স্বদেশ ডেস্ক:
টিপু হত্যার আগে তিন দফায় বৈঠক করেছে খুনি ও নেপথ্যের কারিগররা। ধারণা করা হচ্ছে ওই সব বৈঠকেই টিপু হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ দিকে হত্যার সময় টিপুর সাথে থাকা মেরাজের সাথে কাঁচাবাজার মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক আলমগীরের কথোপকথন নিয়ে নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ধারণা করা হচ্ছে এই মামলা থেকে কাউকে বাঁচানোর জন্যই মেরাজের সাথে কথা বলেছে আলমগীর।
গত বৃহস্পতিবার রাতে সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু। এ ঘটনায় কিলার হিসেবে এখন পর্যন্ত যাদের নাম উঠে এসেছে তারা হলো সালেহ ও তার ভাই মুছা।
নেপথ্যে থেকে যারা কাজ করেছেন তাদের মধ্যে ওমর ফারুক ওরফে কানা ফারুক ও সাগরের নাম উঠে এসেছে। অস্ত্রদাতা হিসেবে নাম উঠে এসেছে এজিবি কলোনির কাইল্যা পলাশের। তথ্যদাতা হিসেবে নাম উঠে এসেছে টিটুর। আর মহানগর আওয়ামী লীগের সেকেন্ড সারির এক নেতা ও একজন কাউন্সিলর ওই ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাদের নাম এখনো প্রকাশ পায়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এরা তিন দফায় মিটিং করেছে বলে এখন পর্যন্ত জানা গেছে। এর মধ্যে প্রথম মিটিং হয়েছে আরামবাগ পুলিশ বক্সের উল্টা দিকে একটি খাবার হোটেলে। দ্বিতীয় মিটিং হয়েছে মধুমিতা গলির একটি অফিসে। আর তৃতীয় মিটিং হয় শান্তিনগরের একটি অফিসে। কিলার সালেহ-মুছা এর আগে বোচা বাবু হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। ওই মামলায় সালেহ-মুছা ও মহানগর দক্ষিণ ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ওরফে কানা ফারুকের বিরুদ্ধে বিচার চলছে। বোচা বাবু হত্যা মামলা থেকে এর আগে নেপথ্যের অনেকেই পার পেয়ে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ দিকে গত সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে মতিঝিল সেন্ট্রাল গভর্মেন্ট স্কুলের সামনে এজিবি কলোনি কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীরকে নিহত টিপুর বন্ধু মেরাজের সাথে কথা বলতে দেখা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, তাদের এই কথা বলার বিষয়টি এখন ওই এলাকায় ব্যাপক আলোচিত। টিপু হত্যার সময় মেরাজ ওই গাড়িতেই ছিলেন। আর আলমগীর এর আগে বোচা বাবু হত্যা থেকে আসামিকে বাদ দেয়ার জন্য নিহতের বাবা কালামের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বলে অভিযোগ আছে। আলমগীর বোচা বাবু হত্যার চার্জশিটভুক্ত আসামি ওমর ফারুক এবং সালেহ-মুছাকে মামলা থেকে বাদ দেয়ার জন্য কালামের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এবার মেরাজের সাথে তার কথোপকথনের বিষয়টি স্থানীয়দের ভাবিয়ে তুলেছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মতিঝিল এজিবি কলোনিতে গ্র্যান্ড সুলতান নামে রেস্টুরেন্টে কাজ শেষে বাসায় যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাজাহানপুরের মানামা ভবনস্থ বাটার দোকানের সামনে টিপুর মাইক্রোবাসটি থামে। এ সময় রাস্তার বিপরীত পাশে মোটরসাইকেলে দুইজন অপেক্ষা করছিল। হেলমেট পরিহিত এক মোটরসাইকেল আরোহী থেমে থাকা মাইক্রোবাসের বামপাশে গিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। গুলি গাড়ির গ্লাস ভেঙে টিপুর শরীরে বিদ্ধ হয়। এতে তিনি নিহত হন। এ ঘটনায় পথচারী সামিয়া আফরান প্রীতি নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এ ঘটনায় মাসুম ওরফে আকাশ নামে একজন সন্দেহভাজনকে ডিবি গ্রেফতার করে। বর্তমানে মাসুম ডিবির হেফাজতে রয়েছে।