স্বদেশ ডেস্ক:
মহামারী করোনা ভাইরাসে প্রায় সবাই ঘরবন্দি। সময় কাটছে আলস্যে। ফলে কর্মহীন শরীরে জমছে বাড়তি মেদ। কিন্তু করোনা প্রতিরোধে এ সময় দরকার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। বেশ কিছু ঝামেলাহীন ব্যায়াম বাড়িয়ে দিতে পারে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। বয়স বেশি হলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলস্টেরল বেড়ে যাওয়া ধরনের রোগ থাকলে এবং দীর্ঘদিন হাঁটতে না পারা বা ব্যায়াম করতে না পারলে সমস্যা বাড়ে। তাই শুয়ে-বসে না থেকে নিজেকে সচল রাখতে ব্যায়াম করুন।
যে ধরনের ব্যায়াম করবেন : ব্যায়াম বলতে নিয়মিত একটু জোরসে হাঁটা বা ট্রেডমিল আবার কেউ করেন যোগাসন। কিন্তু তাতে পুরো কাজ কখনো হয় না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আমেরিকান কলেজ অব স্পোর্টস মেডিসিন থেকে জানানো হয়েছে, ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়স্ক সুস্থ মানুষের সপ্তাহে ১৫০ মিনিট মাঝারি গতিতে বা ৭৫ মিনিট জোর গতিতে অ্যারোবিক ব্যায়াম করা দরকার। সপ্তাহে ২-৩ দিন করতে হবে পেশির শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম। অ্যারোবিক ব্যায়াম বলতে হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালানো, স্কিপিং, সাঁতার কাটা ইত্যাদি বোঝায়। এই লকডাউনে তা করতে ট্রেডমিল বা ছাদে হাঁটুন। স্পট জগিং বা স্কিপিং করুন। স্ট্যাটিক সাইকেল চালান।
সাধ্যমতো জোরে হাঁটলে হার্ট ও ফুসফুসের বেশি উপকার হয়। টানা ২০-৩০ মিনিট, টানা না পারলে সকালে ২০ মিনিট, বিকালে ২০ মিনিট। এমন গতিতে, যাতে হাঁপিয়ে উঠলেও দু-চারটে কথা বলা যায় কিন্তু গান গাওয়া যায় না।
হাঁটু, কোমর, গোড়ালির অবস্থা দেখে নিন। হার্ট ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যারোবিক ব্যায়াম করুন। হাঁটা বা জগিংয়ের আগে ভালো হাঁটার জুতো পরুন। না হলে পায়ে ব্যথা হতে পারে।
স্ট্রেচিং করবেন। স্ট্রেচিং করলে শরীরের প্রতিটি পেশিসন্ধি সচল থাকে। পা, কোমর, শিরদাঁড়ার স্ট্রেচিং এ সময় খুব কাজে আসবে। অস্থিসন্ধি ও পেশির সমস্যা না থাকলে করতে পারেন।
পেশি জোরদার করার ব্যায়াম দুভাবে করা যায়। ওজন নিয়ে ও শরীরের ওজনকে ব্যবহার করে। যাকে বডি ওয়েট ট্রেনিংও বলে। এর মধ্যে বিভিন্ন স্কোয়াটিং আছে, রয়েছে লেগ রাইজিং, প্ল্যাঙ্ক, পুশ-আপ ইত্যাদি। তবে ফিটনেস কম থাকলে একজন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ব্যায়াম করবেন।
ইদানীং কয়েকটি নতুন ধরনের ব্যায়ামধারা চালু হয়েছে, যাতে সুরের তালে অ্যারোবিক্সের সঙ্গে স্ট্রেচিং, ব্যালেন্সিং, স্ট্রেংথ ট্রেনিং সব হয়ে যায়। তেমন একটি ব্যায়াম টাবাটা। বয়স কম হলে, ফিটনেস থাকলে টাবাটা করা যেতে পারে।
জুম্বা করতে পারেন। ফিটনেস ভালো থাকলে তবেই। জুম্বায় আপনার শরীর যেমন ভালো থাকবে, মনও হালকা হবে। ইয়োগা করতে পারেন। এটা সব বয়সী মানুষই করতে পারেন। এর ব্যাপক জায়গার প্রয়োজন হয় না। বাসার যে কোনো জায়গায় এটা করতে পারবেন।
মেডিটেশন শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতাও এনে দেয়। এক জায়গায় টানা বসে থাকার অভ্যাস থাকলে নেটা পরিহার করুন। নইলে উপকার পাবেন না।
ব্যায়াম করলে যা হবে : শরীরের অতিরিক্ত চর্বি দূর হয়। হার্ট ও ফুসফুস তাজা থাকে। করোনা ভাইরাসের জটিলতা ঠেকাতে এর ভূমিকা আছে। সুগার, প্র্রেসার, কোলেস্টেরল কম রাখতে সাহায্য করে। হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। হাড় নরম হয়ে ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। ফিজিক্যাল ফিটনেস ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। করোনা ভাইরাস ঠেকাতে হলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে দেহে। তবেই রক্ষা পাব এ মহামারী ভাইরাস থেকে।