স্বদেশ ডেস্ক:
নাজাতের সময় চলছে। রাসুল (স) বলেছেন, রোজার মাসের তিন অংশ। প্রথম দশ দিন রহমতের, দ্বিতীয় দশ দিন ক্ষমার, শেষ দশ দিন পরকালে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির। (মিশকাত)
আজ না পাওয়ার বেদনায় মুমিন কাঁদবে। রহমত, মাগফিরাত, নাজাতের প্রত্যাশা প্রাপ্তির হিসাব কষবে। নাজাতের এই দিনের অতিরিক্ত মর্যাদা আজ পবিত্র জুমায়াতুল বিদা। রোজার মাসের সর্বশেষ জুমা। জুমায়াতুল বিদা বিশেষ মর্যাদা পাওয়ার প্রধানতম দুটি কারণ রয়েছে। ক. অন্য এগারো মাসের তুলনায় রোজার মাসের মর্যাদা-
আবু হুরায়রা সূত্রে বর্ণিত রাসূল (স) বলেছেন, রোজার প্রতি মুহূর্তের প্রতিটি আমলের সওয়াব দশগুণ থেকে সাতাশ গুণ বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। (বুখারি)
খ. সপ্তাহের অন্য দিনগুলোর তুলনায় জুমার দিনের শ্রেষ্ঠত্ব- আবু হুরায়রা সূত্রে বর্ণিত রাসুল (স) বলেন, সপ্তাহের দিনসমূহে জুমার দিন সর্বশ্রেষ্ঠ। এই দিনে হজরত আদম (আ)-এর সৃষ্টি, তাকে জান্নাতে প্রবেশ ও পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে। জুমার দিনেই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। (মুসলিম)
আজ রোজা ও জুমা দিনের শ্রেষ্ঠত্বের মোহনা তৈরি হয়েছে। ইবাদত ও নাজাতের মুহূর্তে যুক্ত হয়েছে মর্যাদাবান জুমা। সাহাবি আবু হুরায়রা (রা) সূত্রে রাসুল (স) বলেন, যে ব্যক্তি এই দিনে স্বাচ্ছন্দ্যে অজু-গোসল করে মসজিদে যায়, নীরবে খুতবা শোনে, তার পরবর্তী জুমা থেকে এ জুমা পর্যন্ত সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (মুসলিম)
অন্যত্র আবু লুবাবা সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (স) বলেন, সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন জুমা। কোরবানি ও রোজার দুই ঈদের দিন অপেক্ষাও আল্লাহর কাছে অতি পছন্দ জুমার দিন। (ইবনে মাজাহ)
শ্রেষ্ঠ মাসের শ্রেষ্ঠ দিনে জুমায়াতুল বিদার আবেদন হলো, নামাজ তেলাওয়াত দোয়া-দরুদ জিকির দান-সদকা এবং মানবকল্যাণের মাধ্যমে দিনটি বরণ করে নেওয়া। রোজা পাওয়ার আনন্দ ও ইবাদতের কৃতজ্ঞতা মনে ধারণ করা।
তবে আজ ভয়েরও দিন। হাদিসে এসেছে, রাসুল (স) জুমার খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বারে দাঁড়াতেন। একদিন তৃতীয় সিঁড়িতে পা রেখে দোয়া করেছিলেন, হতভাগা ওই ব্যক্তি যে রমজান পেল অথচ নিজের জীবনের গোনাহ মাফ করাতে পারল না। রোজা শেষে এসে হিসাব মিলানোর সময় হয়েছে আমরা কি সেই হতভাগাদের দলের?
লেখক : সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম