্রুটি-বিচ্যুতির ক্ষমা চেয়ে পবিত্র জীবনের উদ্দেশ্যে নদীতে স্নান করে ওঠে। মধ্য সেপ্টেম্বরে পালন করা হয় ইন্দ্রযাত্রা। আকাশের দেবতা ইন্দ্র। ইন্দ্র খুশি থাকলে ঠিকমতো মেঘ বৃষ্টিসহ সবুজ হয়ে উঠবে ফসলের মাঠ। সপ্তাহব্যাপী চলে এ উৎসব। আগস্টের পূর্ণিমা তিথিতে জন্ম শ্রীকৃষ্ণের। এ উৎসব উপলক্ষে রঙিন ছবি ও চিত্রকর্মে পথঘাট ছেয়ে যায়। তখন কৃষ্ণমন্দিরে সমবেত হয় পূজারী ও কৃষ্ণভক্তরা। ভক্তরা একটা গাভী সুন্দর করে সাজিয়ে এর শিংয়ে রঙিন কাপড় জড়িয়ে মহাসমারোহে শহর প্রদক্ষিণ করে। এ পূজার নাম ‘গাইযাত্রা’। বুদ্ধের জন্মমাসে যে উৎসব হয় সে উৎসবের নাম গানলা (Gunla)। নেপালে মগা ক্যালেন্ডারের দশম মাসে এ উৎসব। সব মাসই কাটে উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে। ওই সময় তারা শম্ভুনাথ আশ্রমে শামিল। আগস্ট পূর্ণিমায় অপর একটি উৎসবের নাম জেনাই পূর্ণিমা। সেদিন খুব সকালে নদীতে স্নœান করে কুম্ভেশ্বর মন্দিরে প্রার্থনা করা হয়। সে মাসের পূর্ণিমায় পালন করা হয় বুদ্ধযাত্রা। বৌদ্ধ ইতিহাসে ওই পূর্ণিমায় বৌদ্ধের জন্ম হয়েছিল এবং মৃত্যুও হয়েছিল একই পূর্ণিমায়। বুদ্ধ পূর্ণিমা হিসেবে দিনটি বিশ্বখ্যাত। উর্বরতা ও বৃষ্টির দেবতা মৎস্যেন্দ্রনাথ। সাদা ও লাল রঙের দু’টি মৎস্যেন্দ্রনাথ যার একটি কাঠমান্ডু এবং অপরটি পাঠানে অবস্থিত। পাঠানে প্রতি গ্রীষ্মকালে তিন মাসব্যাপী এর উৎসব হয়ে থাকে। মার্চ মাসের নতুন চন্দ্রদিন থেকে আট দিন পর্যন্ত কাঠমান্ডুতে যৎযেন্ত্রনাথের উৎসব হয়। মে মাসের নতুন চন্দ্র দিবসে মাতৃদিবস পালন করা হয়ে থাকে। ওই দিন সব নেপালি উপহার সামগ্রীসহ মায়ের সাথে সাক্ষাৎ করে। মায়ের মৃত্যু হলে কাঠমান্ডু থেকে আট কিলোমিটার দূরে মাতাতীর্থ নামক স্থান পরিদর্শনসহ মায়ের উদ্দেশে দানদক্ষিণা করে। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি তাদের নববর্ষ। পরিবার পরিজনসহ বাড়িতে দিনটি উদযাপন করা হয়। কাঠমান্ডুর ভক্তপুরে এ দিনটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন হয়। সপ্তাহব্যাপী চলে এ উৎসব। ওই দিন রাস্তায় আল্পনা অঙ্কনসহ ‘শুভ নববর্ষ’ লিখে, স্বাগত জানানো হয় নতুন বছরকে। ঘটিযাত্রা নামে একটি উৎসবে নেপালের রয়েল আর্মিও অংশ নিয়ে থাকে। রাজা ও রানী এ অনুষ্ঠানে সৈনিকদের অভিনন্দন করে থাকেন। হোলি পূজার অপর নাম ‘রঙের উৎসব’। সেদিন রঙিন পোশাক পরিধান করে রঙ পাউডার মাখামাখি ছিটাছিটি হয়। বড় গামলায় রঙ নেয়া হয়। গামলা থেকে ছোট পাত্রে করে রঙ নিয়ে একজন অপরজনের গায়ে ছিটিয়ে দেয়, রঙিন পানিভর্তি বেলুনের ছড়াছড়ি থাকে। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে শিবরাত্রি। জানুয়ারিতে বসন্তপঞ্চমী। ওই দিন সরস্বতী দেবীর জন্ম। সরস্বতীদেবী তুষ্ট হলে বিদ্যার্জন সুগম হয় বিধায় অভিভাবকরা রঙ-বেরঙের পোশাক পরিয়ে ছেলেমেয়েসহ সরস্বতী মন্দির দর্শনে যান।
