শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৭ অপরাহ্ন

শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম যে কারণে করবেন

শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম যে কারণে করবেন

স্বদেশ ডেস্ক:

শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করলে প্রি-ডায়াবেটিস (আইজিটি/আইএফজি) ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। শরীরে ইনসুলিনের সহনশীলতা বাড়ে, সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ওজন কমে ও নিয়ন্ত্রণ থাকে। রক্তচাপ ও রক্তে চর্বির পরিমাণ কমে যায়। হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে ও হাড় শক্তিশালী হয়। খাদ্যের বিপাকক্রিয়ায় সাহায্য করে। মানসিক চাপ কমায়।

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক সমিতি ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বের ৬০ ভাগ মানুষ পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম করেন না এবং উন্নত বিশ্বে এ হার অনেক বেশি। শুধু শারীরিক নিষ্ক্রিয়তাজনিত কারণে প্রতিবছর পৃথিবীতে ১৯ লাখ মানুষ মারা যায়। শারীরিক নিষ্ক্রিয়তাজনিত কারণে ১০-১৬ শতাংশ ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীর মধ্যে যাদের শারীরিক ফিটনেস বা যোগ্যতা কম বা মাঝামাঝি, তাদের শারীরিকভাবে যোগ্যদের তুলনায় ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ৬ গুণ বেশি। কোনো ডায়াবেটিক রোগী যদি দৈনিক ২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে হাঁটেন, তবে তার ডায়াবেটিসজনিত মৃত্যুহার ৩৯ শতাংশ এবং হৃদরোগজনিত মৃত্যুহার ৩৪ শতাংশ কমে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট মাঝারি ধরনের শারীরিক পরিশ্রম শরীরে ইনসুলিনের সহনশীলতা বাড়ায়।

শারীরিক শ্রমের শ্রেণিবিভাগ : যারা হালকা কায়িক পরিশ্রম করেন, যা মূলত দৈনন্দিন কাজকর্মে সীমিত অথবা যারা ৩০ মিনিটেরও কম সময় মাঝারি ধরনের কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করে থাকেন। যেমনÑ ডাক্তার, নার্স, উকিল, শিক্ষক, অফিস এক্সিকিউটিভ।

মোটামুটি সক্রিয় : দৈনন্দিন কাজকর্মের পাশাপাশি যারা প্রতিদিন প্রতিঘণ্টায় ৩-৪ মাইল গতিতে ১ থেকে ৩ মাইল হাঁটেন অথবা ৩০ মিনিট থেকে ৬০ মিনিট মাঝারি ধরনের শারীরিক শ্রম বা ব্যায়াম করে থাকেন। কারখানা শ্রমিক, ড্রাইভার, কৃষক, মিস্ত্রি, গৃহপরিচারিকারা এ শ্রেণিতে পড়েন।

সক্রিয় : দৈনন্দিন কাজকর্মের পাশাপাশি যারা প্রতিঘণ্টায় ৩-৪ মাইল গতিতে ৩ মাইলের বেশি হাঁটেন অথবা ৬০ মিনিটের বেশি সময় মাঝারি ধরনের শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করেন। যেমন- খনি শ্রমিক, রিকশাচালক, পেশাদার খেলোয়াড়, পাথর কাটার শ্রমিক, ইটভাঙা বা দৈনন্দিন কায়িক পরিশ্রম করে যারা জীবিকা চালান, তারা এ শ্রেণীতে পড়েন।

ব্যায়ামবিষয়ক নির্দেশনা : প্রতিবার ব্যায়াম শুরু করার সময় যা করবেন তা হলোÑ গা গরম করা বা ওয়ার্মআপ, ৫-১০ মিনিট। এতে মাংসপেশির আঘাতজনিত দুর্ঘটনা কমে যাবে। এক্ষেত্রে দ্রুত হাঁটার আগে আস্তে আস্তে কিছুক্ষণ হাঁটুন। স্ট্রেচিং করবেন ৫-১০ মিনিট। হালকা ব্যায়াম করুন। মূল ব্যায়ামে গিয়ে কমপক্ষে ৩০ মিনিট মাঝারি গতির ব্যায়াম (দ্রুত হাঁটা) করুন। এ সময় শ্বাস-প্রশ্বাস বেড়ে যাবে, হালকা গরম অনুভূত হবে এবং অল্প অল্প ঘাম দেখা দেবে কিন্তু কথা বলতে কোনো সমস্যা হবে না। গা-ঠাণ্ডা করা বা কুল ডাউনে ৫-১০ মিনিট সময় ব্যয় করবেন। সেক্ষেত্রে কাজের গতি আস্তে আস্তে কমিয়ে আনুন। এক্ষেত্রে দ্রুত হাঁটার পর আস্তে আস্তে কিছুক্ষণ হাঁটবেন।

ব্যায়াম করার সময় : শুরুতে-সপ্তাহে ৩-৫ দিন। এরপর সপ্তাহে ৫-৭ দিন। শুরুতে ধীর থেকে মাঝারি গতি। এরপর মাঝারি থেকে দ্রুতগতি (হার্টের সর্বোচ্চ গতি ৬০-৭০%)। শুরুতে-১০ মিনিট করে ৩ বার বা একটানা ৩০ মিনিট। একটানা ৩০ মিনিটের বেশি সময় (ওজন কমাতে হলে একটানা ৬০ মিনিট অধিক সময়)।

অ্যারোবিক ব্যায়াম : হাঁটা, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো ইত্যাদি। অ্যারোবিকে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ার পর পেশির দৃঢ়তাবর্ধন ব্যায়াম শুরু করতে হবে। সকাল বা বিকালে যে কোনো সুবিধাজনক সময়ে ব্যায়াম করতে পারেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877