শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
এয়ারলাইন্সগুলোর কারণে সৌদিতে দুর্ভোগের শিকার হজযাত্রীরা

এয়ারলাইন্সগুলোর কারণে সৌদিতে দুর্ভোগের শিকার হজযাত্রীরা

স্বদেশ ডেস্ক:

এয়ারলাইন্সগুলোর কারণে সৌদিতে পৌঁছে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশ থেকে যাওয়া হজযাত্রীরা। বিশেষ করে মদিনায় যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে যাদের জেদ্দা বিমানবন্দরে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে তাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঢাকা থেকে দুই দফা ইমিগ্রেশনের পর দীর্ঘ বিমানযাত্রা শেষে জেদ্দা বিমানবন্দরে নামার পর সড়ক পথে আরো ৪৫০ কিলোমিটার পথ যেতে হচ্ছে তাদের। এতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিষয়টি সৌদি সরকারের দৃষ্টিতে আসার পর তারা জেদ্দা হজ অফিসের কাউন্সিলর মো: জহিরুল ইসলামকে তলব করে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশের হজযাত্রীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সকে সতর্ক করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ থেকে এবার মোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনে যাচ্ছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২৯ হাজার, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স ২৯ হাজার ৫৪৫ এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স ৫ হাজার হজযাত্রী পরিবহন করবে। মোট ১২৮টি ফ্লাইটে এসব হজযাত্রীকে পরিবহন করার কথা রয়েছে। গত ৫ জুন থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে নেয়া শুরু হয়। এসব ফ্লাইটের কিছু জেদ্দা ও মদিনা বিমানবন্দরে অবতরণ করছে। জানা যায়, ১৬ জুন রাত ২টা পর্যন্ত ১৫ হাজার ৭২৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৩৮৫ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ১২ হাজার ৩৩৯ জন। মোট ৪২টি ফ্লাইটে সৌদি গেছেন হজযাত্রীরা। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালিত ২৪টি, সৌদি এয়ারলাইন্স পরিচালিত ১৩টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট সংখ্যা পাঁচটি। এ ছাড়া গতকাল আরো আটটি ফ্লাইটে তিন হাজারের মতো হজযাত্রী সৌদি গেছেন।

নিয়মানুযায়ী দেশের কিছু হজযাত্রী হজের আগে মক্কায় যান এবং হজ পালন শেষে তারা মদিনায় গিয়ে আট দিন অবস্থান করে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন। আবার অনেক হজযাত্রী আগে মদিনায় গিয়ে আট দিন অবস্থান করে হজের সময় মক্কায় যান। বর্তমানে দেশের অনেক হজযাত্রী মদিনায় যাচ্ছেন। নিয়মানুযায়ী যারা মদিনায় যাচ্ছেন তাদের মদিনার ফ্লাইটে নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের গত কয়েক দিনের বেশকিছু ফ্লাইটে মদিনার হজযাত্রীদের জেদ্দায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে তাদের ঢাকার বাংলাদেশ অংশের ইমিগ্রেশন ও সৌদির ইমিগ্রেশন শেষ করে বিমানে দীর্ঘযাত্রা শেষে জেদ্দায় নামার পর আরো ৪৫০ কিলোমিটার সড়ক পথে পাড়ি দিয়ে মদিনায় যেতে হচ্ছে। এতে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে সীমাহীন কষ্ট ভোগ করছেন।

বিষয়টি জানার পর সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জেদ্দার বাংলাদেশের হজ কাউন্সিলর মো: জহিরুল ইসলামকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাকে বলা হয়, হজযাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিন্তু এভাবে মদিনার যাত্রীদের জেদ্দায় নিয়ে যাওয়ায় তাদের কষ্ট দেয়া হচ্ছে। এতে সৌদি সরকারের মূল উদ্দেশ্যে ব্যর্থ হচ্ছে। পরে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকারও অনুরোধ করা হয় হজ কাউন্সিলরকে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সকে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীনের সই করা চিঠিতে বলা হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের শিডিউল ফ্লাইটে প্রায় প্রতিদিনই বেশ কিছু সংখ্যক মদিনাগামী হজযাত্রীকে জেদ্দায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে এ হজযাত্রীদের অবর্ণনীয় ভোগান্তি হচ্ছে। এ ছাড়া এতে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা নষ্ট হচ্ছে। এজন্য মদিনাগামী কোনো হজযাত্রীকে জেদ্দাগামী বিমানে না পাঠানো এবং মদিনাগামী হজযাত্রীকে কেবল মদিনাগামী ফ্লাইটেই পাঠানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয় এয়ারলাইন্সকে দু’টিকে।

আরো এক হজযাত্রীর ইন্তেকাল : নুরুল আমিন (৬৪) নামে আরো এক হজযাত্রী ইন্তেকাল করেছেন। ১৬ জুন মক্কায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। তার বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। তার পাসপোর্ট নম্বর : ইএফ০৭৫৮০০৬। এর আগে গত ১১ জুন মো: জাহাঙ্গীর কবির নামে এক হজযাত্রীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে সৌদি আরবে বাংলাদেশের দুই হজযাত্রী ইন্তেকাল করলেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877