মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
অসংখ্য অনিয়মের তথ্য: গার্ডার দুর্ঘটনায় দায়ীদের বিচার করতে হবে

অসংখ্য অনিয়মের তথ্য: গার্ডার দুর্ঘটনায় দায়ীদের বিচার করতে হবে

গত ১৫ আগস্ট রাজধানীর উত্তরার জসীমউদ্দীন রোডে নির্মাণাধীন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে একটি প্রাইভেট কারের ওপর পড়েছিল। এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু ঘটে এবং দুজন গুরুতরভাবে আহত হন। দুর্ঘটনাটি রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষের হৃদয় স্পর্শ করে।

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক উভয় মিডিয়ায় এ দুর্ঘটনার খবর বিশেষ গুরুত্বসহকারে প্রচারিত হয়। এমনকি প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।

দুর্ঘটনার পর এ সংক্রান্ত যেসব তথ্য বেরিয়ে আসছে, তা আমাদের অবাক করছে। দুর্ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১০ ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পর র‌্যাবের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

র‌্যাব বলেছে, যে ক্রেন থেকে গার্ডার পড়ে গিয়েছিল, সেটি ছিল ফিটনেসবিহীন আর তা চালাচ্ছিলেন চালকের সহকারী। তার কোনো লাইসেন্স ছিল না। বাইরে থেকে তাকে নির্দেশনা দিচ্ছিলেন মূল ক্রেনচালক আল আমিন। ভারী ক্রেন চালানোর লাইসেন্স নেই এই আল আমিনের।

অনিয়মের এখানেই শেষ নয়। যে ক্রেন দিয়ে গার্ডার সরানো হচ্ছিল, সেটি ছিল অনেক পুরোনো। এর ধারণক্ষমতা ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টন আর গার্ডারের ওজন ছিল ৬০ থেকে ৭০ টন। গার্ডার তোলার কাজ করার সময় দুটি ক্রেন থাকার কথা থাকলেও ছিল একটি, তা-ও আবার সেটি দুর্বল ক্রেন! থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিল্ড ট্রেড ইঞ্জিনিয়ার লিমিটেড মাসিক ভাড়ার চুক্তিতে ক্রেনটি সরবরাহ করেছিল। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বে থাকা ফোর ব্রাদার্স গার্ড সার্ভিস এর আগে কখনো এ ধরনের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল না।

উত্তরার মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত উপরে উল্লিখিত তথ্যাদি জানার পর এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ঠিকাদার, পরামর্শক ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর সীমাহীন অবহেলা, উদাসীনতা ও গাফিলতির কারণেই ঘটেছে এ দুর্ঘটনা। এটাকে নিছক দুর্ঘটনা বললে ভুল হবে, এটা ছিল গাফিলতিজনিত হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে অবশ্যই।

উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১২ সালে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে গার্ডার ধসে ১৩ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, এক দশক পার হতে চললেও এখন পর্যন্ত ওই ঘটনার কোনো বিচার হয়নি। আলোচ্য ঘটনাটির ক্ষেত্রে যেন এমনটি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয় কথা, যে কোনো প্রকল্পের দলিল ও সরকারের নির্মাণসংশ্লিষ্ট বিদ্যমান আইনে নির্মাণকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতে যেসব করণীয় নির্ধারিত থাকে, ভবিষ্যতে সেগুলো যাতে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করা হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877