স্বদেশ ডেস্ক:
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করেছে, রাশিয়া সিরিয়া ও চেচনিয়ায় বেসামরিকদের ওপর যে কৌশল প্রয়োগ করেছিল সেই একই কৌশল ইউক্রেনেও প্রয়োগ করছে। রাশিয়ার নিন্দা জানিয়ে মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগও এনেছে অ্যামনেস্টি। আল জাজিরা এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানা গেছে।
রাশিয়ার আক্রমণের পর বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির সংখ্যা বাড়তে থাকায় ইউক্রেনের পরিস্থিতিকে সিরিয়ার যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছে অ্যামনেস্টি। ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপির সঙ্গে আলাপকালে সংস্থাটির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ‘ইউক্রেনে যা ঘটছে তা সিরিয়ায় আমরা যা দেখেছি তারই পুনরাবৃত্তি।’ রাশিয়ার বিরুদ্ধে মানবিক করিডোরকে ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত করারও অভিযোগ করেন মানবাধিকারবিষয়ক খ্যাতনামা এ অ্যাক্টিভিস্ট।
পূর্ব ইউরোপে অ্যামনেস্টির পরিচালক ম্যারি স্ট্রাথার্স প্যারিসে একটি পৃথক সংবাদ সম্মেলনে ব্রিফিংয়ে জানান, ইউক্রেনের গবেষকরা দেশটিতে ‘সিরিয়া ও চেচনিয়ার মতো একই কৌশল ব্যবহারের’ বিষয়টি নথিভুক্ত করেছেন। এর মধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা এবং আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ অস্ত্রের ব্যবহারের মতো বিষয়গুলো রয়েছে। এর আগে সিরিয়া যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এবার বলা হচ্ছে, রুশ ধনকুবের ও শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী রোমান আব্রামোভিচকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, এ মাসের শুরুতে কিয়েভে একটি বৈঠকের পর তার সন্দেহজনক বিষপ্রয়োগে অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দেয়। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়া ও ইউক্রেনকে যুদ্ধের ময়দান থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাতে গিয়ে মস্কোর কট্টরপন্থিদের কোপানলে পড়তে হয়েছে তাকে।
খবরে বলা হয়, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন বন্ধে মধ্যস্থতা করতে ইউক্রেনের অনুরোধে সম্মত হয়েছিলেন আব্রামোভিচ। তিনিসহ ওই বৈঠকে উপস্থিত ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলের আরও দুই সদস্যও সন্দেহজনক ওই বিষপ্রয়োগের শিকার হয়েছেন। তাদের যেসব লক্ষণ দেখা দিয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে চোখ লাল হওয়া, মুখ ও হাতের চামড়া খসে যাওয়া এবং অবিরাম বেদনা। তবে আব্রামোভিচ ও ইউক্রেনীয় মধ্যস্থতাকারী ক্রিমিয়ান তাতার আইনপ্রণেতা রুস্তেম উমেরভের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এমনকি তিনি গতকাল তুরস্কে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে রাশিয়া চেচনিয়া ও সিরিয়ায় হস্তক্ষেপ করেছে। সে সময় মস্কোর বিরুদ্ধে বেসামরিক লোকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি রুশ সহায়তায় সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকার রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করেছিল বলে জোর আলোচনা রয়েছে।