শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ অপরাহ্ন

গ্রেপ্তার এড়াতে সিলেটে এসে খুন ‘ডাক্তার’ হায়াত

গ্রেপ্তার এড়াতে সিলেটে এসে খুন ‘ডাক্তার’ হায়াত

স্বদেশ ডেস্ক: পল্লী চিকিৎসক রেজাউল করিম হায়াত খুনের ঘটনা নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে সিলেটে। নানা ডালপালা মেলছে ঘটনার। নতুন নতুন তথ্য এসেছে পুলিশের কাছে। সব তথ্য পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পল্লী চিকিৎসক হায়াতের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় ছিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। পারিবারিকভাবে স্ত্রীদের সঙ্গেও তার ছিল না বনিবনা। ১৩ দিন ধরে তিনি সিলেট নগরে। কোথায় ছিলেন, কার সঙ্গে ছিলেন- সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গত সোমবার দুপুরে সিলেটের ব্যস্ততম এলাকা লালবাজারের মোহাম্মদীয়া হোটেলের পেছন থেকে পল্লী চিকিৎসক রেজাউল করিম হায়াতের লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
প্রথমে তার পরিচয় কেউ জানাতে পারেননি। পরে পুলিশের তদন্তে তার পরিচয় জানা যায়। তিনি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের উত্তর রাজনগর কালাছাদক এলাকার চেরাগ আলীর ছেলে। সংসার জীবনে ৯ সন্তানের জনক। হায়াত আলী বিয়ে করেছিলেন তিনটি। প্রথম ও তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য জীবনের ইতি ঘটলেও দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে চলছিল সংসার। পরে ওই স্ত্রীর সঙ্গেও তার বিরোধ বাধে। পারিবারিক কলহের জের ধরে হায়াতের স্ত্রী মিনা বেগম তিন সন্তানকে নিয়ে তার পিত্রালয় মাঝেরগাঁও গ্রামে চলে যান। এরপর স্ত্রীর পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি ছিল। এ ছাড়া- পূর্বের দাঙ্গা-হাঙ্গামার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা ছিল। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে ছিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। ফলে পুলিশ তাকে খুঁজছিল। এই অবস্থায় গত ১৮ই জানুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে সিলেট আসার কথা বলে বের হন হায়াত। সেই যে বাড়ি থেকে এসেছিলেন আর বাড়ি ফিরে যাননি। পরিবারের সদস্যরা জানান- লালবাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা হোটেল মোহাম্মদীয়া আবাসিকের পেছনে রেজাউল করিম হায়াতের লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে তারা গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। এ সময় তার শরীরের মধ্যে বেশকিছু আঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ। পুলিশের সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী মরদেহের চোখে, কানের নিচে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার নাক-মুখসহ শরীর রক্তাক্ত ছিল। এরপর পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের হাসপাতালের মর্গে লাশ পাঠায়। পুলিশের ধারণা- গত শনিবার ও রোববার এই দুই দিনের ভেতরে কোনো এক সময় তাকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশ ঘটনাটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবেই দেখছে। এ ঘটনায় লালবাজারের হোটেল মোহাম্মদীয়ার ম্যানেজার আব্দুর রউফ চৌধুরী, সহকারী ম্যানেজার শামীম, হোটেল কর্মচারী দেলোয়ার ও ফরিদকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে তেমন তথ্য মেলেনি। এদিকে- পল্লী চিকিৎসক রেজাউল করিম হায়াত খুনের ঘটনা নিহতের ছোট বোন মিনা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। কোতোয়ালি থানার ওসি এস এম আবু ফরহাদ জানিয়েছেন- ‘আগের মারামারি একটি ঘটনায় পল্লী চিকিৎসক হায়াতের বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। এ কারণে পুলিশ তাকে খুঁজছিল। এ ছাড়া স্ত্রীদের সঙ্গেও তার বনিবনা ছিল না। মামলার ভয়ে আত্মরক্ষার জন্য সিলেট আসেন তিনি। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি এটা হত্যাকাণ্ড। সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে খুনের ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877