নেপালের মোট আয়ের ১৭ শতাংশ আসে পর্যটন থেকে। তাই পর্যটক নেপালের ‘লক্ষ্মী’। ২০১৫ সালে ভূমিকম্পের পর নেপালের যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই আগুন। কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়ায় পোড়া মাংসের গন্ধ। সামনে পেছনে ডানে বাঁয়ে সারি সারি চিতা। কুড়িয়ে পাওয়া কাঠ-খড়ের আগুনে ছাই হয়ে যাচ্ছে প্রিয়জনের লাশ। পানি নেই, চরম খাদ্যসঙ্কট। রাস্তায় পচা লাশ। দুর্গন্ধে বাতাস ভারী, সর্বত্র নরকের চেহারা। নতুন পর্যটক যাওয়া বন্ধ- পুরনো পর্যটকরা নেপাল ছেড়ে পালাচ্ছেন; কারণ ভূবিজ্ঞানীদের মতে- এ কম্পনই শেষ নয়, এর চেয়েও ভয়াবহ কম্পনের অপেক্ষায়। ৭.৯ রিখটারের কম্পন যেখানে আনন্দনগরীকে নিমেষে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করতে পারে, সেখানে এর চেয়েও ভয়াবহ কম্পন! নেপাল পরিণত হয়েছিল তখন শ্মশানভূমিতে।
নেপালের ভয়াবহ অবস্থার পর ‘ভূমিকম্প মোকাবেলায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালা হয়েছিল। গুলশানের স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে এক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞদের প্রকাশিত মতামত থেকে জানা যায়, ঢাকা নগর বড় ধরনের ভূমিকম্পের কবলে পড়লে ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে যত মানুষ মারা যাবে, তার কয়েকগুণ মারা যাবে আগুনে পুড়ে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। কারণ ভূমিকম্পের পর গ্যাসলাইনের পাইপে বিস্ফোরণ ঘটবে আর সেই আগুনে পুরো নগর দাউ দাউ করে জ্বলবে। সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকায় বড় ভূমিকম্প হলে তাতে আধা ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার কাজ শুরু করা গেলে ৯০ শতাংশ মানুষকে বাঁচানো যাবে। উদ্ধারকাজ শুরু করতে এক দিন লাগলে ৮১ শতাংশ, দুই দিন লাগলে ৩৬ শতাংশ, তিন দিন লাগলে ৩৩ শতাংশ মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে। উদ্ধারকাজ শুরু করতে যত বেশি বিলম্ব হবে মৃতের সংখ্যা তত বাড়বে।
তৎকালীন ঢাকা সিটি মেয়র আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘ঢাকার দুই সিটি ও সিলেট সিটি করপোরেশনে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় ৭৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫০ কোটি টাকা দিয়ে যন্ত্রপাতি কেনা হবে দুই বছরের মধ্যে।’ নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘ঢাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে আক্রান্ত মানুষকে উদ্ধারের লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। উদ্ধারে যারা মূল ভূমিকা রাখবে, সেই ফায়ার সার্ভিসের অস্তিত্ব থাকবে কি না; তা নিয়েও সন্দেহ আছে। মাকড়সার জালের মতো গ্যাসের পাইপ ফেটে তিলোত্তমা ঢাকা হয়ে উঠতে পারে অগ্নিকুণ্ড।’
লেখক : আইনজীবী ও কথাসাহিত্যিক