স্বদেশ ডেস্ক:
মোবাইল ফোনের পঞ্চম জেনারেশন ইন্টারনেটকে সংক্ষেপে বলা হয় ‘ফাইভজি’। এই সেবায় ফোরজির থেকে অনেক দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট থেকে তথ্য ডাউনলোড-আপলোড করা যায়। ঢাকার প্রায় ২০০টি স্থানে চালু হতে যাওয়া ফাইভজিসেবা নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন- রাফসান নিঝুম
বাংলাদেশে চালু হতে যাচ্ছে পঞ্চম প্রজন্মের ওয়্যারলেস সিস্টেম বা ফাইভজি মোবাইল নেটওয়ার্কসেবা। রাজধানী ঢাকার প্রায় ২০০টি স্থানে মিলবে এই সেবা। বর্তমানে এমনই একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ফাইভজিসেবা দিতে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টেলিটককে ২ হাজার ১৪৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তা কোম্পানিটি তাদের নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নে খরচ করবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন এ প্রকল্পটি চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের নভেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড। তবে এ প্রকল্প শেষেই ফাইভজি নেটওয়ার্ক চালু হবে- বিষয়টি এমন নয়। ইতোমধ্যে দেশে চলতে থাকা টুজি, থ্রিজি ও ফোরজিসেবার অবকাঠামো নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। পঞ্চম প্রজন্মের ফাইভজির প্রস্তুতি হিসেবে বেশকিছু যন্ত্রপাতিও স্থাপন করা হবে। ফাইভজি মোবাইল নেটওয়ার্কে অনেক হাই ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে একই সময়ে একই সঙ্গে অনেক মোবাইল ফোনে দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়।
কোন কোন দেশে চালু রয়েছে ফাইভজি
বিশ্বের বেশকিছু বড় দেশে ইতোমধ্যে চালু রয়েছে ফাইভজি নেটওয়ার্ক। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, সুইজারল্যান্ডের মতো দেশগুলো ফাইভজি সেবা দিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ফাইভজিকে কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সেটি নিয়েও কাজ করছেন তারা। ধারণা করা যাচ্ছে, আগামী কয়েক বছরে আরও দেশ এই সেবার সঙ্গে যুক্ত হবে।
ফাইভজি চালু হলে লাভ কী
ফাইভজির ব্যবহারে অনেক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা হবে। মানুষ ও ডিভাইসের মধ্যে জিরো ডিসটেন্স কানেক্টিভিটি সরবরাহ করবে ফাইভজি। ফলে প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো আরও সমৃদ্ধ হবে, সহজ হয়ে যাবে প্রযুক্তিনির্ভর অনেক কাজ।
ফাইভজি নেটওয়ার্কসেবা পেতে হলে ফাইভজি সমর্থন করে এমন মোবাইল ফোনেরও প্রয়োজন হবে। শিক্ষা, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, ব্যাংকিং ও যোগাযোগের সব মাধ্যমে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে এর মাধ্যমে।
দেশে ফাইভজি নেটওয়ার্কসেবা চালু হলে উন্নতি ঘটবে চিকিৎসা ও শিক্ষা খাতে। উন্নত হবে টেলিমেডিসিনসেবা। ফলে গ্রাম কিংবা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ খুব সহজেই উন্নত চিকিৎসাসেবা নিতে পারবে, যোগাযোগ করতে পারবে দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে। এ ছাড়া এই প্রযুক্তির সাহায্যে প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করতে পারবে। বিখ্যাত সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্লাস থাকবে হাতের মুঠোয়। ডিজিটাল ডিভাইড বা প্রযুক্তিগত বৈষম্য দূর করতে পঞ্চমজি সহায়ক ভূমিকা রাখবে। অন্যদিকে গেমিংয়ে কোনো প্রকার ল্যাগ ছাড়াই খেলা যাবে। অনলাইনে হাই রেজ্যুলেউশন বা ৪০০ ভিডিও দেখা যাবে বাফারিং ছাড়াই। আরও উন্নত, পরিষ্কার ও আটকানো ছাড়াই করা যাবে ভিডিওকল। চালকবিহীন গাড়ি, লাইভ ম্যাপ ও ট্রাফিক তথ্য পড়ার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে ফাইভজিসেবা।
ফাইভজির গতি কেমন
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ফোরজি নেটওয়ার্ক থেকে প্রায় দশ থেকে বিশগুণ বেশি গতি দিতে পারে ফাইভজি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশে পরীক্ষামূলক একটি কার্যক্রমে ফাইভজির গতি উঠেছিল ৪ দশমিক ১৭ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড)।