স্বদেশ ডেস্ক: হাসি। মুখের এই একটা অভিব্যক্তি ঢেকে দিতে পারে অনেক কিছু। গোপন ব্যথা, রাগ, দুঃখ, অভিমান- হাসির অভিব্যক্তির কাছে সবাই হার মানে। কিন্তু প্রাণ খোলা হাসির সঙ্গে তো জোর করে হাসার পার্থক্য রয়েছে। আপাত দৃষ্টি যে তফাত অনেক সময়ই বোঝা সম্ভব নয়। কোনো ব্যক্তির মনের ভিতরের খবর চাপা পড়ে যায় ঠোঁটের কোণের হাসির রেখায়। কিন্তু কোন হাসি কৃত্রিম? কোনটাই বা মনের সত্যিকারের অভিব্যক্তি? কীভাবে বুঝবেন? আপাত দৃষ্টিতে যা ধরা পড়ে না, এবার তা বোঝা যাবে প্রযুক্তির মাধ্যমে। হ্যাঁ, বিজ্ঞানের আশীর্বাদে এবার ভেদ হবে আসল আর নকল হাসির রহস্য।
ব্রিটেনের ব্র্যাডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটি কম্পিউটার সফটওয়্যার তৈরি করেছেন যা হাজার কৃত্রিম হাসির মধ্যে থেকে বেছে নিতে পারে সত্যিকারের হাসিকে। গবেষকদের মতে, কোনও মানুষের আসল হাসি লুকিয়ে থাকে তার চোখে। আর এই বিষয়টিকেই কাজে লাগিয়েছেন তারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মাধ্যমে মানসিক রোগীদের চিকিৎসা আরো সহজ হবে। ভবিষ্যতে বায়োমেট্রিক আইডেন্টিফিকেশনের ক্ষেত্রে মেশিন ও মানুষের মধ্যেও সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাসান বলছেন, “মুখের অভিব্যক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাসি। এই হাসিই ইতিবাচক অভিব্যক্তি। তবে এতদিন আসল ও কৃত্রিম হাসির পার্থক্য করা ছিল একটা চ্যালেঞ্জ। এবার প্রযুক্তির হাত ধরে সেই তফাত বোঝা সম্ভব।” কিন্তু কীভাবে কাজ করে এই সফটওয়্যার?
এই সফটওয়্যারটি প্রথমে একটি মানুষের মুখের ভিডিও দেখে। যেখানে তার ঠোঁট, গাল ও চোখের বৈচিত্রগুলো ভালোভাবে লক্ষ্য করা হয়। তারপর দেখা হয়, হাসির সময় এই অংশগুলো কীভাবে সহযোগিতা করছে। এরপর ভিডিওর প্রতিটি ক্লিপে ব্যক্তির অভিব্যক্তি হিসেব করে দেখিয়ে দেয়া হয় তার হাসি আসল নাকি কৃত্রিম। এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে চোখ।
গবেষকরা জানাচ্ছে, ভিডিওর প্রতিটি ক্লিপ ভালোভাবে লক্ষ্য করলেই পার্থক্যটা ধরা পড়ে। কেউ মন থেকে হাসলে তার পেশি অন্তত ১০ গুণ বেশি সচল হয়। নকল হাসির ক্ষেত্রে অনেক সময় কেবলমাত্র ঠোঁটের আশপাশের পেশি বেশি সচল থাকে। চোখের ভূমিকা সেখানে কম হয়। যদিও সফটওয়্যারটি সাধারণ মানুষ কবে থেকে ব্যবহার করতে পারবেন, তা এখনো স্পষ্ট করে জানানো হয়নি।