শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২১ পূর্বাহ্ন

নিষ্ক্রিয় মন্ত্রীদের চেয়ারে বসতে পারেন পুরনোরা

নিষ্ক্রিয় মন্ত্রীদের চেয়ারে বসতে পারেন পুরনোরা

স্বদেশ ডেস্ক:

মন্ত্রিসভার সদস্যদের গত ৭ মাসের কর্মকা- মূল্যায়ন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একটি গতিশীল মন্ত্রিসভা গঠনের লক্ষ্যে এবার বড় ধরনের রদবদল হতে পারে; বাদ পড়তে পারেন নিষ্ক্রিয়রা, তাদের স্থানে আসতে পারেন পুরনো ও পরীক্ষিতরা। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের কয়েকজনের দপ্তরও পরিবর্তন হতে পারে। শোকের মাস আগস্টের পর সেপ্টেম্বরের শুরুতে অথবা ডিসেম্বরে এই রদবদল হতে পারে। বৃহস্পতিবার লন্ডন সফর থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী এমন মনোভাব ব্যক্ত করেছেন বলে তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চোখের অপারেশনের জন্য এবার বেশ কিছুদিন লন্ডনে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় পদ্মা সেতুতে মাথা লাগবে গুজব তুলে ছেলেধরা অভিযোগে পিটিয়ে মানুষ খুন, ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি, দেশের বেশ কিছু এলাকায় বন্যাসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় ছিল দেশজুড়ে। প্রধানমন্ত্রী লন্ডন থেকেই দেশের সার্বিক খোঁজখবর রেখেছেন। নিয়মিত টেলিফোনে নির্দেশনা দিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের। সাম্প্রতিক এসব পরিস্থিতিতে লন্ডনে বসেই প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় কিছু পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি চান মন্ত্রিসভাকে আরও গতিশীল করতে। তবে শোকের মাসের কারণে আগস্টে কোনো রদবদল হচ্ছে না এটি নিশ্চিত।

অক্টোবরে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা। তবে সম্মেলন মাসখানেক পরেও হতে পারে। কারণ সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক

যাবেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর অক্টোবরের শুরুতেই দিল্লি সফরে যাবেন তিনি। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের পরও মন্ত্রিসভায় রদবদল করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। আর তিনি যদি বর্তমান মন্ত্রিসভার এক বছরের মূল্যায়ন করতে চান, ডিসেম্বরের শেষে বা নতুন বছরের শুরুতে আগামী জানুয়ারি মাসে হবে রদবদল।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রতিমাসেই মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের কাজের মূল্যায়ন রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। গত ৭ মাসের রিপোর্ট অনুযায়ী মন্ত্রণালয় পরিচালনায় মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দলেও যথেষ্ট সময় দিচ্ছেন। নিয়মিত দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে নেতাকর্মীদের সময় দেন এবং দলীয় সব কর্মসূচিতেও নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত থাকেন তারা। শারীরিক অসুস্থতার ধকল কাটিয়ে ওবায়দুল কাদের আবারও আগের মতো সক্রিয় হয়ে উঠেছেন দলে।

জানা গেছে, বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের পারফরমেন্স আশানুরূপ নয়। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের দপ্তর বদল হতে পারে। কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাককে এলজিআরডি মন্ত্রণালয় দেওয়া হতে পারে। কৃষি মন্ত্রণালয়ে আবারও ফিরে আসতে পারেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে পারেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সিরাজগঞ্জের সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত মুন্নাকে দেখা যেতে পারে।

এর আগে গত ১৩ জুলাই সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরাকে প্রতিমন্ত্রী করার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো বর্তমান মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করেন প্রধানমন্ত্রী। একই দিন পদোন্নতি পেয়ে প্রতিমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী হন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ইমরান আহমেদ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর গত ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে শপথ নেন শেখ হাসিনা। ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রীকে নিয়ে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা সাজান তিনি। ৫ মাসের মাথায় মন্ত্রিসভায় প্রথম পরিবর্তন আনেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তথ্যে বদলি করেন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বরত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দায়িত্বও ভাগ করে দেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877