রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৮:২৯ পূর্বাহ্ন

বাসায় চিকিৎসকের ফলোআপে আছেন খালেদা জিয়া

বাসায় চিকিৎসকের ফলোআপে আছেন খালেদা জিয়া

স্বদেশ ডেস্ক:

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে দীর্ঘ ৮১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মহামারী করোনাভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে চিকিৎসকদের পরামর্শে গত ১ ফেব্রুয়ারি গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বাসায় মেডিক্যাল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। বোর্ডের সদস্যরা নিয়মিত বাসায় গিয়ে তাকে ফলোআপ করছেন। বাসায় নিজকক্ষে শুয়ে-বসে সময় কাটাচ্ছেন তিনি। খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ও ভাবী কানিজ ফাতেমা বিদেশ থেকে দেশে ফিরে তার সাথে দেখা ও কুশল বিনিময় করেছেন। বর্তমানে বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর বড় মেয়ে জাফিয়া রহমান গতকাল শনিবার সকাল ৭টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনগামী একটি ফ্লাইটে ঢাকা ছেড়ে গেছেন।

জানা যায়, দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর বাসায় রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে। এই সময়ে পরিবারের সদস্যরা খালেদা জিয়ার সাথে দেখাসাক্ষাৎ করছেন। চিকিৎসক বোর্ডের সদস্যরা ফলোআপ করছেন। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার কানাডিয়ান হিউম্যান রাইটস ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (সিএইচআরইও) কর্তৃক খালেদা জিয়াকে প্রদত্ত ‘মাদার অব ডেমোক্র্যাসি’ ও ‘ডেমোক্র্যাসি হিরো’ পুরস্কারের ক্রেস্ট তুলে দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসক দলের সদস্য জানান, ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) বাসায় রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে মেডিক্যাল বোর্ড। প্রতিদিন মেডিকেল বোর্ডের কোনো না কোনো সদস্য তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সে অনুযায়ী তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মহামারী করোনার সংক্রমণ এড়াতে সম্পূর্ণ সাবধানতা অবলম্বন করেই চিকিৎসাসেবা দেয়া ও অন্যান্য কার্যক্রম করা হচ্ছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার যেকোনো স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্ভাবনা সব সময় রয়েছে। কারণ তার লিভার সিরোসিসের যে চিকিৎসা, সেটি কিন্তু আমরা করতে পারিনি এখনো। এ দেশে এর চিকিৎসা সম্ভব নয়।
এর আগে বেগম খালেদা জিয়া বাসায় ফেরার দিন গত ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় তার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলন করেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা। তিনি এখনো পূর্ণ সুস্থ নন বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা। গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন; কিন্তু দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তাকে বাসায় পাঠানো হয়েছে। সেখানে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয় খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য।

জানা গেছে, খালেদা জিয়া বাসায় ফেরার আগে বাসার সবার কোভিড টেস্ট করা হয়। করোনার ঝুঁকির কারণে নেতাকর্মীদের আপাতত ফিরোজায় আসতে নিষেধ করা হয়েছে। দিনে ও রাতে দুইজন নার্স দুই শিফটে ডিউটি করছেন। খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বেগম খালেদা জিয়ার পছন্দের খাবার নিয়ে যান। মাঝে মাঝে লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার বড় ছেলে, ছেলের বউ, ছোট ছেল মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর বউ এবং নাতনীদের সাথে টেলিফোনে কথা বলে সময় কাটান তিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা গরম পানি পান করেন। এরপর হুইল চেয়ারে করে কিছুটা সময় বারান্দায় রোদ পোহান। এ ছাড়া টেলিভিশন দেখে, পত্রিকা ও বই পড়ে সময় কাটান। খালেদা জিয়া বাসায় আসার পর থেকে মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা: এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক ডা: জাহিদ হোসেন ও ডা: আব্দুল্লাহ আল মামুন নিয়মিত তাকে দেখতে যান। বর্তমানে খালেদা জিয়ার সাথে আছেন গৃহকর্মী ফাতেমা ও রুপা। তারাই সার্বক্ষণিক তার দেখাশোনা করছেন। খাবারের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছেন। প্রিয় খাবারের মধ্যে রয়েছেÑ স্যুপ, ছোট মাছ, মুরগির গোশত ও সবজি। তবে সব খাবারই নরম করে খাচ্ছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। করোনার কারণে নেতাকর্মীদের সেখানে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি চিকিৎসক দলের সদস্যরা নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877