স্পোর্টস ডেস্ক:
কঠিন অবস্থাই ছিল। ৬ বলে দরকার ১১ রান। আগের ওভারে এসেছে মাত্র ৪ রান। শেষ ওভারে রান ও বলের সমীকরণ মেলাতে পারবে ঢাকা? এমন আশঙ্কা ছিল খুব। তবে শেষ ওভারে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে সব উত্তেজনার অবসান ঘটান শুভাগত হোম। ৫ উইকেটের দারুণ জয় পায় মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা। রোমাঞ্চকর এই জয়ে বিপিএলে প্লে-অফের আশা এখনো জিইয়ে থাকল মাহমুদউল্লাহ শিবিরের।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ১২৯ রান করে খুলনা টাইগার্স। জবাবে ৪ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ঢাকা। ৩ ওভারে এক মেডেনে ১৫ রানে দুই উইকেট নেয়ার সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান ঢাকার স্পিনার আরাফাত সানি।
৯ ম্যাচে চার জয়, সমান হার ও এক টাইয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে ঢাকা। প্লে-অফ নিশ্চিত করতে হলে শেষ ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই তাদের। তারপরও তাকিয়ে থাকতে অন্যান্য ম্যাচগুলোর দিকে।
জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নামা ঢাকার শুরুটাও বাজে ছিল। দুই ওপেনার ছিলেন ব্যর্থ। দলীয় ১২ রানে বিদায় নেন দুজন। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে তামিমকে এলবির ফাদে ফেলেন নাবিল সামাদ। ৮ বলে ১ চারে ৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন ঢাকার ওপেনার। পরের ওভারে বিদায় নেন ইমরান উজ্জামান। খালেদ আহমেদের বলে তিনি ক্যাচ দেন নাবিল সামাদের হাতে।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দলের ঢাকার হাল ধরেন জহুরুল ইসলাম ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। এই জুটি দলকে নিয়ে যায় ৬৯ রান পর্যন্ত। ১৩তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন রুয়েল মিয়া। বোল্ড করে দেন ৩৫ বলে ৩০ রান করা জহুরুল ইসলামকে। তার ইনিংসে ছিল দুটি করে চার ও ছক্কা। এরপর মাহমুদউল্লাহ আগাতে থাকেন শামসুর রহমানকে নিয়ে। দলীয় স্কোর শতরান পার হতেই সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। পেরেরার বলে ইয়াসিরের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে তিনি করে যান ৩৬ বলে ৩৪ রান। হাঁকিয়েছেন একটি করে চার ও ছক্কা।
মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর টিকতে পারেননি শামসুর রহমানও। তিনিও পেরেরার বলে ক্যাচ দেন ইয়াসিরের হাতে। তবে খেলে যান ১৪ বলে ২৫ রানের কার্যকরী ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল দুটি ছক্কা ও একটি চারের মার। দলীয় ১০৬ রানে টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যান বিদায় নিলে খানিক চাপে পড়ে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা।
তবে ষষ্ঠ উইকেটে দলকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেন শুভাগত হোম ও আজমতউল্লাহ উমারজাই। ১২ বলে দরকার তখন ১৫ রান। ১৯তম ওভারে বেশ ভালো বল করেন খুলনার পেসার খালেদ আহমেদ। এই ওভারে তিনি দেন মাত্র চার রান। ম্যাচ অনেকটাই কঠিন হয়ে যায় তখন ঢাকার। শেষ ছয় বলে তখন ঢাকার দরকার পড়ে ১১ রান।
শেষ ওভারে বড় চমক দেখান শুভাগত হোম। লঙ্কান পেসার পেরেরার প্রথম দুই বলেই হাঁকান দুই ছক্কা। ৫ উইকেটের দারুণ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ঢাকা। ৯ বলে ২ ছক্কায় ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন শুভাগত হোম। ৭ বলে ১ চারে ১০ রানে অপরাজিত থাকেন উমারজাই। বল হাতে খুলনার হয়ে পেরেরা দুটি, নাবিল সামাদ, রুয়েল মিয়া ও খালেদ আহমেদ নেন একটি করে উইকেট।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বাজে অবস্থা ছিল খুলনার। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার আন্দ্রে ফ্লেচার, সৌম্য সরকার, জাকের আলী ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের রান। অধিনায়ক মুশফিকও রোধ করতে পারেননি এই বিপর্যয়। ১২ বলে ১২ রান করে তিনি ফেরেন সাজঘরে। ১৮ বলে ১৭ রানে ফেরেন মেহেদী হাসান।
উইকেট যাওয়ার মিছিলে এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলেছেন জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজা। ৫০ বলে তিনি খেলেন ৬৪ রানের ইনিংস মেরামতি ইনিংস। তার ইনিংস সাজানো ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায়।
পেরেরা ১০ বলে করেন ১২ রান। রুয়েল মিয়া ৯ বল খেলে থাকেন ৮ রানে অপরাজিত। বল হাতে ঢাকার হয়ে আরাফাত সানি ও আজমতউল্লাহ দুটি, রুবেল হোসেন, ফারুকি, কায়েস নেন একটি করে উইকেট।