স্বদেশ ডেস্ক :
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ব্যবসায়ী বাবলু হোসেন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি যুবলীগ নেতা আরিফ হোসেন ওরফে হোন্ডা আরিফ গতকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি। যদিও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৫০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত এই সভাপতি নিজেই জানিয়েছেন যে তিনি প্রতিদিনই থানায় যাওয়া-আসা করছেন।
গত ১৭ এপ্রিল রাতে যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সড়কে বাবলুকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বত্তরা। এ ঘটনার পর যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা হয়। এতে হোন্ডা আরিফসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। যদিও এজাহারে হোন্ডা আরিফকে যুক্ত করতে আদালত পর্যন্ত যেতে হয় নিহতের স্বজনদের। এই মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলো রতন মিনা, টেগরা সুমন ও সুজন মিনা। তিন দিনের রিমান্ড শেষে গত বৃহস্পতিবার সুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। রিমান্ডে বাবলু হত্যাকা- এবং যাত্রাবাড়ী এলাকায় বিভিন্ন সেক্টরে সংঘটিত চাঁদাবাজির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন সুজন মিনা।
অভিযোগ রয়েছে, অন্যতম আসামি হোন্ডা আরিফ প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছে না। নিয়মিত থানায় যাওয়া-আসাও করছেন আরিফ। গতকাল এই প্রতিবেদকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমি যুবলীগের রাজনীতি করি। হারাম খাই না; চাঁদাবাজি-ধান্ধাবাজির মতো অবৈধ কোনো টাকাও কামাই না। আমার নামে কেন মামলা হইব? আমি কেন পালায় থাকমু? আমি কি বাবলুরে খুন করছি? ঘটনা যখন ঘটে, তখন আমি ঢাকার বাইরে। কিন্তু হেরা (বাদী) আমারে ও আমার দলের ভাই-ব্রাদারগরে খামাখা খুনের ঘটনায় প্যাঁচাইতাছে। এইডা অন্যায়। প্রত্যেক দিন আমি থানায় (যাত্রাবাড়ী) যাচ্ছি, স্যারদের লগে উঠি-বহি। বাবলু খুনের মামলায় আমি আসামি হইলে হেরা আমারে ধরত না!’ নিহতের ভাই মো. সুমন বলেন, “ঘটনার আগের রাতে ভাই (বাবলু) আমাদের সাবধান করে দিয়ে বলেছিল, ‘আরিফের ঘেঁটু রতন আমাকে অনুসরণ করছে। ওরা টাকা চেয়েছিল, দিয়ে দিলেই মনে হয় ভালা হতো। তোরা সাবধানে থাকিস।’ ভাই আমাদের সাবধান করলেও তিনি বাঁচতে পারলেন না।”
সুমন আরও বলেন, ‘সবার সামনে ঘুরে বেড়ালেও আরিফকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এদিকে গ্রেপ্তার টেগড়া সুমন কয়েক দিন আগেই জামিনে বাইরে এসেছে। এখন মামলা তুলে নিতে আমাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির ডেমরা জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. মঈনুল কবীরকে ফোন করা হয়। ফোন ধরে তিনি প্রথমে কথা বলতে রাজি হন। কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় শুনেই তিনি ফোন কেটে দেন।
যাত্রাবাড়ী থানার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পলাতক আসামি আরিফের থানায় আনাগোনার অভিযোগ ভিত্তিহীন। হত্যাকা-ে সম্পৃক্ততা মিললে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।