মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৫ অপরাহ্ন

রাজশাহীতে আ.লীগ প্রার্থীর পথসভায় গুলিবর্ষণ-বোমা হামলা

রাজশাহীতে আ.লীগ প্রার্থীর পথসভায় গুলিবর্ষণ-বোমা হামলা

স্বদেশ ডেস্ক:

রাজশাহীর আড়ানী পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তার আলীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া মুক্তারের সমর্থকদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহিদের ভাগ্নে তুষার (২৮) আহত হয়েছেন। তাকে সংকটাপন্ন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় আড়ানী পৌর সদরের তালতলাবাজারে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী শহিদুজ্জামান শাহিদের পথসভায় গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা।

এ সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী এবং ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগেরও ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে তালতলাবাজারে শতাধিক দোকানপাট ভাঙচুর ও লুট হয়েছে। বর্তমানে তালতলাবাজারের উত্তর এবং দক্ষিণ দিকে দুই প্রার্থীর প্রায় তিন হাজার সমর্থক সশস্ত্র অবস্থায় অবস্থান করছেন। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে ৯টার দিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী শাহিদের পথসভার প্রায় শেষ মুহূর্তে বিদ্রোহী প্রার্থীর ১৫-২০ জন সশস্ত্র সমর্থক আকস্মিক হামলা চালায়।

এ সময় মুক্তার আলীর সমর্থকরা গুলিবর্ষণ শুরু করে এবং বোমা হামলা চালায়। প্রাণের ভয়ে এ সময় শাহিদের সমর্থকরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

এর পর মুক্তার মাইকিং করে তার সমর্থকদের ডাকেন। শাহিদসহ উপস্থিত নেতাকর্মীরা এ সময় সংগঠিত হয়ে মুক্তারের সমর্থকদের প্রতিরোধের চেষ্টা করেন।

এ সময় মুক্তারের প্রায় পাঁচ শতাধিক সমর্থক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এদের মধ্যে সশস্ত্র কয়েকজন সমর্থক গুলিবর্ষণ শুরু করে। বোমা হামলা চালায়। দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে শাহিদের সমর্থকদের তাড়া করে।

মুক্তারের সমর্থকদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এ সময় শাহিদের ভাগ্নে তুষার আহত হন। একপর্যায়ে মুক্তারের সমর্থকরা সেখানে নৌকা প্রার্থীরা নির্বাচনী কার্যালয় এবং মেয়র প্রার্থী শাহিদের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। এ ছাড়া শতাধিক দোকানে লুট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শহিদুজ্জামান শাহিদের অভিযোগ, তার পথসভায় লোকজন নিয়ে হঠাৎ করে গুলিবর্ষণ শুরু করেন এবং বোমা হামলা চালিয়েছেন মেয়র প্রার্থী মুক্তার আলী।

প্রাণের ভয়ে এ সময় নৌকার সমর্থকরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। হামলাকারীরা ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট চালায়। এর আগেও বারবার নৌকার কর্মীদের হামলার মুখে পড়তে হয়েছে মুক্তার আলীর লোকজনের।

এ বিষয়ে জানতে কয়েকবার চেষ্টা করেও বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তার আলীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। ফলে এ নিয়ে তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জানুয়ারি দুপুরে আড়ানী পৌরসভা নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মুক্তারের সমর্থকরা মাছরাঙা টেলিভিশন রাজশাহীর ক্যামেরাপারসন মাহফুজুর রহমান রুবেল এবং দীপ্ত টিভির ক্যামেরাপারসন রফিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালায়।

এ সময় রাজশাহী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপাশা খাতুনসহ তার সমর্থকদের ওপরও হামলা চালায় মুক্তারের সমর্থকরা। মুক্তার বর্তমানে আড়ানী পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন।

এবারও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ কারণে তাকে আড়ানী পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে অপসারণ এবং দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877