স্বদেশ ডেস্ক:
আজই কি তবে পতন ঘটছে পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের? তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব খারিজের সিদ্ধান্ত গত বৃহস্পতিবার এক ঐতিহাসিক রায়ে বাতিল করে দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিমকোর্ট। এ ছাড়া আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, পুনর্বহাল করা হয়েছে ভেঙে দেওয়া জাতীয় পরিষদ। ফলে আজ শনিবার আবার ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় পরিষদে। গত ৩ এপ্রিল জাতীয় পরিষদের আলোচ্যসূচির সঙ্গে মিল রেখে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় এই অধিবেশন শুরু হবে।
দেশটির শীর্ষ গণমাধ্যম দ্য ডন বলছে, পাকিস্তান মুসলিম লিগ, নওয়াজের (পিএমএল-এন) সভাপতি ও প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে যেভাবে বিরোধী দলগুলো এককাট্টা হয়েছে, তাতে অস্বাভাবিক কিছু না ঘটলে প্রথমবারের মতো দেশের কোনো প্রধানমন্ত্রীকে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে বিদায় নিতে হবে। তাই বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার থেকে রাজনীতির ময়দান হয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইমরান খানের ভবিষ্যৎ কী হয়, তা নিয়ে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের আজকের অধিবেশনের দিকে চোখ থাকবে সবার।
যদিও পেশাদার ক্রিকেটারের মতোই ইমরান ঘোষণা দিয়েছেন, এখনই তিনি হার মানবেন না; বরং শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করবেন। বৃহস্পতিবার রাতে এক টুইটে ইমরান লেখেন, ‘শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছি। সংসদীয় দলের সঙ্গেও বসব। সন্ধ্যায় আমি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেব। সব সময় দেশবাসীর পাশে আছি। পাকিস্তানের হয়ে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।’ পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ফররুখ হাবিব বলেছেন, সুপ্রিমকোর্টের রায়ে আসলে ইমরানই জিতেছেন। তার ভয়ে এখন সব চোর এক হয়েছে। আগামী নির্বাচনে বিরোধী দলগুলো টের পাবে, যারা বিদেশি ষড়যন্ত্রকে সমর্থন করেছে, জনগণ তাদের কীভাবে জবাব দেয়।
দ্য ডন গতকাল এক প্রতিবেদনে বলেছে, সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী শনিবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের অধিবেশন আহ্বান করতে বাধ্য জাতীয় পরিষদের স্পিকার। সুপ্রিমকোর্টের আদেশে বলা হয়েছে, ৩ এপ্রিলের কার্যসূচি অনুযায়ী হাউসের কার্যক্রম পরিচালনায় জাতীয় পরিষদের চলতি অধিবেশনে বৈঠক আহ্বানে স্পিকারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে হওয়া উচিত, কোনোভাবেই শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার পরে নয়। ধারণা করা হচ্ছে, অধিবেশনের কার্যসূচি আজ জারি করতে পারে জাতীয় পরিষদের সচিবালয়। প্রস্তাবের ভোটাভুটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বৈঠক স্থগিত করা যাবে না।
এদিকে আজকের অনাস্থা ভোট নিয়ে ইমরান খান যখন খাদের কিনারে, তখন নির্বাচনের আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হতে অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থানে শেহবাজ শরিফ। ইমরানের বিদায়ের বিষয়টিকে নিশ্চিত ধরেই শেহবাজকেই অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান বলে জানিয়েছে দেশটির বিরোধী নেতারা। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বনিম্ন ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ এক বছর। এই সময়ের মধ্যেই সাধারণ নির্বাচন দিতে হবে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকারকে। আর শেহবাজ ক্ষমতায় থাকলে যে আগামী নির্বাচনে তার দল পিএমএল-এন প্রচ্ছন্ন সুবিধা পাবে তা বলাই বাহুল্য। বিরোধী জোটের সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলেছে, জাতীয় সরকারের মতো নতুন ফেডারেল সরকার গঠন করা হবে। এতে আনুপাতিক হারে শরিকদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।